সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: অভিবাসন বিরোধী আন্দোলন ঘিরে ভয়াবহ হিংসায় জ্বলছে ব্রিটেন। শহরের জায়গায় জায়গায় আগুন জ্বালিয়ে দেওয়ার পাশাপাশি দোকান ভাঙচুর, লুটপাট ও অগ্নিসংযোগের অভিযোগ উঠছে বিক্ষোভকারীদের বিরুদ্ধে। এই ঘটনায় এবার কড়া বার্তা দিলেন ব্রিটেনের প্রধানমন্ত্রী কিয়ের স্টার্মার। জানালেন, অতি ডানপন্থীরা গায়ের রং দেখে সাধারণ মানুষকে টার্গেট করছে। যারা এই ঘটনা ঘটাচ্ছে তাঁদের কাউকে রেহাত করা হবে না।
গোটা ঘটনার সূত্রপাত এক দুষ্কৃতী হামলাকে কেন্দ্র করে। গত সপ্তাহে ব্রিটেনের সাউথপোর্টে এক নাচের ক্লাসে ছুরি নিয়ে হামলা চালায় এক দুষ্কৃতী। এই ঘটনায় মৃত্যু হয় ৩ জনের। এর পরই রটে যায় এই হামলাকারী একজন অভিবাসী এবং ইসলামিক কট্টরপন্থী। মুহূর্তের মধ্যে সেই খবর ছড়িয়ে পড়ে গোটা ব্রিটেনে। শুরু হয় সরকারের বিরুদ্ধে অভিবাসন বিরোধী বিক্ষোভ। কয়েক ঘন্টার মধ্যেই তা হিংসাত্মক আকার নেয়। বিভিন্ন জায়গায় হামলা চালানো হয় অভিবাসীদের উপর। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে এই দাঙ্গা আরও গুরুতর আকার নেয়। সেই ঘটনার একাধিক ভিডিও সোশাল মিডিয়ায় প্রকাশ্যে এসেছে। পরিস্থিতি এমন পর্যায়ে যায় যে অনুমান করা হচ্ছে, ২০১১ সালের পর এটাই সবচেয়ে বড় দাঙ্গা ব্রিটেনে। যদিও ব্রিটেন পুলিশের তরফে দাবি করা হয়েছে, হামলাকারী কোনও বিদেশি নন, তিনি ব্রিটেনের নাগরিক। যদিও পুলিশের দাবিতেও বিশেষ কাজ হয়নি।
[আরও পড়ুন: গাড়ি ছুঁল ওভারহেডের তার, বিহারে বিদ্যুৎপৃষ্ট হয়ে মৃত ৯ কানোয়ার যাত্রী]
ব্রিটেনের একাধিক শহরে ব্যাপক হিংসা ছড়ায়। বেছে বেছে পুড়িয়ে দেওয়া হয় অভিবাসীদের দোকানপাঠ, বেছে বেছে চলে হামলা। এই ঘটনায় প্রায় ১৫০ জন বিক্ষোভকারীকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। এই গ্রেপ্তারির খবর সামনে আসতেই নতুন করে আগুন জ্বলে ওঠে দেশে। রবিবার ব্রিটেনের লিভারপুল, ব্ল্যাকপুল, ম্যাঞ্চেস্টার, ব্রিস্টল, হাল শহরে মুসলিম অভিবাসী বিরোধী বিক্ষোভ শুরু করে ডানপন্থীরা। সাউথ ইয়র্কশায়ারে এক হোটেলে আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়। অভিযোগ, এই হোটেল অভিবাসীদের আশ্রয় দিয়েছিল। পরিস্থিতি সামাল দিতে গিয়ে ১০ পুলিশকর্মী আহত হন বলে জানা গিয়েছে। হামলা চলে সাংবাদিকদের উপরেও।
[আরও পড়ুন: জয়নগরে মর্মান্তিক দুর্ঘটনা, মাটির দেওয়াল চাপা পড়ে মৃত ১, আহত শিশু-সহ ৪]
গুরুতর এই পরিস্থিতিতে হামলাকারীদের উদ্দেশে রবিবার কড়া বার্তা দিয়েছেন ব্রিটেনের নয়া প্রধানমন্ত্রী কিয়ের স্টার্মার। তিনি বলেন, 'যারা এই হামলায় অংশ নিচ্ছে তারা পরে পস্তাবে। যারা হিংসা ছড়াচ্ছে সোশাল মিডিয়ায় উস্কানি দিচ্ছে তাঁদের কাউকে রেহাত করা হবে না। যে হিংসা ছড়ানো তা সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন। ডানপন্থীদের গুণ্ডামি ছাড়া আর কিছু নয় গায়ের রং দেখে বেছে বেছে সাধারণ মানুষকে টার্গেট করা হচ্ছে।' পাশাপাশি পরিস্থিতি সামাল দিতে প্রশাসনের সঙ্গে জরুরি বৈঠক করেন প্রধানমন্ত্রী। পরিস্থিতি স্বাভাবিক করতে খ্রিষ্ঠান, মুলসিম এবং ইহুদি ধর্ম প্রচাকরকরা যৌথভাবে জায়গায় জায়গায় গিয়ে শান্তির বার্তা দিচ্ছেন।