শুভদীপ রায়নন্দী, শিলিগুড়ি: করোনা (Coronavirus) নিয়ে সচেতনতা প্রচার, বৈঠক, COVID ওয়ারিয়র্সের সংবর্ধনা অনুষ্ঠানের নামে খাওয়াদাওয়ার আয়োজনে জনসমাগে বিপদ ডেকে আনছেন রাজ্যের মন্ত্রী ও করোনা মোকাবিলায় দায়িত্বপ্রাপ্তরাই। এই অভিযোগে এবার সুর চড়ালেন শিলিগুড়ি পুরনিগমের প্রশাসক তথা সিপিএম বিধায়ক অশোক ভট্টাচার্য। একটি বার্তায় তিনি ক্ষোভ উগরে দিয়ে লিখেছেন, ”দু’দিন আগে বিধাননগরে একটি বড় হোটেলে একটি সংস্থা কিছু ব্যক্তিকে সংবর্ধনার নামে বিরাট খাওয়াদাওয়ার আসর বসিয়েছিল। যার মূল উদ্যোক্তা শাসকদলের কয়েকজন নেতা। কীভাবে বড় বড় অফিসাররা এতে উপস্থিত ছিলেন? কারা এঁদের উপস্থিতির অনুমোদন দিলেন, এসব নিয়ে অনেকের মধ্যে প্রশ্ন উঠছে।” এই সংবর্ধনার আসর থেকে ক’জনের মধ্যে করোনা সংক্রমণ ছড়িয়েছে, সেই প্রশ্নও তুলেছেন তিনি।
দিন দুই আগে শিলিগুড়ি পুরনিগমের বিরোধী দলনেতার উদ্যোগে করোনাজয়ীদের একটি সংবর্ধনা সভার আয়োজন করা হয়েছিল। সেখানে খাওয়াদাওয়াও হয়। স্বভাবতই ভিড় একটু বেশি ছিল। স্বাস্থ্যবিধি সেখানে কতটা মান হয়েছে, তচা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন অশোক ভট্টাচার্য। এছাড়া তার আগে উত্তরবঙ্গে করোনা পরিস্থিতি সামাল দেওয়ার জন্য রাজ্য সরকারের তরফে দায়িত্বপ্রাপ্ত ওএসডি (OSD) সুশান্ত রায় উত্তরকন্যায় একটি বৈঠক ডেকেছিলেন। সেখানে হাজির ছিলেন উত্তরবঙ্গ উন্নয়নমন্ত্রী রবীন্দ্রনাথ ঘোষ-সহ একাধিক কর্তাব্যক্তিরা। মঙ্গলবার উত্তরবঙ্গে গিয়ে সাংগঠনিক বৈঠক করে এসেছেন মন্ত্রী অরূপ বিশ্বাস, সঙ্গে ছিলেন পর্যটন মন্ত্রী গৌতম দেবও।
[আরও পড়ুন: রবিবার পর্যন্ত প্রবল বৃষ্টির সম্ভাবনা, উত্তরবঙ্গের পাঁচ জেলায় বন্যার আশঙ্কা]
এসব ঘটনার উল্লেখ করে অশোক ভট্টাচার্য একাধিক প্রশ্ন তুলেছেন। বিধি অনুযায়ী এসব সমাবেশে উপস্থিত হওয়ায় যাঁদের কোয়ারেন্টাইনে যাওয়ার কথা, তাঁরা গিয়েছেন কিনা? সভা, বৈঠকের উদ্দেশ্য কি করোনা মোকাবিলা নাকি রাজনৈতিক? তাঁর অভিযোগ, কলকাতা থেকে একজন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক এসে নেতাদের সঙ্গে বৈঠক করে করোনা মোকাবিলার থেকে রাজনীতিটা বেশি ছিল বলে মনে হয়েছে। এভাবে যে শিলিগুড়িতে করোনা মোকাবিলা করা যাবে না, তাও স্পষ্ট করেছেন করোনাজয়ী এই নেতা।
[আরও পড়ুন: মিরিকের চা বাগানে ঘুরছে ব্ল্যাক প্যান্থার! স্থানীয়দের দাবিতে তোলপাড় সোশ্যাল মিডিয়া]
অশোকবাবুর মতে, এখন দরকার কলকাতা থেকে অন্তত ২৫জন ডাক্তারের একটি টিম উত্তরবঙ্গে পাঠানো। সেখানে করোনায় মৃত্যু বাড়ছে। মৃতেরা কেউ ৬৫ বছরের বেশি বয়স্ক নন বা তাঁদের কারও কো-মরবিডিটি ছিল না বলে দাবি করেছেন অশোত ভট্টাচার্য। এসব মৃত্যুর তদন্ত হওয়া উচিৎ বলেও মনে করেন তিনি। বর্ষীয়ান সিপিএম বিধায়কের মতে, এখন মানুষ রাজনীতি নয়, চিকিৎসা ও সেবা চায়। অশোকবাবু নিজেও করোনাকে জয় করে সোমবারই হাসপাতাল থেকে ফিরেছেন বাড়িতে। আপাতত স্বাস্থ্যবিধি মেনে কয়েকদিন হোম কোয়ারেন্টাইনে থাকবেন। বাড়িতে থেকেই তিনি কাজ করবেন বলে জানিয়েছিলেন। এদিন তাঁর এই অভিযোগ বার্তা পেয়ে অনেকে মনে করছেন, এভাবেই সক্রিয় থাকতে চাইছেন শিলিগুড়ি পুরনিগমের প্রশাসক।
The post সংবর্ধনার নামে ভুরিভোজ, স্বাস্থ্যবিধির দফারফা, অশোক ভট্টাচার্যের তোপের মুখে তৃণমূল appeared first on Sangbad Pratidin.