সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: পিএনবি দুর্নীতির অন্যতম মূল অভিযুক্ত মেহুল চোকসির পাসপোর্ট বাতিল করেত পারে অ্যান্টিগা সরকার।ইতিমধ্যেই এই বিষয়ে প্রশাসনিক স্তরে প্রস্তুতি শুরু হয়েছে। ‘দ্য সানডে টাইমস’-এর সাংবাদিক জন আর্লিজের এক প্রতিবেদনে উঠে এসেছে বিষয়টি।
[আরও পড়ুন: অবশেষে লন্ডনে গ্রেপ্তার পিএনবি ব্যাংক জালিয়াতিতে অভিযুক্ত নীরব মোদি]
পিএনবি দুর্নীতিতে অন্যতম মূল অভিযুক্ত হিরে ব্যবসায়ী মেহুল চোকসি। ২০১৮ সাল বা গত বছর ক্যারিবিয়ান দ্বীপরাষ্ট্র অ্যান্টিগার নাগরিকত্ব পান তিনি। যেহেতু অ্যান্টিগার সঙ্গে ভারতের প্রত্যর্পণ চুক্তি নেই তাই আইনের হাত এড়াতেই এই পথ নেন গীতাঞ্জলি জেমসের কর্ণধার। যদিও কূটনৈতিক স্তরে পলাতক চোকসিকে ফিরিয়ে আনার জন্য অ্যান্টিগা সরকারের উপর চাপ বাড়াচ্ছে ভারত। জন আর্লিজের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, শুধু মেহুল নয়, দুই চিনা নাগরিকের পাসপোর্টও বাতিল করতে পারে অ্যান্টিগা।
তা কেন এই ব্যবস্থা? জানা গিয়েছে, অ্যান্টিগার পাসপোর্ট পেতে করা আবেদনে তাঁর বিরুদ্ধে কোনও ফৌজদারি মামলা নেই বলে জানিয়েছিলেন মেহুল। যা সর্বৈব মিথ্যা। যার ভিত্তিতে চোকসির বিরুদ্ধে দেশদ্রোহিতার মামলা করতে পারে অ্যান্টিগা ও বারবুডা। যদিও সমস্ত অভিযোগ খারিজ করেছেন চোকসি। আইনজীবী মারফত পাঠানো একটি চিঠিতে ফেরার এই ভারতীয় শিল্পপতি জানিয়েছেন, সমস্ত আইন মেনেই তিনি পাসপোর্টের জন্য আবেদন করেছিলেন। তারপরেই সেই আবেদন গৃহীত হয়। এখন যদি অ্যান্টিগার পাসপোর্ট বাতিল হয়, সেক্ষেত্রে কি চোকসিকে ভারতে ফিরতে বাধ্য করা যাবে, তা নিয়েও জল্পনা শুরু হয়েছে।
ইতিমধ্যেই শারীরিক অসুস্থতার কারণে ভারতে ফিরতে পারছেন না বলে জানিয়েছেন মেহুল। এই মর্মে মেডিক্যাল রিপোর্টও পেশ করেছেন তিনি। এছাড়াও পিএনবি কাণ্ডে নাম জড়ানোর আগেই তিনি দেশ ছেড়েছিলেন বলে মুম্বইয়ের বিশেষ আদালতে জানিয়েছিলেন চোকসি। উল্লেখ্য, অ্যান্টিগার পাসপোর্ট থাকলে যে কেউ ব্রিটেন-সহ ১৩২টি দেশে ভিসা ছাড়াই প্রবেশ করতে ও ছ’মাস থাকতে পারবেন। সেই সুবিধাই নিয়েছেন মেহুল। সম্প্রতি ব্রিটেনের একটি দৈনিক সংবাদপত্রের প্রকাশিত খবরে জানা গিয়েছে, ১৩টি দেশের একটি ছোট গোষ্ঠী বিশ্বজুড়ে আইডেন্টিটি ম্যানেজমেন্ট ইন্ডাস্ট্রি গড়ে তুলেছে। নিজেদের দেশের পাসপোর্টকে সরকারি বন্ডের মতো একটি আন্তর্জাতিক সম্পত্তিতে পরিণত করে খোলা বাজারে বিক্রি করছে তারা। আর সেগুলির ফায়দা নিচ্ছেন প্রথম সারির অর্থনীতির দেশগুলিতে ভিসা ছাড়া প্রবেশ করতে পারেন না এমন দেশগুলির ধনী ব্যক্তিরা। আর স্বাভাবিকভাবেই এদের মধ্যে মানবাধিকার ভঙ্গকারী, আর্থিক দুর্নীতিতে অভিযুক্ত ও অন্যান্য অপরাধীদের সংখ্যা সর্বাধিক। এই ১৩টি দেশের মধ্যে অন্যতম অ্যান্টিগা। তাদের এই নীতির ফলে সন্ত্রাসবাদীদের সুবিধা হচ্ছে বলে তীব্র সমালোচনা শুরু হয়েছে।
[আরও পড়ুন: দেশে ফিরল না ঐতিহাসিক সামগ্রী, লন্ডনে নিলামে উঠল টিপুর বন্দুক ও হায়দারের তলোয়ার]