দুলাল দে: অনেকদিন পর দলবদলের নিস্তরঙ্গ পুকুরে বড়সড় ঢিল পড়ল ইস্টবেঙ্গলে আনোয়ার আলির সইয়ে। তবে লাল-হলুদের চুক্তিপর্বে আনোয়ারের সইকে কেন্দ্র করে শেষ দেখে ছাড়তে চাইছে মোহনবাগানও। তাদের দাবি, দিল্লি এফসি থেকে লোন নিয়ে দীর্ঘ চুক্তি রয়েছে আনোয়ারের সঙ্গে। ফলে ভারতীয় দলের ডিফেন্ডার লাল-হলুদের চুক্তিপত্রে সই করলেও চিন্তিত নন তারা। সবুজ-মেরুন কর্তারা আনোয়ারের সঙ্গে চুক্তির কপি ইতিমধ্যেই পাঠিয়ে দিয়েছেন ফেডারেশনে। যা নিয়ে এতটুকুও ভাবছে না ইস্টবেঙ্গল। কিন্তু ঘটনা হচ্ছে, এদিন ইস্টবেঙ্গলের চুক্তিপত্রে সই করে দিয়েছেন মোহনবাগানের নির্ভরযোগ্য ফুটবলার আনোয়ার আলি।
দিল্লি এফসি থেকে লোনে নিয়ে আনোয়ারের (Anwar Ali) সঙ্গে দীর্ঘ চুক্তি করে মোহনবাগান। সম্প্রতি ইস্টবেঙ্গল কর্তারা চুক্তির আইনি ফাঁক খুঁজে দেখেন লোনে একবছরের বেশি চুক্তি সম্ভব নয়, ফলে আনোয়ার রাজি থাকলে তাঁকে লাল-হলুদ জার্সি পরাতে কোন সমস্যা হবে না। আর আনোয়ারকে ইস্টবেঙ্গলের (East Bengal) হাতে তুলে দেওয়ার জন্য সবচেয়ে বেশি সচেষ্ট ছিলেন দিল্লি এফসি কর্তা রঞ্জিত বজাজ। আর এই চুক্তিতে ইস্টবেঙ্গলের হয়ে পুরো ব্যাপারটি দেখেন শীর্ষ কর্তা দেবব্রত সরকার। তিনি নিয়মিত যোগাযোগ রেখে যান রঞ্জিত বাজাজের সঙ্গে। দিল্লি এফসির কর্তার সবুজ সঙ্কেত পেয়েই চন্ডীগড় উড়ে যান দেবব্রত সরকার। আনোয়ারকে সই করিয়ে রাতেই ফিরে আসেন কলকাতায়।
[আরও পড়ুন: অনন্ত-রাধিকার বিয়েতে অতিথি নরেন্দ্র মোদি-সহ একাধিক হেভিওয়েট, যাচ্ছেন না গান্ধীরা!]
তবে যেহেতু বিষয়টির মধ্যে একটু আইনি জটিলতা রয়েছে তাই এখনই আনোয়ারের নাম সরকারিভাবে ঘোষণা করবে না ইস্টবেঙ্গল। লাল-হলুদ কর্তাদের দাবি, ফিফার নতুন নিয়ম অনুযায়ী লোনের চুক্তিপত্র একবছরের বেশি করা সম্ভব নয়। কিন্তু সমস্যা হচ্ছে এই নিয়ম কার্যকর হতে পারে ২০২৫ এর জানুযারি থেকে। মোহনবাগান এবং আনোয়ারের মধ্যে ঠিক কি চুক্তি হয়েছিল তা নিয়ে সবথেকে ভালো যিনি বলতে পারতেন সেই রঞ্জিত বাজাজ মুখে কুলুপ এঁটে শুধু বলছেন, আনোয়ারকে নিয়ে যা বলার ইস্টবেঙ্গল কর্তারা বলবেন। দিল্লি থেকে বিমানে ওঠার সময় আনোয়ারের চুক্তি নিয়ে সরকারিভাবে কোন মন্তব্য করতে রাজি হননি দেবব্রত সরকারও। তাঁরাও চাইছেন, সবদিক দেখেশুনে কিছুদিনের মধ্যে ঘোষণা করে দিতে।
ইস্টবেঙ্গলের বিনিয়োগকারী কর্তারা মেনে নিচ্ছেন আনোয়ার ইস্যুতে পুরো বিষয়টা দারুণভাবে ম্যানেজ করেছেন দেবব্রত সরকার। মূলত তাঁর চেষ্টাতেই ভারতীয় ডিফেন্ডারকে লাল-হলুদে সই করানো সম্ভব হয়েছে। মোহনবাগান (Mohun Bagan) কর্তারা অবশ্য প্রস্তুতি নিচ্ছেন আইনি লড়াইয়ের। তাকিয়ে রয়েছেন ফেডারেশনের প্লেয়ার্স স্ট্যাটাস কমিটির দিকে। কারণ, ব্যাপারটা সেদিকেই গড়াতে চলেছে। তবে শেষ পর্যন্ত আনোয়ার ইস্টবেঙ্গলেই খেলেন তা লাল-হলুদকে আসন্ন মরশুমে শক্তিশালী দল করে তুলবে বলাই বাহুল্য।