সুমিত বিশ্বাস, পুরুলিয়া: কথায় আছে, মাঘের শীত বাঘের গায়ে। ক্যালেন্ডারে সবে মাঘ পড়েছে। সেইসঙ্গে কুয়াশাঘেরা আবহাওয়া। পশ্চিমের জেলা পুরুলিয়ার (Purulia) তাপমাত্রা অনেকটাই নিম্নমুখী। কাঁপছে শহরের উপকন্ঠে সুরুলিয়া মিনি চিড়িয়াখানার (Zoo) প্রাণীরাও। তাই তাদের নাইট শেল্টার থেকে এনক্লোজারেও খড়, বস্তার ব্যবস্থা করেছে মিনি চিড়িয়াখানা কর্তৃপক্ষ। কংসাবতী উত্তর বনবিভাগের অধীনে থাকা এই চিড়িয়াখানার বন্যপ্রাণদের ডায়েটে (Diet) বদল হয়েছে।
সপ্তাহের শুরু থেকেই এই জেলার তাপমাত্রা ৫ ডিগ্রি সেন্টিগ্রেডে নেমে গিয়েছিল। মাঘের শুরুতে তা একটু বেশি হয়েছে। তা সত্ত্বেও টেক্কা দিচ্ছে কালিম্পংকেও (Kalimpong)। কিন্তু পুরুলিয়ায় কেন এমন শীত? আসলে এই জেলার ওপর দিয়ে কর্কটক্রান্তি রেখা চলে গিয়েছে। পুরুলিয়া জেলা বিজ্ঞান কেন্দ্রের আধিকারিক ধ্রুবজ্যোতি চট্টোপাধ্যায় জানান, “এই জেলার উপর দিয়ে কর্কটক্রান্তি রেখা চলে গিয়েছে। তাই এখানে চরম জলবায়ু। ফলে গ্রীষ্মকালে যেমন গরম। শীতে তেমনই ঠান্ডা।”
[আরও পড়ুন: তিন বিয়ের পর প্রেমিকার সঙ্গে লিভ-ইন! অশান্তি চরমে উঠতেই ভয়ংকর সিদ্ধান্ত যুবকের]
আর এমন কনকনে ঠান্ডায় চিড়িয়াখানার বন্যপ্রাণদের যাতে কোনওরকম অসুবিধা না হয়, তাই সতর্ক সুরুলিয়া মিনি জু কর্তৃপক্ষ। এখানে থাকা দুটি ভাল্লুককেই ফি দিন অন্যান্য খাবারের সঙ্গে সকালে সুন্দরবনের খাঁটি মধু (Honey) দেওয়া হচ্ছে। যার পরিমাণ থাকে ৫০ গ্রাম। কিন্তু এই হাড়হিম শীতে ভাল্লুকের ডায়েট খানিকটা বদলে মধুর পরিমাণ বাড়িয়ে সকাল-বিকেল মিলিয়ে ১০০ গ্রাম দেওয়া হচ্ছে। এদিন ওই মিনি চিড়িয়াখানায় গিয়ে দেখা যায় ভাল্লুক থেকে হায়না, চিতল, সম্বর হরিণও রোদ পোহাতে ব্যস্ত। এনক্লোজার জুড়ে মানুষজনের ভিড় থাকলেও রোদ ছেড়ে উঠছে না কোনও বন্যপ্রাণী। এই চিড়িয়াখানার দায়িত্বে থাকা বিট অফিসার শিখারানী রায় জানান, “প্রবল শীতের কারণে বন্যপ্রাণদের ডায়েটে কিছুটা রদবদল করা হয়েছে। নাইট শেল্টার খড়, বস্তা দিয়ে ঢেকে দেওয়া হয়েছে।”
[আরও পড়ুন: মোদি নন, রামলালার প্রাণপ্রতিষ্ঠার আচার সামলাবেন যজমান অনিল মিশ্র, জানেন তাঁর পরিচয়?]
হাড়হিম শীত বলতে যা বোঝায় তা গত কয়েকদিন ধরে টের পাচ্ছে পুরুলিয়া। আর এই শীতে বেজায় খুশি এই জেলায় বেড়াতে আসা পর্যটকরা। ঝকঝকে নীল আকাশে কড়া রোদ গায়ে মেখেই সাইট সিয়িং চলছে পর্যটকদের। সুরুলিয়ার চিড়িয়াখানাতেও ভিড় উপচে পড়ছে প্রতিদিনই। শীতের পারদের এই ওঠানামায় পশ্চিমাঞ্চলের পুরুলিয়া-বাঁকুড়ার প্রায় ঘরে ঘরেই জ্বর, সর্দি-কাশি। সঙ্গে গলা- মাথাব্যথা। তবে চিড়িয়াখানার বন্যপ্রাণদের নিয়মিত মল পরীক্ষা চলছে। এই শীতে একেবারে ২৪ ঘন্টা নজরদারিতে রয়েছে সুরুলিয়ার ভল্লুক, হায়না, হরিণ-সহ নানা বন্যপ্রাণী। চিড়িয়াখানায় যেসব সতর্কতা নেওয়া হয়েছে –
- নাইট শেলটার ঢেকে দেওয়া হয়েছে খড় ও বস্তায়
- ভল্লুকের খাদ্য তালিকায় বাড়িয়ে দেওয়া হয়েছে মধু
- নিয়মিত চলছে মল পরীক্ষা
- ২৪ ঘন্টা চিকিৎসকদের নজরে