শেখর চন্দ্র, আসানসোল: অনুব্রত মণ্ডলের দিল্লিযাত্রায় কাটল জটিলতা। কলকাতা হাই কোর্টের নির্দেশমতো আসানসোল থেকে কলকাতায় যাওয়ার সময় নিরাপত্তা দিতে হবে পুলিশকেই। কলকাতার হাসপাতালে মেডিক্যাল টেস্ট হওয়া পর্যন্ত অনুব্রতর সমস্ত দায়িত্ব আসানসোল কারা কর্তৃপক্ষের। মেডিক্যাল টেস্টে ফিট সার্টিফিকেট পাওয়া গেলে তারপরই তাঁর দায়িত্ব ইডি’র কাছে হস্তান্তর করা যাবে। সোমবার এমনই নির্দেশ দিলেন আসানসোল বিশেষ সিবিআই আদালতের বিচারক রাজেশ চক্রবর্তী।
আসানসোল সিবিআই আদালতে বিচারক রাজেশ চক্রবর্তী নির্দেশ দেন, হাই কোর্টের নির্দেশ কার্যকরী হবে। আসানসোল দুর্গাপুর পুলিশ কমিশনারেটকে এসকর্ট দিয়ে অনুব্রতকে নিয়ে যেতে হবে। সেন্ট্রাল হাসপাতালে অনুব্রতর শারীরিক পরীক্ষা হবে। তারপর সেখান থেকে ইডির দায়িত্বে গোটা বিষয়টি চলে যাবে। সোমবার সকালে অবশ্য রাজ্য পুলিশের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে, তারা বাহিনী না দেওয়ার বিষয়টি নস্যাৎ করে দেয়।
রাজ্য পুলিশের বক্তব্য, তারা কখনই বলেনি যে বাহিনী দিতে পারবে না। তাদের বক্তব্য, জেল কর্তৃপক্ষ বাহিনী চেয়ে যে আবেদন করেছে, সেখানেই রয়েছে গলদ। জেল কর্তৃপক্ষের তরফে স্পষ্ট করে বলা হয়নি, তারা পুলিশ বাহিনী কী কারণে চাইছেন, কোথা থেকে কোথায় নিয়ে যেতে চাইছেন, আসানসোল থেকে কলকাতা নিয়ে যাওয়ার জন্য বাহিনী চাইছে, নাকি দিল্লি নিয়ে যাওয়ার জন্য এসকর্ট টিম চাইছেন।
[আরও পড়ুন: টাকা তুলতেন না এটিএমে! পরিবার নিয়ে মানিকের বিদেশ যাত্রায় হাওয়ালা যোগের অনুমান ইডির]
চিঠিতে স্পষ্ট ব্যাখ্যা নেই বলেই বাহিনীর বিষয়টা নিয়ে একটা গোলমাল তৈরি হয়। অনুব্রতকে কবে দিল্লি নিয়ে যেতে হবে, সেক্ষেত্রে কোনও সময় উল্লেখ করে দেয়নি হাই কোর্ট। বিচারক রাজেশ চক্রবর্তীও হাই কোর্টের নির্দেশকে উল্লেখ করে স্পষ্ট করে দেন, যত দ্রুত সম্ভব অনুব্রতকে দিল্লি নিয়ে যেতে হবে ইডিকে। ইতিমধ্যেই ডিসিপি সেন্ট্রাল এসএস কুলদীপ আইনি পরামর্শ নিতে আসানসোল সিবিআই আদালতের দ্বারস্থ হন। অনুব্রতর ফিটনেস সার্টিফিকেট পাওয়ার পরই জেল কর্তৃপক্ষ ইডি’কে দায়িত্ব হস্তান্তর করবে। অর্থাৎ আসানসোল সিবিআই আদালতের বিচারক জেল, কমিশনারেট ও ইডি’র মধ্যে দায়িত্ব ভাগ করে দিয়েছেন।
বিচারক জেল কর্তৃপক্ষকে নির্দেশ দিয়েছেন, এইচআইইউ অর্থাৎ গরু পাচার মামলায় তদন্তকারী আধিকারিক পঙ্কজ কুমারের সঙ্গে ফোন ও ই-মেল মারফত যোগাযোগ করতে। ইডি কোন হাসপাতালে কবে অনুব্রতর মেডিক্যাল করাতে চায়, তা যেন জেল কর্তৃপক্ষ পঙ্কজ কুমারের সঙ্গে কথা বলে জেনে নেয়। নির্দিষ্ট দিন, সময় জানাতে হবে। আইনজীবী সোমনাথ চট্টরাজ জানিয়েছেন, হাই কোর্ট যা নির্দেশ দিয়েছিল, তার বাইরে তো কোনও নির্দেশ যেতেই পারে না। সিবিআই আদালতের বিচারক পরিষ্কার করে দেন, জেল কর্তৃপক্ষ অনুব্রতর শারীরিক পরীক্ষা নিরীক্ষা করাবে। সেই সময় পর্যন্ত পুলিশ এসকর্ট দেবে। তারপর থেকে দায়িত্ব ইডি’র।