বিক্রম রায়, কোচবিহার: কেন্দ্রীয় প্রতিমন্ত্রীর সঙ্গে সাক্ষাতের পরই বঙ্গভঙ্গের দাবিতে জোরাল সওয়াল করেছিলেন গ্রেটার কোচবিহার নেতা অনন্ত মহারাজ। তা নিয়ে ইতিমধ্যেই রাজ্য রাজনীতিতে চলছে জোর তরজা। ঠিক তার পরদিনই কোচবিহারের রাসমেলায় আমন্ত্রণ পেলেন তিনি। তা নিয়ে বিতর্ক মাথাচাড়া দিয়েছে। অবশ্য শনিবারও রাজ্যভাগের কথা শোনা গেল মহারাজের গলায়। যদিও কোচবিহার পুরসভার চেয়ারম্যান রবীন্দ্রনাথ ঘোষ আমন্ত্রণের সঙ্গে রাজনীতির কোনও যোগসূত্র দেখছেন না।
২১০ তম রাসমেলার অনুষ্ঠান আগামী মঙ্গলবার। সন্ধে সাড়ে ছ’টা নাগাদ বিশেষ অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছে। উদয়ন গুহ, বুলুচিক বরাইকের মতো দুই মন্ত্রী ছাড়াও আমন্ত্রিতদের তালিকায় রয়েছেন জেলার বহু বিশিষ্ট। ওই অনুষ্ঠানেই আমন্ত্রণ পেয়েছেন অনন্ত মহারাজও (Ananta Maharaj)।
আর এই অনন্ত মহারাজের গলায় বারবার শোনা গিয়েছে বঙ্গভঙ্গের ডাক। সাম্প্রতিকতম অতীতে শুক্রবার কেন্দ্রীয় মন্ত্রী অমিত শাহের ডেপুটি নিশীথ প্রামাণিকের সঙ্গে সাক্ষাতের পর অনন্তের গলায় শোনা গিয়েছিল পৃথক উত্তরবঙ্গের ডাক। শনিবারও তিনি সাফ জানিয়ে দেন, যে গ্রেটার কোচবিহারের দাবি থেকে তাঁরা সরে আসছেন না। বিষয়টি স্বরাষ্ট্রমন্ত্রকের কাছে জানানো হয়েছে বলেও দাবি তাঁর। লোকসভার আগেই এই নিয়ে পদক্ষেপ করা হবে বলে আশাবাদী তিনি। তার আগে গত মাসের মাঝামাঝি সময়ে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সভামঞ্চ থেকে নেমেই রাজ্য ভাগের কথা বলেছিলেন। তা সত্ত্বেও কেন সরকারি অনুষ্ঠানে আমন্ত্রণ জানানো হল অনন্ত মহারাজকে, তা নিয়ে জল্পনা মাথাচাড়া দিয়েছে।
[আরও পড়ুব: পাহাড় সমস্যার স্থায়ী সমাধান করলেই সমর্থন! লোকসভার আগে জল মাপা শুরু গুরুংয়ের]
যদিও অনন্ত মহারাজকে সরকারি অনুষ্ঠানে আমন্ত্রণের সঙ্গে রাজনীতির কোনও যোগ রয়েছে বলেই মানতে চান না কোচবিহার পুরসভার চেয়ারম্যান রবীন্দ্রনাথ ঘোষ। তাঁর মতে, কোচবিহারের রাসমেলার অনুষ্ঠান অত্যন্ত জনপ্রিয়। দেশবিদেশের সকলের নজর থাকে এই অনুষ্ঠানের দিকে। জেলার প্রত্যেক বিশিষ্ট ব্যক্তিকে ঐতিহ্যবাহী রাসমেলা উৎসবে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে। ঠিক সে কারণেই অনন্ত মহারাজকেও ডাকা হয়েছে। এছাড়া আর কিছুই না। আমন্ত্রণের সঙ্গে রাজনীতির কোনও সম্পর্ক নেই।
এদিকে, এদিন অনন্ত মহারাজের বঙ্গভঙ্গের দাবি নিয়ে জল্পনা জিইয়ে রেখেছেন বিজেপির সর্বভারতীয় সহ সভাপতি দিলীপ ঘোষ। তাঁকে পালটা কটাক্ষ করেছেন তৃণমূলের রাজ্য সাধারণ সম্পাদক কুণাল ঘোষ। তিনি বলেন, “কোনও ব্যক্তির কথা বলছি না। স্পনসর্ড অশুভ শক্তি চেষ্টা করছে। বিজেপির নেতাদের বিবৃতি বলছে তারা আলাদা রাজ্য চান। এর পেছনে বিজেপির মদত আছে৷ বিজেপি বাংলা ভাগ করতে চাইছে। প্রতিহিংসার রাজনীতি করছে।”