শুভঙ্কর বসু: ধৈর্য রাখার দাওয়াই কাজে এসেছে। বঙ্গে বিধানসভা নির্বাচনের (Assembly Polls 2021) পঞ্চম দফায় কেন্দ্রীয় বাহিনীর পারফরম্যান্সে খুশি নির্বাচন কমিশন। ষষ্ঠ দফার দফাতেও বাহিনী একই ফর্মুলায় কাজ করুক এমনটাই চাইছেন কর্তারা। এই দফায় উত্তর দিনাজপুর, নদিয়া, উত্তর ২৪ পরগনা এবং পূর্ব বর্ধমানের মোট ৪৩ টি কেন্দ্রের নিরাপত্তায় মোতায়েন থাকছে ৭৭৯ কোম্পানি কেন্দ্রীয় বাহিনী। কমিশন সূত্রে খবর, এই ৭৭৯ কোম্পানির মধ্যে আসানসোল-দুর্গাপুরে মোতায়েন থাকবে ১৪ কোম্পানি আধাসেনা। উত্তর 24 পরগনার বারাসাত এবং বনগাঁ মিলিয়ে থাকছে মোট ১২৮ কোম্পানি বাহিনী। বারাকপুরে রাখা হয়েছে ১০৭ কোম্পানি আধাফৌজ। বসিরহাটে ৪০ এবং বিধাননগরের আওতাভুক্ত এলাকায় থাকবে ৩ কোম্পানি বাহিনী। এছাড়াও উত্তর দিনাজপুরে ১৮১ কোম্পানি, কৃষ্ণনগরে ১৬৩ কোম্পানি এবং পূর্ব বর্ধমানের ৮ টি কেন্দ্রের নিরাপত্তায় মোতায়েন থাকছে ১৪৩ কোম্পানি বাহিনী।
কমিশন সূত্রে আরও খবর, এই দফায় সাড়ে ছ’শোর বেশি সেক্টর অফিস থাকছে। প্রতিটি সেক্টরে অফিসে একজন এসআই বা কিংবা এএসআই পদমর্যাদার পুলিশ আধিকারিক দায়িত্বে থাকবেন। সঙ্গে থাকবেন চারজন কনস্টেবল। পঞ্চম দফার সাফল্য ধরে রাখতে এই দফাতেও জওয়ানদের সতর্ক হয়ে কাজ করার নির্দেশ দিয়েছে কমিশন। এই দফাতে চার জেলায় যেসব আসনে ভোট হওয়ার কথা তার সবকটি স্পর্শকাতর ধরে এগোচ্ছে কমিশন। এই চার জেলাতে অতীতের ভোটে হিংসার নজির রয়েছে। সে কথা মাথায় রেখে জেলাগুলিকে যাবতীয় ব্যবস্থা সেরে ফেলতে বলা হয়েছে। এখন থেকেই চিহ্নিত অপরাধীদের জেলে ভরতে বলার পাশাপাশি হোটেল আবাসস্থল গুলিতে নিয়মিত তল্লাশি অভিযান জারি রাখতে বলা হয়েছে। এই দফায় উত্তর দিনাজপুরের চোপড়া, ইসলামপুর, গোয়ালপোখর, নদীয়ার করিমপুর, তেহট্ট নাকাশিপাড়া, উত্তর ২৪ পরগনার বারাকপুর, আমডাঙ্গা, ভাটপাড়া, বিজপুর, নৈহাটি, জগদ্দল, বাগদা স্বরূপনগর এবং বর্ধমানের মঙ্গলকোট কেতুগ্রাম, ভাতারের মত অতি স্পর্শকাতর কেন্দ্রে ভোট। সে কথা মাথায় রেখেই সংশ্লিষ্ট জেলা গুলিকে যাবতীয় ব্যবস্থা সেরে ফেলতে বলা হয়েছে।
[আরও পড়ুন: ভোট চলাকালীন ফের রদবদল রাজ্য পুলিশে, বীরভূমের পুলিশ সুপারের দায়িত্বে নগেন্দ্র ত্রিপাঠী]
সূত্রের খবর, বিশেষত উত্তর ২৪ পরগনায় যেকোনো অবাঞ্ছিত ঘটনা ঠেকাতে সেক্টর অফিস কুইক রেসপন্স টিম, হেভি রেডিও ফ্লাইং ভেহিকেল টিমকে বিশেষ ভাবে তৈরি থাকতে বলা হয়েছে। দিন কয়েক আগেই বারাসত ও বারাকপুরের প্রশাসনিক আধিকারিকদের সঙ্গে বৈঠক করেন রাজ্যে নিযুক্ত বিশেষ পুলিশ পর্যবেক্ষক বিবেক দুবে। বেশ কয়েক দিন ধরে বারাকপুর এলাকা অশান্ত। গত লোকসভা নির্বাচনেই ১৪৪ ধারায় ভাটপাড়ায় পুননির্বাচন সারতে হয়েছিল কমিশনকে। তাই সুপার সেনসিটিভ এই সমস্ত এলাকাগুলিকে এখন থেকেই নিরাপত্তা মোড়কে করে ফেলতে বলা হয়েছে। পাশাপাশি পঞ্চম দফার মতোই এই দফাতেও ভোটের দিন ১৪৪ ধারা কার্যকর করতে রাজ্য পুলিশকে বিশেষ ভূমিকা নিতে নির্দেশ দিয়েছে কমিশন। কমিশনের স্পষ্ট নির্দেশ ১৪৪ ধারা না মানলে বিধি অনুযায়ী ভারতীয় দণ্ডবিধির ১৮৮ ধারা ও ফৌজদারি আইনের ১৫১ ধারায় সংশ্লিষ্ট আইনভঙ্গকারীকে জেলে পুরতে হবে।