প্রসূন বিশ্বাস: হাতে কয়েকদিন আগেই পাওয়া অর্জুন পুরস্কারটা (Arjuna Award) ধরে দেদার পোজ দিয়ে যাচ্ছেন। চারিদিকে গুণগ্রাহীতে ভরা। সাফল্যের পর এভাবেই শনিবার, ২৪ ফেব্রুয়ারি বিকেলে কলকাতায় নিজের দুই কোচ পৌলমী ঘটক আর সৌম্যদীপ রায়ের অ্যাকাডেমিতেই অনুরাগীদের মধ্য মিশে যাচ্ছিলেন ঐহিকা মুখোপাধ্যায় (Ayhika Mukherjee)। দেখে কে বলবে, এই মেয়েটিই গত বছর জানুয়ারি মাসে খেলা ছেড়ে দেবেন বলে ভেবেছিলেন?
হ্যাঁ, চোট পেয়ে খেলা ছেড়ে দেওয়ার কথা চিন্তা করা ঐহিকা। যদি সেদিন সত্যি টিটি ব্যাট তুলে রাখতেন, তাহলে আজ বাঙালি পেত না একজন অর্জুন পুরস্কারপ্রাপ্ত প্যাডলারকে। শুধু তাই নয়, ইতিহাসে নাম লিখে ফেলা ঐহিকা এখন সারা দেশে চর্চার বিষয়। কারণ, বিশ্বের এক নম্বর ক্রমতালিকায় থাকা চিনের সান ইয়েন সানকে হারিয়েছেন তিনি।
[আরও পড়ুন: সোশাল মিডিয়ায় ভিডিও দেখে সন্ধান পান বেন স্টোকস, রাঁচিতে ভারতের ত্রাস সেই বশির]
সংবর্ধনা পেয়ে গত বছরের সেই কঠিন সময়ের কথাই তুলে ধরছিলেন ঐহিকা। তিনি বলেন, “আজ আপনারা দেখছেন যে, বেশ কিছু সাফল্য পেয়েছি আমি। কিন্তু গত বছর জানুয়ারিতে একটা পেয়েছিলাম। মনে হয়েছিল এবার খেলা ছেড়ে দিতে হবে। তারপর দুই-তিন মাস আমি বিশ্রামে ছিলাম। ন্যাশনালসেও যেতে পারছিলাম না। সহকর্মীরা তখন আমাকে বলেছিল খেলা না ছাড়তে। তাই পরের প্রতিযোগিতাগুলোতে নেমেছিলাম। তারপরের ঘটনা সবার জানা।”
হাতে অর্জুন পুরস্কারটি ধরে গড়গড় করে যেন অতীতের দিনগুলোতে ফিরে যাচ্ছিলেন ঐহিকা। বলছিলেন, “ছোটবেলায় চেহারাটাও একটু ভারী ছিল। আমাকে ফিট রাখার জন্য টিটিতে ভর্তি করানো হয়েছিল। তখন কী আর এই সব কথা ভেবেছি?” কথা প্রসঙ্গে এল বুসানে বিশ্বের এক নম্বর প্যাডলারের বিরুদ্ধে জয়ের কাহিনি। ঐহিকা বললেন, “আমি বরাবর সেরা খেলোয়াড়দের বিরুদ্ধে খেলতে ভালোবাসি। নিজেকে বুঝিয়েছিলাম, ও রক্তমাংসের একজন মানুষ। এশিয়ান গেমসের পদকের কথাটা আমার মাথায় ঘুরছিল তখন। চিনের বিরুদ্ধে সেখানে আমরা জিতেছিলাম।”
অলিম্পিকে কী হবে এখনও জানেন না। তবে অলিম্পিকের কথা মাথায় না রেখে নিজের প্রস্তুতিতে ডুবে থাকতে চান ঐহিকা। এদিন ধানুকা ধুনসেরি সৌম্যদীপ-পৌলমী টেবল টেনিস অ্যাকাডেমি থেকে তাঁকে এই সাফল্যের জন্য সম্মানিত করা হল। সঙ্গে এক লক্ষ টাকা দেওয়া হল। এই অনুষ্ঠানে সম্মান জানানো হয় তাঁরই আরেক সতীর্থ সুতীর্থা মুখোপাধ্যায়কেও। এই অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন সিকে ধানুকাও।