শম্পালী মৌলিক: হাসি তাঁর অস্তিত্বের স্বাক্ষর। সারাক্ষণ ফুরফুরে মেজাজে থাকেন। অভিনেত্রী অপরাজিতা আঢ্য প্রসঙ্গে একথাই সবচেয়ে আগে মনে আসে। কী তাঁর মূলমন্ত্র? ‘জীবনে সবকিছু ওভারকাম করা যায় হাসি দিয়ে। যোগা করবে যখন, সেটাও হাসতে হাসতে। কারণ সেটা ঈশ্বরের কাছে পৌঁছয়। আর আমি হাসলাম মানে উল্টোদিকের মানুষটাকেও হাসতে সাহায্য করলাম। সেটা বিরাট পাওনা। হাসি ঈশ্বরের আশীর্বাদ, হাসি দিয়ে দুঃখ ভুলে যাওয়া যায়।’ অপরাজিতার লাস্ট সিরিজ। মানসী সিনহা পরিচালিত ছবি ‘এটা আমাদের গল্প’ দারুণ সাফল্য পেয়েছে। এবার চলতি সপ্তাহে আসছে তাঁর অভিনীত ‘আলেকজান্ডারের পিসি’। ছোটদের কাহিনি নিয়ে নির্মল কমেডি ছবি।
এমন ধরনের ছবি বাংলায় খুব একটা হয় না বা হলেও তেমন চলে না। কারণ কী? “দেখো, এটা খুব সরল একটা ছবি। আমরা যেমন ‘পদিপিসির বর্মিবাক্স’ দেখেছি, ওই ধরনের ছবি। এখন গ্রামের মানুষের জীবনেও জটিলতা এসেছে, স্মার্টফান ঢুকে গেছে। নয়ের দশকেও গ্রামের জীবনযাত্রা সরল ছিল। আমরা এই ছবির জন্য হাড়োয়াতে ১৫ দিন শুটিং করেছি। এখনও যে ওরকম মানুষ আছে ভাবতে আমার ভালো লাগছিল। মানবিকতা, অতিথিপরায়ণতা ওইরকম ভাবে বেঁচে আছে দেখে ভালো লাগল। দুলেন্দ্র ভৌমিকের কাহিনি অবলম্বনে এই ছবি। দেবজ্যোতি সরকারের পরিচালনা। আমি ‘আলেকজান্ডারের পিসি’র চরিত্রে। এমন মহিলা আমরা আগে দেখেছি। যার অনেক গরু আছে, তাদের ছবি তুলে রাখে যাতে চুরি না হয়ে যায়। গ্রামে থিয়েটার হওয়ার ভাবনায় সে মশগুল। যাতে গ্রামের ছেলেরা বখে না যায়, সেই চিন্তা তার মাথায়। নিজের ঘর ছেড়ে দেয়, ক্লাবঘরের জন্য। তবে পিসিকে সবাই ভয় পায় তার মেজাজের জন্য। কিন্তু তার মনটা খুব ভালো। টনশা যাত্রার মতো লুপ্তপ্রায় শিল্প এই ছবির একটা প্রধান অংশ।” একটানা বলে থামলেন অভিনেত্রী।
অপরাজিতা ছাড়াও বিশ্বনাথ বসু, চন্দন সেন, পার্থসারথি দেব, ঋদ্ধিরাজ দত্ত, তীর্থ প্রমুখ রয়েছেন। অভিনেত্রীর মতে এই ছবি দেখলে মন ভালো হয়ে যাবে। সামনের মাসে অপরাজিতা মুম্বই যাচ্ছেন একটি বিজ্ঞাপনের কাজে। ফিরেই একটা ওয়েব সিরিজের শুটিং শুরু করবেন। কাজের বাইরের আরও দুটো জিজ্ঞাসা ছিল তাঁর কাছে। নাচের রিলস শেয়ার করেন অভিনেত্রী প্রায়ই, সেটা কি যুগের সঙ্গে তাল মেলাতে? খোলসা করলেন, ‘আমাদের নাচের স্কুল রয়েছে। আমার দীর্ঘ নৃত্যজীবন। ৩২ বছরের সংস্থা রয়েছে। প্রধান টিচার আমার বান্ধবী মালা সেন। হাওড়ায় স্কুল ছিলই। বেহালাতেও ব্রাঞ্চ করেছি সম্প্রতি। আমি নিজে নাচতে ভালোবাসি এবং প্র্যাকটিসে থাকি। নাচে বা খেলায় যে আনন্দ, পয়সা দিয়েও কিনতে পাওয়া যায় না। স্টুডেন্টদের সঙ্গে রিলস দিলে তাদেরও একটা পরিচিতি তৈরি হয়। নতুন স্টুডেন্ট আসতে সাহায্য করে। এই আর কী (হাসি)’।
[আরও পড়ুন: ISI ঘনিষ্ঠ নিষিদ্ধ পাক ব্যবসায়ীর সঙ্গে কাজ! বিতর্কে জড়ালেন মাধুরী দীক্ষিত, নিন্দার ঝড়]
কিছুদিন আগে অভিনেত্রী পুরী গিয়েছিলেন। সমুদ্রস্নানের কিছু ছবিও শেয়ার করেছেন সমাজমাধ্যমে। অপরাজিতার বডি পজিটিভিটির তারিফ করতেই হয়। সাধারণত ভারী চেহারায় কেউ এমন ছবি দিলে ভীষণ ট্রোলড হন। অভিনেত্রী কি ট্রোলিংয়ে ভয় পান না? সপাট জবাব তাঁর, ‘ট্রোল যারা করে তাদের প্রতি সহানুভূতি থাকা দরকার। কারণ তাদের কোনও কাজ নেই। তাই অপরের সমালোচনা করে। বাবা বলতেন, মান আর হুঁশ নিয়ে মানুষ। যে অ্যাপ্রিশিয়েট করতে পারে না, সে মানুষের পর্যায়েই পড়ে না। যারা ট্রোল করে তাদের ওটাই নেশা। এদের পাত্তা দেওয়ার প্রয়োজন মনে করি না। এরা সংখ্যায় ম্যাক্সিমাম একশো জন হবে। কিন্তু দশ লক্ষ লোক যদি দেখে, তারা আমাকে ভালোবেসেই দেখবে (হাসি)।’