সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: মড়ার উপর খাঁড়ার ঘা ইটালিতে। করোনা ভাইরাসের ক্রমশই ভয়াবহ আকার নিচ্ছে সেদেশে। বাড়ছে মৃতের সংখ্যা। তার উপর সেখানকার এক সংশোধনাগারে বন্দিদের মধ্যে মাদক নিয়ে সংঘর্ষের জেরে মৃত্যু হল ৬ জনের। আহত হয়েছে বেশ কয়েকজন। ঘটনায় মিলানের সান ভিত্তোর জেলের অশান্তি একেবারে দাবানলের মতো ছড়িয়ে পড়েছে দেশের অন্যান্য সংশোধনাগারে।
নোভেল করোনা ভাইরাস চিনের বাইরে ইটালিকে সবচেয়ে বেশি কাবু করেছে। বেড়েই চলেছে সংক্রমণ ও মৃত্যুর সংখ্যা। মোকাবিলার জন্য প্রায় এক চতুর্থাংশ দেশবাসীকে প্রায় একঘরে করে রেখেছে প্রশাসন। জেলগুলিতে সংক্রমণ যাতে না ছড়িয়ে পড়ে, তার জন্য সম্প্রতি বন্দিদের পরিবারের সঙ্গে সাক্ষাৎ বিজ্ঞপ্তি জারি করে বন্ধ রাখা হয়েছে। পাশাপাশি, মোবাইল ফোনে কথা বলার ক্ষেত্রেও বিধিনিষেধ আরোপ করা হয়েছে। আর তাতেই ক্ষেপে গিয়েছেন বন্দিরা। সোমবার নিজেদের সেলে বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করে তারা।
[আরও পড়ুন: ভিড় মেট্রো স্টেশনে উদ্দাম যৌনতায় মাতলেন যুগল! ভাইরাল ভিডিও]
পাশাপাশি, মাদক নিয়ে সেখানকার বন্দিদের মধ্যে বরাবরের ঝগড়া, হাতাহাতি আরও চরমে পৌঁছায়। সূত্রের খবর, করোনা আতঙ্কে ইটালির অর্ধেকের বেশি শহরকে লকডাউন করে দেওয়ায় জেলে ঠিকমত মাদক সরবরাহ হচ্ছিল না। তা নিয়ে নিজেদের মধ্যেই ঝামেলায় জড়িয়ে পড়ে বন্দিরা। সেল ভেঙে কেউ কেউ বেরিয়ে সংশোধনাগারের ছাদে উঠে বিক্ষোভ দেখাতে থাকে। জেলের ভিতরে অফিসে আগুন লাগিয়ে দেওয়া হয় বলে অভিযোগ। মুহূর্তের মধ্যে রণক্ষেত্র হয়ে ওঠে মিলানের সান ভিত্তোর সংশোধনাগার। অভিযোগ, তাতে মদত দেয় তাদের আত্মীয়রা, যারা জেলের ভিতরে ঢুকে দেখা করার সুযোগ পাচ্ছে না।
এমনিতে ইটালি জেলখানা অতিরিক্ত কয়েদিতে পরিপূর্ণ। কোথাও ১২০ শতাংশ, কোনও জেল আবার ১৮০ শতাংশ অর্থাৎ জায়গার তুলনায় অতিরিক্ত বন্দিতে পরিপূর্ণ। যা মানবাধিকার লঙ্ঘনের শামিল বলে অভিযোগ তুলেছেন সমাজকর্মীরা। এবারের ঘটনাতেও বন্দিদের পক্ষের আইনজীবী অ্যালেসিও অভিযোগ তুলেছেন, এত ভিড়ে ঠাসা একেকটা সেল, যা অস্বাস্থ্যকর এবং এখানেই সবচেয়ে করোনা সংক্রমণের আশঙ্কা রয়েছে। ফলে তাদের আরও সাবধানে, আরও নজরদারির মধ্যে রাখা উচিত ছিল প্রশাসনের। তাহলে এত বড় ঘটনা ঘটত না বলে দাবি তাঁর। মানবাধিকার সংগঠনগুলির আরও অভিযোগ, জেলের ভিতরে যখন এই ধুন্ধুমার চলছে, তখন প্রশাসনিক কর্তারা সেখানে উপস্থিতই নেই।
[আরও পড়ুন: করোনা ঠেকাতে অ্যালকোহল সেবন, ইরানে বিষক্রিয়ায় প্রাণ গেল ২৭ জনের]
এই জেলের অশান্তির খবর অগ্নিস্ফুলিঙ্গের মতো ছড়িয়ে যায়। অন্যান্য সংশোধনাগারের বন্দিরাও বিক্ষুব্ধ হয়ে ওঠে। করোনা সামলাতে এই লকডাউনের জেরে বিচারাধীন বন্দিদের ছাড়া পাওয়ার বিষয়টিও পিছিয়ে যাচ্ছে। কারণ, আদালত বন্ধ। ফলে ক্ষোভ চরমে উঠেছে তাদের। তার মাঝে পড়েই ৬ জনকে প্রাণ হারাতে হল। করোনা পরিস্থিতি নাকি সংশোধনাগারের অশান্তি – কোনটা সামলাবে, তা নিয়ে চিন্তিত ইটালির কন্তে প্রশাসন।
The post মারণ জীবাণু সংক্রমণের মাঝেই ইটালির জেলে বিক্ষোভ, সংঘর্ষে মৃত ৬ appeared first on Sangbad Pratidin.