সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: ইস্টারেও রক্তাক্ত মারিওপোল (Mariupol)। রবিবার অর্থাৎ গতকালও শহরটিতে আছড়ে পড়ে একের পর এক রুশ গোলা। মারিওপোলে ইউক্রেনীয় বাহিনীর শেষ ঘাঁটি আজভস্টাল কারখানায় আশ্রয় নিয়েছেন বহু মানুষ। সেখানেই রাশিয়ার সেনাবাহিনী হামলা চালায় বলে খবর।
[আরও পড়ুন: জয়ের পরই বিরোধিতার মুখে ম্যাক্রোঁ, প্যারিসের রাস্তায় পুলিশের গুলিতে নিহত ২ বিক্ষোভকারী]
গত ২৪ ফেব্রুয়ারি ইউক্রেনে হামলা শুরু করে রাশিয়া। তারপর পেরিয়ে গিয়েছে প্রায় দু’ মাস। রাজধানী কিয়েভ, খারকভ, মারিওপোল, ওডেসা, সুমি-সহ বেশ কয়েকটি শহর কার্যত ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছে। এহেন পরিস্থিতিতে রবিবার অর্থোডক্স ইস্টার পালন করলেন ইউক্রেনবাসী। এদিন কিয়েভের ক্যাথিড্রাল থেকে ভিডিও বার্তা দেন ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি। তাঁর দাবি, “জয় আসবেই।” বলে রাখা ভাল, কমেডিয়ান থেকে দেশনায়ক হয়ে ওঠা জেলেনস্কি এখনও গোটা দুনিয়ার নায়ক। প্রবল শক্তিশালী রুশ বাহিনীকে আটকে দিয়ে পুতিনের ‘অজেয়’ ভাবমূর্তিতে আঘাত হেনেছেন তিনি।
এদিকে, রাশিয়াতেও ইস্টার পালন হয়েছে। সীমান্ত আলাদা হলেও দুই দেশের ভাষা, বেশভূষা, খাদ্য- সবই প্রায় এক। যদিও ধর্মীয় অনুষ্ঠানের দিনটিতেও একই রকম বিধ্বংসী রুশ বাহিনী। মারিওপোলের আজভস্টাল কারখানায় ফের গোলাবর্ষণ শুরু হয়েছে। হামলা চলছে অন্যত্রও। ইউক্রেনের প্রেসিডেন্টের উপদেষ্টা মিকাইলো পোডোলিয়াক বলেন, “রাশিয়া যাই বলুক, ওরা আজভস্টল ইস্পাত কারখানাটিকে সম্পূর্ণ ভাবে ঘিরে রেখে টানা গোলাগুলি চালিয়ে যাচ্ছে। রাশিয়ার বোমার হাত থেকে বাঁচতে কারখানার নীচে বাঙ্কারে আশ্রয় নিয়েছিলেন সেনাবাহিনী ও সাধারণ মানুষ। তাঁরা এখনও আটকে রয়েছেন। রুশ বাহিনী তাঁদের উপরে হামলা চালিয়েই যাচ্ছে। কে যেন নির্দেশ দিয়েছিল, হামলা না চালাতে…!”
উল্লেখ্য, সদ্য ইউক্রেনকে স্বাধীন বলে ঘোষণা করেছেন রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। তারপরও আজভস্টাল কারখানায় হামলা না চালানোর নির্দেশ দিয়েছিলেন তিনি। কিন্তু সেই নির্দেশ যে ফাঁকা বুলি মাত্র তা স্পষ্ট। বলে রাখা ভাল, ভৌগোলিক ও কৌশলগত দিক থেকে রাশিয়ার কাছে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ পূর্ব ইউক্রেনের বন্দর শহর মারিওপোল। কারণ, রাশিয়া অধিকৃত ক্রাইমিয়ার সঙ্গে রুশপন্থীদের কব্জায় থাকা ডোনেৎস্ক এবং লুহানস্ক এলাকাকে (দোনবাস অঞ্চল) যুক্ত করতে চায় মস্কো। এই যোগসাধনের জন্য প্রয়োজন বন্দর শহর মারিওপোলে দখল কায়েম করা। সেই কারণেই শহরটি রাশিয়ার কাছে এত গুরুত্বপূর্ণ। বস্তুত, মারিওপোল দখলের লড়াইয়ে ইতিমধ্যেই হাজার হাজার সাধারণ মানুষের মৃত্যু হয়েছে বলে দাবি করেছে ইউক্রেন।