নন্দন দত্ত, সিউড়ি: পঞ্চায়েত ভোটের আগে নিজের প্রাণহানির আশঙ্কা প্রকাশ করলেন শাসক দলের নেতা-ই। বীরভূমের কোর কমিটির সদস্য কাজল শেখের কথায়, তাঁর ঘরে-বাইরে শত্রু। যে কোনও সময় খুন হয়ে যেতে পারেন। তৃণমূল নেতার এহেন মন্তব্যকে হাতিয়ার করে সরব হয়েছে বিরোধীরা। তাঁদের দাবি, তৃণমূলের অন্তর্দ্বন্দ্বের জেরেই খুনের ভয় পাচ্ছেন কাজল শেখ। আবার তৃণমূল সাংসদ শান্তনু সেন বলছেন, বিজেপি ভাড়া করা গুন্ডা দিয়ে তৃণমূল নেতাদেক খুন করাচ্ছে। তাই এমন আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন বীরভূমের নেতা।
মঙ্গলবার নানুর বিধানসভায় আমডহরা বাসস্ট্যান্ড সংলগ্ন কালীতলা মন্দির প্রাঙ্গনে একটি জনসভার আয়োজন করা হয়।সভায় উপস্থিত ছিলেন বীরভূম জেলা কোর কমিটির সদস্য কাজল শেখ, বিধায়ক বিধানচন্দ্র মাঝি, শ্রীনিকেতন পঞ্চায়েত সমিতির সহ-সভাপতি মিহির রায়। সকলের উপস্থিতিতেই নিজের প্রাণহানির আশঙ্কা প্রকাশ করেন কাজল। তাঁর কথায়, “আমি যখন বাড়ি থেকে বের হই, আমার মা কপালে তিনটে চুমু খায়। ভয়ে ভয়ে থাকেন, হয়তো ছেলে আর ফিরবে না। যে কোনও জায়গায় খুন হয়ে যেতে পারি। তবু সত্যর পথ থেকে আমি সরব না। আমি জানি, আমার ঘরে-বাইরে শত্রু।” এর পাশাপাশি, নানুর এলাকায় গত বিধানসভা ভোটে খারাপ ফল হওয়ায় দলীয় নেতাদের একাংশকে দায়ী করেছেন তিনি। কাজলের কথায়, “দলীয় নেতাদের চলার পথ ভুল ছিল। তাই গত বিধানসভা নির্বাচনে কংকালী অঞ্চলে খারাপ ফল হয়।”
[আরও পড়ুন: ‘বাবাকে গুরুত্বপূর্ণ পদ থেকে সরিয়েছিলেন ইন্দিরা’, জয়শংকরের মন্তব্যে বিতর্ক, পালটা তৃণমূলের]
দলীয় নেতার এহেন মন্তব্য নিয়ে তৃণমূল সাংসদ তথা মুখপাত্র শান্তনু রায়ের দাবি, “উনি এ ধরনের কথা কেন বললেন জানি না। তবে দক্ষিণ ২৪ পরগনায় বিজেপি ক্যাডাররা কীভাবে তৃণমূল নেতাকে খুন করল, সেটা সবাই দেখেছে। তাই হয়তো এমন আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন তিনি।” তবে সে কথা মানতে নারাজ বিরোধীরা। তাঁদের দাবি, অনুব্রত মণ্ডলের গোষ্ঠীর হাতে প্রাণ যেতে পারে তাঁর। তাই এমন আশঙ্কাপ্রকাশ করলেন কাজল শেখ।
প্রসঙ্গত, বীরভূমের তৃণমূল সভাপতি অনুব্রত মণ্ডলের সঙ্গে কোনওদিনই সুসম্পর্ক ছিল না কাজল শেখের। তবে অনুব্রতহীন বোলপুর দায়িত্ব বেড়েছে তাঁর। কোর কমিটিতে জায়গা করে নিয়েছেন তিনি। এবার তাঁর গলায় খুনের আশঙ্কার কথা শোনা বেশ তাৎপর্যপূর্ণ বলে মনে করছে ওয়াকিবহাল মহল।