দেবব্রত মণ্ডল, বারুইপুর: চাপ বাড়ছে 'তাজা নেতা' আরাবুল ইসলামের উপর। জেলযাত্রার পর দলীয় পদ থেকে তাঁকে সরিয়ে দেওয়া হল বলে তৃণমূল সূত্রে খবর। ভাঙড় ২ পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি ছাড়াও আরাবুল ব্লক তৃণমূলের কনভেনার বা আহ্বায়ক পদে ছিলেন। ইতিমধ্যে এলাকায় দলের একাধিক বৈঠকে জানিয়ে দেওয়া হয়েছে, আরাবুল আর ব্লক তৃণমূলের আহ্বায়ক নেই। তাঁকে বাদ দিয়েই আগামী দিনে সমস্ত কর্মসূচি পালন করতে হবে, বার্তা দেওয়া হয়েছে কর্মীদের।
এ বিষয়ে ভাঙড়ের পর্যবেক্ষক শওকত মোল্লা বলেন, "দলের নির্দেশে আপাতত আরাবুল ইসলামকে(Arabul Islam) ভাঙড় ২ ব্লক তৃণমূলের কনভেনার পদ থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়েছে। আপাতত তিনি ভাঙড় ২ পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি থাকছেন।"
[আরও পড়ুন: টানা ২০ দিন শিয়ালদহ শাখায় বাতিল বহু লোকাল, ঘুরপথে চলবে কিছু ট্রেন, চরম ভোগান্তির আশঙ্কা]
প্রসঙ্গত, ভাঙড়ের আইএসএফ কর্মী মহিউদ্দিন মোল্লার খুনের ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে গত ৮ ফেব্রুয়ারি উত্তর কাশীপুর থানার পুলিশ আরাবুলকে গ্রেপ্তার করে। তার পর থেকে ভাঙড়, পোলেরহাট থানা এলাকার বিভিন্ন গণ্ডগোলের ঘটনায় জড়িয়ে থাকার অভিযোগেও পুলিশ তাঁকে যুক্ত করে। সূত্রের খবর, জেলে যাওয়ার পর আরাবুলকে দলের বিভিন্ন পদ থেকে সরানোর জন্য তৎপর হয়েছে তৃণমূল। ইতিমধ্যে ভাঙড়ে দলের বিভিন্ন কর্মী বৈঠকে আরাবুল ইসলাম যে আর ব্লক তৃণমূলের আহ্বায়ক নেই সে কথা জানিয়ে দেওয়া হয়েছে। তৃণমূল সূত্রের খবর, শুধু আইএসএফ কর্মী খুনের ঘটনাই নয়, আরাবুলের বিরুদ্ধে বিভিন্ন ক্ষেত্রে তোলাবাজি-সহ নানা অভিযোগ রয়েছে। যে কারণে তাঁকে দলের সাংগঠনিক পদ থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়েছে। আপাতত তিনি ভাঙড় ২ পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি পদে থাকছেন।
তৃণমূলের জন্ম লগ্ন থেকে আরাবুল দলের সঙ্গেই আছেন। ২০০৬ সালে তিনি ভাঙড় বিধানসভা কেন্দ্র থেকে জিতে তৃণমূলের বিধায়ক হন। তার পর থেকে কখনও সমিতির সভাপতি, সহ-সভাপতি, আবার সভাপতি হয়েছেন। ২০১৮ সালে পঞ্চায়েতের নির্বাচনের আগে গ্রেপ্তার হয়েছিলেন। ওই সময় জেলে থেকেই নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে জয়ী হয়ে পঞ্চায়েত সমিতির সহ-সভাপতি হন। ২০২৩ পঞ্চায়েত নির্বাচনেও ভাঙড়ে আইএসএফের প্রবল দাপট থাকা সত্ত্বেও আরাবুল ও তাঁর পুত্র হাকিমুল ইসলাম জয়ী হন। আরাবুল আবারও পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি হন। হাকিমুল জেলা পরিষদ সদস্য। আরাবুল জেলে যাওয়ার পর এখন ভাঙড়ের দায়িত্ব সামলাচ্ছেন দলের পর্যবেক্ষক শওকত মোল্লা।
[আরও পড়ুন: পড়াশোনা বিদেশে, লন্ডন থেকে CAA’র প্রতিবাদ, চেনেন ভোট ময়দানে নামা তৃণমূলের নয়া প্রার্থীকে?]
দিন কয়েক আগে আরাবুলের আইনজীবী দাবি করেছিলেন আরাবুলকে ফাঁসানোর জন্য চক্রান্ত করছেন শওকত। ওই ঘটনার পর থেকে আরাবুল পুত্র হাকিমুল ইসলামকেও দলের বিভিন্ন মিটিং-মিছিলে ডাকা হচ্ছে না বলে তৃণমূল সূত্রে জানানো হয়েছে।