shono
Advertisement

হাত বাড়িয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী, SSKM হাসপাতালে শ্রবণক্ষমতা ফিরবে ৫০ শিশুর

দ্রুতই তাদের অস্ত্রোপচার হবে বলে খবর।
Posted: 04:10 PM Mar 05, 2021Updated: 04:10 PM Mar 05, 2021

স্টাফ রিপোর্টার: জন্ম থেকে কথা বলে না। ডাকলে চেয়ে থাকে ফ্যালফ্যাল করে। প্রথমটায় বাড়ির লোক ভাবত, মুখে কথা ফোটেনি হয়তো। পরে জানা গেল, শ্রবণেন্দ্রিয় খারাপ। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের (CM Mamata Banerjee) সহায়তায় এমনই পঞ্চাশ শিশু শ্রবণশক্তি ফিরে পাওয়ার অপেক্ষায়। রাজ্যের অন্যতম সুপার স্পেশ্যালিটি হাসপাতাল এসএসকেএমে (SSKM) তাদের নাম নথিভুক্ত হয়ে গিয়েছে। অস্ত্রোপচারের অপেক্ষায়। তারপরই ফের শব্দ পৌঁছবে তাদের কানে। উপভোগ করতে পারবে কথা, গান, সুর।

Advertisement

এসএসকেএম হাসপাতালের ইনস্টিটিউট অব ওটোরাইনোল্যারিঙ্গোলজি হেড অ্যান্ড নেক সার্জারি বিভাগের চিকিৎসক ডা. অরিন্দম দাস জানিয়েছেন, যে পদ্ধতিতে শিশুদের শ্রবণ ক্ষমতা ফিরিয়ে আনা হচ্ছে, তার নাম ককলিয়ার ইমপ্ল্যান্ট। গত ৫ বছরে ৬৭ শিশুর ককলিয়ার ইমপ্ল্যান্ট হয়েছে এসএসকেএমে।

এদের সকলের যে শ্রবণেন্দ্রিয় খারাপ, তা প্রথমটায় ধরতেই পারেননি অভিভাবকরা। এহেন উদাসীনতা নিয়ে সাবধান করেছেন এসএসকেএম হাসপাতালের ইনস্টিটিউট অব ওটোরাইনোল্যারিঙ্গোলজি হেড অ্যান্ড নেক সার্জারি বিভাগের বিভাগীয় প্রধান ডা. অরুণাভ সেনগুপ্ত। তাঁর কথায়, পরিসংখ্যান অনুযায়ী এ রাজ্যের ১০০ জন শিশুর মধ্যে ৪ জন স্বাভাবিকভাবে শুনতে পায় না। অথচ বাবা-মা বা পরিবারের অন্যরা সে বিষয়ে সচেতন নন। ফলে বাচ্চা দ্রুত কথা বলতে শেখে না। অনেক শিশুর জন্মের সময় শ্রবণশক্তি স্বাভাবিক থাকলেও তিন-চার বছর বয়সে মেনিনজাইটিস, টাইফয়েড বা এনসেফেলাইটিস হলেও শ্রবণক্ষমতা কমে যায়।

[আরও পড়ুন: ২৫ শতাংশের হৃদযন্ত্রে সমস্যা, ভোগেন উচ্চ রক্তচাপেও, নয়া সমীক্ষায় বাড়ছে উদ্বেগ]

মন থেকে চাইলেও এই ইমপ্ল্যান্টের সুবিধা নিতে পারে না নিম্নবিত্ত পরিবার। ইমপ্ল্যান্টে কানের উপরে বসানো হয় একটি যন্ত্র। তার দামই ৬ লক্ষ টাকা। বেসরকারি হাসপাতালে সম্পূর্ণ ককলিয়ার ইমপ্ল্যান্টের খরচ ১৪ লক্ষ টাকার মতো। জেলার প্রান্তিক পরিবারের পক্ষে সে অস্ত্রোপচার করা অসম্ভব। তাঁদের জন্যই সরকারি পরিষেবায় বিনামূল্যে হচ্ছে এই অস্ত্রোপচার। ডা. সেনগুপ্ত জানিয়েছেন, মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সহযোগিতায় এসএসকেএম হাসপাতালে বিনামূল্যে শুরু হয়েছে এই অস্ত্রোপচার। টাকা আসছে কেন্দ্রীয় সরকারের এডিআইপি বা ‘অ্যাসিস্ট্যান্ট টু ডিস্যাবেলড পারসন ফর পারচেজিং অ্যাপলায়েন্সেস’ স্কিম থেকেও।

[আরও পড়ুন: মদের মতোই মিষ্টি ক্ষতিকর! কী বলছেন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক?]

গত পাঁচ বছর ধরে এ ধরনের অস্ত্রোপচারে ৬৭ জনের শ্রবণক্ষমতা ফিরে এসেছে। দ্রুত টাকা বরাদ্দ হলেই লাইনে থাকা পঞ্চাশ শিশুরও অস্ত্রোপচার শুরু হবে। ককলিয়ার ইমপ্ল্যান্ট আদতে ছোট্ট একটা ইলেকট্রনিক ডিভাইস। যার একটি অংশ থাকে কানের ভিতরে। অন্যটি বাইরে। এই ডিভাইস ককলিয়ার নার্ভকে উদ্দীপ্ত করে তোলে। তাতেই জেগে ওঠে শব্দের অনুভূতি। কোন পদ্ধতিতে হয় অস্ত্রোপচার?

এসএসকেএমের চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, জেনারেল অ্যানাস্থেশিয়া করেই ককলিয়ার ইমপ্ল্যান্ট সার্জারি করা হয়। মাস্টয়েড হাড়কে খোলার জন্য প্রথমে কানের পিছনে একটা ছিদ্র করা হয়। এরপর ককলিয়াকে পাওয়ার জন্য মুখের স্নায়ুকে শনাক্ত করে মাস্টয়েড হাড় ও মুখের স্নায়ুর মাঝখানে ফাঁকা জায়গা তৈরি করা হয়। ককলিয়া খুলে গেলেই এর মধ্যে ইমপ্ল্যান্ট ইলেকট্রোড প্রবেশ করিয়ে দেওয়া হয়। কানের পিছনে ত্বকের নিচে থাকে রিসিভার। যা আদতে একটি ইলেকট্রিক ডিভাইস। সেটা বসিয়েই ছিদ্র বন্ধ করে দেওয়া হয়। মাত্র ২ থেকে ৪ ঘণ্টার অস্ত্রোপচার শেষ হলেই বুলি ফোটে শিশুর মুখে। শুধু এ রাজ্যে নয়, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার হিসাবে বিশ্বের মোট জনসংখ্যার প্রায় ৫% মানুষের শ্রবণক্ষমতায় ঘাটতি রয়েছে। সংখ্যার হিসাবে যা প্রায় ৪৬ কোটি ৬০ লক্ষ। বিশেষজ্ঞদের আশঙ্কা, আগামী ৩০ বছরে অর্থাৎ ২০৫০ সালে সংখ্যাটা বেড়ে দাঁড়াবে ৯০ কোটিতে।

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

Advertisement
toolbarHome ই পেপার toolbarup অলিম্পিক`২৪ toolbarvideo শোনো toolbarshorts রোববার