অভ্রবরণ চট্টোপাধ্যায়, শিলিগুড়ি: জিটিএ নির্বাচনের পর পাহাড়ে ফের জয়জয়কার অনীত থাপার। তাঁর দল ভারতীয় গোর্খা প্রজাতান্ত্রিক মোর্চা একের পর এক গ্রাম পঞ্চায়েত (Panchayat Election) দখল করেছে। পাশাপাশি পঞ্চায়েত সমিতিতেও তাঁর দলের আধিপত্য রয়েছে। এদিকে অনীতের উত্থানে পাহাড়ে এখন অস্তমিত সূর্য বিমল গুরুং। মঙ্গলবার যখন অনীত থাপা কার্শিয়াং এ দাঁড়িয়ে থেকে জয় উপভোগ করছেন তখন বিমল গুরুং নিজের বাড়ি পাতলেবাসেই কাটিয়ে দিলেন। তার দলও প্রায় মুখ থুবড়ে পড়েছে। এই নির্বাচন হেরে গুরুংরা পাহাড়ের রাজনীতিতে অনেকটাই অপ্রাসঙ্গিক হয়ে পড়ল।
শেষ পাওয়া খবর পর্যন্ত দার্জিলিং এর ৭০টি গ্রাম পঞ্চায়েতের মধ্যে প্রায় ৪০টি ও কালিম্পং জেলার ৪২টি গ্রাম পঞ্চায়েতের মধ্যে প্রায় ৩০টি ভারতীয় গোর্খা প্রজাতান্ত্রিক মোর্চা পেয়েছে। বাকি পঞ্চায়েতে গণনা চলছে। এছাড়া পঞ্চায়েত সমিতির ফলাফল পাওয়া যায়নি। একমাত্র কার্শিয়াং পঞ্চায়েত সমিতি বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জয় পেয়েছে ভারতীয় গোর্খা প্রজাতান্ত্রিক মোর্চা। অন্যদিকে বিজেপি জোট করেও শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত মোট ৫টি গ্রাম পঞ্চায়েত দখল করতে পেরেছে।
[আরও পড়ুন: বিজেপির ভোটব্যাংক ধসিয়ে জঙ্গলমহলে কুড়মিদের জয়, দখলে চার পঞ্চায়েত]
দু’দশক পর পাহাড়ের দার্জিলিং, কার্শিয়াং, কালিম্পং, মিরিকে নির্বাচন হয়। বাসিন্দারা শান্তিপূর্ণভাবে ভোটও দিয়েছেন। তবে এদিন ফল বেরনোর পর বোঝা গেল পাহাড় এখন অনীতকেই চায়। দ্বিস্তরীয় পঞ্চায়েত নির্বাচনে বাকিদের থেকে অনেকটাই এগিয়ে অনীতের প্রজাতান্ত্রিক মোর্চা। যদিও পরপর তিনবার পাহাড়ে লোকসভা নির্বাচনে জিতে নিজেদের ভিত শক্ত করেছিল গেরুয়া শিবির। কিন্তু পৃথক রাজ্য গোর্খাল্যান্ডের মিথ্যা প্রতিশ্রুতিতে পাহাড় আর গলছে না তা এই নির্বাচনেই প্রমাণিত। ফলাফল বেরনোর পর দেখা যায় বিজেপি প্রায় ধূলিসাৎ। তাদের জোটও মাথা তুলে দাঁড়াতে পারেনি। নির্বাচনের আগে পাহাড়ের আঞ্চলিক দলগুলোর সঙ্গে জোট করেও তারা কিছুই করতে পারেনি। বরং জিটিএ নির্বাচনের মতই একচ্ছত্র আধিপত্য বজায় রেখে জয় ছিনিয়ে নেয় অনীতরা। পাহাড়ের এখন ত্রিমুকুট অনীতের দখলে। তাদের কাছে জিটিএ ও দার্জিলিং পুরসভা আগেই ছিল এবার তাদের ঝুলিতে এলো পঞ্চায়েতও। তাই এখন পাহাড় একাই শাসন করবেন অনীত থাপা। যদিও জয়ের পর তিনি বলেন, “পাহাড়ের উন্নয়নে আমি সবাইকে নিয়েই কাজ করতে চাই। পাহাড়ে আমরা সকলে পরিবারের মত। তাই এখানে কোনওরকম অশান্তি নেই। যারা জিতেছে তারা যেমন আমাদের যারা হেরেছে তারাও। কারণ সকলকে নিয়েই আমাদের এগিয়ে যেতে হবে।”
অন্যদিকে পাহাড়ে খারাপ ফল করে কেউ কিছুই বলতে চাইছেন না। জোটের মুখপাত্র নোমান রাই ফোন তোলেননি। আবার গোর্খা জনমুক্তি মোর্চার সাধারণ সম্পাদক রোশন গিরি জানিয়ে দিলেন তিনি বাইরে তাই কিছু জানে না। এদিকে বিমলও সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেননি। সবমিলিয়ে জটেই কুপোকাত বিরোধী জোট।