সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: গত ১০-১২ দিন যাবৎ রাজ্যজুড়ে সবচেয়ে চর্চিত নাম বোধহয় একটিই। পার্থ চট্টোপাধ্যায় (Partha Chatterjee) এবং অর্পিতা মুখোপাধ্যায় (Arpita Mukherjee), সংক্ষেপে ‘অপা’। কত সম্পত্তি রয়েছে তাঁদের, দুজনের ঘনিষ্ঠতাই বা কতটা, তা নিয়ে আমজনতার আগ্রহের শেষ নেই।আদালতে এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেটের আইনজীবীদের সওয়াল জবাবে এই প্রশ্নগুলির জবাব অনেকটাই মিলল। উঠে এল অর্পিতার জীবনবিমার সংক্রান্ত তথ্য, যেখানে নমিনি ছিলেন পার্থ। আবার দুজনের নামে-বেনামে কেনা সম্পত্তির হদিশও প্রকাশ্যে এনেছে ইডি। তবে সম্পর্কটা যে শুধু টাকাকড়ি কিংবা সম্পত্তির ছিল তা নয়, দুজনের মধ্যে হৃদয়ের টানও ছিল গভীর। তা না হলে কি আদালতে ঢোকার আগেও অর্পিতার চোখেমুখে ‘স্যর’ পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের জন্য এত উদ্বেগ ধরা পড়ে। মনের যোগ না খাকলে কি আদালতের লকআপে ঢোকার আগে ছলছল চোখে মডেল-অভিনেত্রী জানতে চান, ‘স্যর কিছু খাননি?’
ব্যাঙ্কশাল আদালতের সওয়াল জবাবে ইডির (Enforcement Directorate)মে আইনজীবীরা দাবি করেছেন, পার্থ-অর্পিতার যৌথ মালিকানায় একাধিক সম্পত্তি রয়েছে। রয়েছে একটি সংস্থাও-‘অপা ইউটিলিটি সার্ভিসেস’। সংস্থাটি তৈরি হয়েছিল প্রায় বছর দশেক আগে। ২০১২ সালের নভেম্বর মাসে দুই জনের সমান সমান পার্টনারশিপে এই সংস্থাটি চালু হয় বলে দাবি করেছে ইডি। সেই সময় এই সংস্থার নাম করে বেশকিছু সম্পত্তিও কেনা হয়েছিল বলে জানানো হয়েছে আদালতে। সেই সমস্ত সম্পত্তি কীভাবে কেনা হয়, নগদে কেনা হলে সেই টাকার উৎস কী তা খতিয়ে দেখছে চায় তদন্তকারীরা। সেই সমস্ত তথ্যের হদিশ পেতে বৃহস্পতিবার সকাল থেকেই দুজনকে মুখোমুখি বসিয়ে জেরা শুরু করেছে ইডি।
[আরও পড়ুন: দিল্লি যাচ্ছেন মমতা, বৃহস্পতিবার বৈঠক দলীয় সাংসদদের সঙ্গে, শুক্রবারই মোদির সঙ্গে সাক্ষাতের সম্ভাবনা]
শুধু যৌথ মালিকানার সংস্থা নয়, ‘অপা‘র নামে রয়েছে যৌথ সম্পত্তি, বিভিন্ন সংস্থায় যৌথ লগ্নিও। এরমধ্যে বোলপুরে যৌথ মালিকানাধীন একটি সম্পত্তির হদিশ পেয়েছে ইডি। যা ২০১২ সালে কনভয়েন্স ডিউটি রেজিস্টার হয়েছিল। কিন্তু বোলপুরের কোন সম্পত্তির কথা বলা হয়েছে, তা ইডি উল্লেখ করেনি। স্বাভাবিকভাবেই এই তথ্যগুলি থেকে একটি বিষয় স্পষ্ট যে পার্থ-অর্পিতার সম্পর্কের শিকড় অনেকটাই গভীরে। যার শুরুটা ২০১২ সাল নাগাদ। তারপর থেকে অর্পিতার নামে ৩১টি জীবনবীমা রয়েছে, যার প্রতিটির নমিনি ‘স্যর’ পার্থ।
বুধবার দুপুরে দুজনকে ব্যাঙ্কশাল কোর্টে তোলা হলে দুজনে কাছাকাছি দাঁড়িয়েছিলেন। কিন্তু কেউ কারোর সঙ্গে কথা বলেনি। শুধু লকআপে প্রবেশের আগে পুলিশকর্মীকে অর্পিতার প্রশ্ন ছিল ,’স্যর কিছু খাননি?’ এরপর নিজের মনেই বলতে থাকেন, ‘স্যর কিচ্ছু খাচ্ছেন না।’ নিজে অবশ্য কিছুই দাঁতে কাটেনি ‘ম্যাডাম’ অর্পিতা।