চন্দ্রশেখর চট্টোপাধ্যায়, আসানসোল: ফের ধসের কবলে আসানসোলে (Asansol) বরাকর খনি এলাকা। ধসে তলিয়ে গেল একটি বাড়ি। জানা গিয়েছে, বুধবার বেলার দিকে বরাকরের আরাডাঙা এলাকায় বেশ কিছু বাড়িতে ফাটল দেখা দেয়। তাতেই আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। একটি বাড়ির বেশ খানিকটা অংশ মাটির নিচে ঢুকে যায়। বাড়ির সমস্ত প্রয়োজনীয় জিনিসপত্রও ভূগর্ভে তলিয়ে গিয়েছে। এই অবস্থায় কার্যত অসহায় ওই পরিবারটি। আতঙ্কিত এলাকাবাসীকে নিরাপদে সরানোর ব্যবস্থা চলছে বলে খবর।
আরাডাঙা এলাকার ধস (landslide) কবলিত অংশ ‘নবিনগর’ বলে পরিচিত। এদিন ওই গলির মধ্যে থাকা বাড়িগুলির মধ্যে একটি অ্যাজবেস্টাসের বাড়ির প্রায় ৬ ফুট মাটির নীচে চলে যায়। সঙ্গে সঙ্গে জিনিসপত্র নিয়ে বাড়ির বাইরে বেরিয়ে আসেন বাসিন্দারা। তবে এখনও পর্যন্ত দুর্ঘটনায় কোনও প্রাণহানির খবর নেই। জানা গিয়েছে, মঙ্গলবার রাত থেকেই একটু একটু করে ফাটল দেখা দিচ্ছিল বাড়িটিতে। বুধবার সকালে উঠে দেখা যায়, ফাটল আরও বেড়েছে। ধস কবলিত হয়ে মাটির তলায় চলে গিয়েছে তার বেশ খানিকটা অংশ। রুকসানা পারভিনের নামে এক মহিলা এই বাড়ির বাসিন্দা। তাঁর দাবি, ঘরের আসবাব-সহ টাকাপয়সাও ধসের ফলে মাটির নীচে ঢুকে গেছে। ফলে তাঁরা বিপন্ন হয়ে পড়েছেন। ফাটল দেখা দিয়েছে এলাকার আরও বেশ কয়েকটি বাড়িতে।
[আরও পড়ুন: এবার ‘বেসুরো’ মালদহ জেলা তৃণমূলের কো-অর্ডিনেটর, মানভঞ্জনে মরিয়া দল]
খবর পেয়ে পুলিশ আরাডাঙার ধস কবলিত এলাকায় গিয়ে এলাকাটি ঘিরে ফেলে। নিরাপত্তার স্বার্থে দুর্ঘটনাগ্রস্ত এলাকাটির গলির মুখ আটকে দেওয়া হয়, যাতে আর কেউ ঢুকতে না পারেন সেখানে। তা সত্ত্বেও চাপা আতঙ্ক রয়েছে এলাকাবাসীর মধ্যে। আসানসোলের কোলিয়ারি এলাকা আগে থেকেই ধস কবলিত। অতীতে ব্রিটিশ আমলে এখানে কয়লাখনি ছিল। তখন অবৈজ্ঞানিকভাবে কয়লা খনন হয়। পরবর্তীকালেও সেই অবৈধ খনি ভরাটের পর এলাকার দখল নেন স্থানীয়রা। এলাকাটি সরকারি খাস জমি। সেখানে জনবসতি তৈরি হয়। উল্লেখ্য, ২০০৬ সাল থেকে ধসকবলিত ঘোষণা করা হয়েছে বরাকরকে। বরাকর এলাকাটি বিসিসিএল খনি অধ্যুষিত। পুনর্বাসন প্রক্রিয়া শেষ না হওয়ায় বরাকরবাসী এখনও এলাকা ছাড়েননি।