শেখর চন্দ্র, আসানসোল: জামিন পেলেন না অনুব্রত মণ্ডলের দেহরক্ষী। ১৪ দিনের জেল হেফাজত হল দেহরক্ষী সায়গল হোসেনের। আসানসোল বিশেষ সিবিআই আদালতের বিচারক রাজেশ চক্রবর্তী রায় দেন ৮ জুলাই পরবর্তী হাজিরা সাইগলের।
১০০ কোটির যে সম্পত্তির হিসেব, যা নিয়ে আলোচনা চলছে, তা সিজার লিস্টে নেই কেন? এই প্রশ্ন তোলেন সায়গল হোসেনের আইনজীবীরা। তাঁরা পাশাপাশি অভিযোগ করেন, একজন সরকারি কর্মীকে যে প্রক্রিয়ায় গ্রেপ্তার করা হয়েছে, তা অসাংবিধানিক। সায়গল হোসেনের বৃদ্ধ মা অসুস্থ, হাসপাতালে ভরতি। বাড়িতে দশ বছরের বিশেষভাবে সক্ষম মেয়ে রয়েছে। সে অর্থে বাড়িতে অভিভাবক বলে কেউ নেই। আবার কয়েকদিন আগে ছোট মেয়ের দুর্ঘটনায় মৃত্যু হয়েছে। এমন মানবিক কারণ দেখিয়ে জামিনের আবেদন করা হয় বলে জানা গিয়েছে। যদিও বিচারক ঘণ্টা দেড়েক দু’পক্ষের সওয়াল জবাব শুনে সে আবেদন খারিজ করে জেল হেফাজতের রায় দেন।
[আরও পড়ুন: আইপিএল ফাইনালে রামিজ রাজাকে আমন্ত্রণ জানান সৌরভ, কেন আসেননি? দিলেন ব্যাখ্যা]
তবে এদিন সিবিআইয়ের তরফের আইনজীবীরা বেশ কিছু নথি জমা দেন বিচারকের কাছে। বিশেষ করে ২০১৬ থেকে ২০২০ সাল পর্যন্ত এনামুল হকের সঙ্গে মোবাইল ফোন মারফত কথোপকথন। সেই কল ডিটেলস বা সিডিআর রিপোর্ট জমা দেওয়া হয়। এনামুলের সঙ্গে সায়গলের ই-মেল আদান-প্রদানের নথি জমা দেওয়া হয়। পাশাপাশি ৫০টি জমি কেনাবেচার দলিলও জমা দেওয়া হয়। এসবই কেস ডায়েরিতে উল্লেখ আছে। সিবিআইয়ের পক্ষের আইনজীবীরা অভিযোগ করেন, একজন বডিগার্ড, রাজ্য পুলিশের কনস্টেবলের গরু পাচারকারীর সঙ্গে গত চার বছর ধরে কী কথোপকথন করেছেন? গত সাতদিনের হেফাজতে থাকাকালীন জেরাতে কোনও উত্তর দেননি তিনি। আইনজীবীদের আরও দাবি, ওই দলিলের মধ্যে প্রভাবশালী রাজনৈতিক ব্যক্তি বা প্রশাসনিক ব্যক্তিদের নাম থাকতে পারে। তাছাড়া প্রভাবশালীর সায়গল জামিনে মুক্ত হলে তদন্ত প্রভাবিত হতে পারে- এই যুক্তি এদিন ফের দেওয়া হয়। শেষপর্যন্ত জেল হেফাজত হয় সায়গলের।
উল্লেখ্য, সাতদিন সিবিআই হেফাজতে থাকার পর শুক্রবার সকালে আসানসোলে বিশেষ সিবিআই আদালতে তোলা হয় অনুব্রত মণ্ডলের দেহরক্ষী সায়গল হোসেনকে। জুনের ১০ তারিখ প্রথম সায়গলকে তোলা হয়। সিবিআই সাতদিনের হেফাজতে পায় তাঁকে। এরপর তোলা হয় ১৭ জুন। ফের মেলে সাতদিনের হেফাজত। সেই মতো আজ সায়গলকে কলকাতার নিজাম প্যালেস থেকে আসানসোল সিবিআই আদালতে নিয়ে যাওয়া হয়। সিবিআই আধিকারিকরা বিচারকের কাছে অনুমতি চেয়েছিলেন যেন জেল হেফাজতে থাকাকালীন সায়গলকে জিজ্ঞাসাবাদ করা যায়। সেই আবেদন এদিন মঞ্জুর করেন বিচারক রাজেশ চক্রবর্তী। গরু পাচার মামলায় ধৃত সায়গলের কাছে গরু পাচার মামলার অনেক তথ্য রয়েছে, এমনটাই দাবি সিবিআইয়ের।