সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: রাজ্যজুড়ে ফের করোনার রক্তচক্ষু। লাফিয়ে বাড়ছে সংক্রমণ। বুক কাঁপছে দৈনিক মৃত্যুও। এমন পরিস্থিতিতে রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে অমানবিকতার খবর আসছে। কোথাও রাস্তায় পড়ে থাকছে দেহ। আবার কোথাও বাড়ির সামনে দেহ ফেলে চম্পট দিচ্ছেন অ্যাম্বুল্যান্স চালকরা। আবার কোথাও তো ঘরের ভিতর পড়ে থাকছে দেহ, মৃত্যুর খবর পাচ্ছেন না পরিবার পরিজন। এমনই এক হৃদয়বিদারক ঘটনার সাক্ষি রইল শহর কলকাতা।
রিজেন্ট পার্কের পুঁটিয়ারিতে আত্মঘাতী হলেন এক করোনা (Corona Virus) রোগী। ফ্ল্যাটের ভিতর থেকে এক প্রৌঢ়ের ঝুলন্ত দেহ উদ্ধার হয় বলে খবর। সূ্ত্রের খবর, দিন তিনেক আগে তাঁর করোনা পরীক্ষার রিপোর্ট পজিটিভ আসে। এর পর শনিবার সকালে তাঁর ঝুলন্ত দেহ উদ্ধার হয়। পুলিশের প্রাথমিক অনুমান, করোনা আক্রান্ত হওয়ায় মানসিক অবসাদে আত্মঘাতী হয়েছেন ওই প্রৌঢ়।
[আরও পড়ুন : করোনায় মৃতদেহ দাহর জন্য বাড়ছে চুল্লি, বাড়িতেই ডেথ সার্টিফিকেট পৌঁছবে কলকাতা পুরসভা]
অন্যদিকে, গড়িয়াহাট থানার অন্তর্গত ফার্ণ রোডের একটি ফ্ল্যাটে একা থাকতেন ৪৯ বছরের এক মহিলা। নাম সন্ধ্যা মাহাতো। দিন কয়েক আগে করোনা আক্রান্ত হন তিনি। শুক্রবার দুপুর থেকে তাঁর কোনও সাড়া শব্দ পাচ্ছিলেন না প্রতিবেশীরা। কিন্তু করোনার আতঙ্কে কেউ দরজা ভাঙতে বা বাড়ির ভিতর গিয়ে খোঁজ খবর নিতে ভয় পাচ্ছিলেন। শেষ পর্যন্ত পড়শিরা তানায় ফোন করেন। ৬ ঘণ্টা পরে এসে দরজা ভেঙে সন্ধ্যাদেবীর দেহ উদ্ধার করে পুলিশ।
গতকালই বাগুইআটি অঞ্চলের রঘুনাথপুরে বাড়ি থেকে ১৫ ঘণ্টা পর উদ্ধার হয় করোনা রোগীর দেহ। দেহ উদ্ধারের আগেই এদিন এলাকা স্যানিটাইজ করার কাজ শুরু করে বিধাননগর পুরসভা। এই ঘটনায় প্রশাসনিক সমন্বয়ের অভাব স্পষ্ট বলে অভিযোগ স্থানীয়দের। পরিবার সূত্রে খবর, শুক্রবার অবসরপ্রাপ্ত রেল কর্মীর করোনা পরীক্ষার রিপোর্ট পজিটিভ আসে। অভিযোগ, তারপর থেকে বেশ কয়েকটি হাসপাতাল ঘুরেও মেলেনি বেড। পরিবারের দাবি, শেষপর্যন্ত রাত ১০টা নাগাদ অ্যাম্বুল্যান্সেই মৃত্যু হয় ওই করোনা রোগীর। মৃতের স্ত্রীও করোনা আক্রান্ত। গতকাল রাত থেকে মৃত স্বামীকে নিয়ে একাই ছিলেন তিনি। প্রায় ১৫ ঘণ্টা পর তাঁর দেহ উদ্ধার করে প্রশাসন। একের পর এক এ ধরণের ঘটনায় আতঙ্কিত এলাকাবাসী।