সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: যত দিন যাচ্ছে আরও দীর্ঘ হচ্ছে গাজায় থাকা পণবন্দি ঘরে ফেরার অপেক্ষা। গত ১১ মাস ধরে তাঁরা হামাসের ডেরায় বন্দি। যা নিয়ে প্রতিনিয়ত ইজরায়েলের বিভিন্ন শহরে বিক্ষোভ দেখাছেন হাজার হাজার মানুষ। এর মাঝেই ফের গাজা থেকে ৬ পণবন্দির দেহ উদ্ধার করেছে ইজরায়েলি ডিফেন্স ফোর্সেস (আইডিএফ)। তাদের অভিযোগ, ওই ৬ জনকে নৃশংসভাবে হত্যা করেছে হামাস জঙ্গিরা। এর পরই বিক্ষোভে উত্তাল হয়ে ওঠে ইজরায়েলের একাধিক শহর। এবার পণবন্দিদের মত্যু নিয়ে সকলের কাছে ক্ষমা চাইলেন প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু।
রবিবার দক্ষিণ গাজার রাফায় অভিযান চালাচ্ছিল আইডিএফ। সেখানকারই একটি টানেল থেকে উদ্ধার করা হয় কারমেল গ্যাট, ইডেন ইরেশালমি, হার্শ গোল্ডবার্গ-পলিন, আলেকজান্ডার লোবানভ ও আলমোগ সারুসি, অরি ড্যানিনো নামে ৬ জনের দেহ। এনিয়ে ইজরায়েলি সেনার মুখপাত্র রিয়ার অ্যাডমিরাল ড্যানিয়েল হাগারি জানান “আমাদের পৌঁছনোর আগেই হামাস জঙ্গিরা তাঁদের খুন করে ফেলে। খুব কম সময়ের মধ্যে এই ঘটনা ঘটেছে।” ইজরায়েলি সেনার তরফে এই খবর জানতে পেরে প্রতিবাদে উত্তাল হয়ে ওঠে জেরুজালেম, তেল আভিভের মতো একাধিক শহর। সকলেই প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহুকে দোষারোপ করতে থাকেন। তাঁর বিরুদ্ধে স্লোগান দেন।
[আরও পড়ুন: প্রথম ভারতীয় প্রধানমন্ত্রী হিসেবে ব্রুনেই পৌঁছলেন মোদি]
এই পরিস্থিতিতে সোমবার সাংবাদিক সম্মেলনে পণবন্দিদের মৃত্যু নিয়ে মুখ খোলেন নেতানিয়াহু। ক্ষমা প্রার্থনা করে তিনি বলেন, "আমি আপনাদের কাছে ক্ষমা চাইছি। আমি ওঁদের জীবিত ফিরিয়ে আনতে পারিনি। হামাসকে এর জন্য অনেক বড় মূল্য চোকাতে হবে।" এদিকে মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনও পণবন্দিদের মৃত্যু নিয়ে তোপ দেগেছেন নেতানিয়াহুকে। তিনি বলেছেন, "ইজরায়েলের প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহু পণবন্দির মুক্তি নিয়ে খুব একটা পদক্ষেপ করছেন না। এখন সময় এসেছে এই যুদ্ধে ইতি টানার।" সরকারের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ দেখানোর সময় বিক্ষোভকারীদেরও বলে শোনা যায়, “পণবন্দিদের নিয়ে প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহুর কোনও মাথাব্যাথাই নেই। এই মৃত্যুগুলোর জন্য শুধুমাত্রই দায়ী তিনিই।”
উল্লেখ্য, গত বছরের ৭ অক্টোবর ইজরায়েলের বুকে বেনজির হামলা চালায় প্যালেস্টাইনের জঙ্গি গোষ্ঠী হামাস। অপহরণ করে নিয়ে যায় প্রায় দুশোর উপর মানুষকে। তার পর থেকে পণবন্দি খুঁজতে ও হামাসকে সমূলে নিধন করতে গোটা গাজা ভূখণ্ড গুঁড়িয়ে দিচ্ছে তেল আভিভ। উত্তর থেকে দক্ষিণ তীব্র হামলা চলছে সর্বত্র। মাটির নিচে জঙ্গিদের টানেল বা সুড়ঙ্গগুলোতেও আক্রমণ শানানো হচ্ছে। গত জুন মাসে গাজার জাবালিয়া শহর-সহ একাধিক জায়গায় অভিযান চালিয়ে ৬ জনের দেহ উদ্ধার করেছিল আইডিএফ। পণবন্দিদের লুকিয়ে রাখা থাকতে পারে এমন জায়গায় চিরুনি তল্লাশি চালাচ্ছে ইজরায়েলি ডিফেন্স ফোর্সেস।