সুকুমার সরকার, ঢাকা: শেখ হাসিনার সরকারকে বদনাম করতে হিন্দু সম্প্রদায়ের উপর হামলার চক্রান্ত হচ্ছে। জাতীয় নির্বাচনের আগে শুধুমাত্র রাজনৈতিক ফায়দা লুটতেই এই পরিকল্পনা করেছে একটি অশুভ চক্র। এমনটাই বিস্ফোরক অভিযোগ করেছেন আওয়ামি লিগের সাধারণ সম্পাদক তথা সড়ক পরিবহণ ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের।
শারদীয় দুর্গাপুজোর মহাসপ্তমীর দিনি রবিবার রাজধানী ঢাকার রামকৃষ্ণ মিশন পূজামণ্ডপ পরিদর্শনে যান ওবায়দুল কাদের। দুর্গোৎসবের সময় সবাইকে সতর্ক থাকার আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, “একটি অশুভ চক্র বোঝাতে চায় আওয়ামি লিগের হাতে সংখ্যালঘুরা নিরাপদ নয়। পুজো কমিটি আমাকে বলেছে সাম্প্রদায়িক হামলার বিচার হয় না। কেন বিচার হবে না! বাংলাদেশে কত অপরাধীর বিচার শেখ হাসিনা করেছেন। এমনকি নিজের দলের লোকেরাও জেলে আছেন। হিন্দুদের মন্দিরে, বাড়ি-ঘরে-মণ্ডপে হামলা হলে দুষ্কৃতীদের ক্ষমা নেই।”
[আরও পড়ুন: বাংলাদেশ মানবাধিকার রক্ষা করে, কিন্তু রোহিঙ্গাদের যেতে হবে, আমেরিকায় বার্তা হাসিনার]
আওয়ামি লিগের সাধারণ সম্পাদক আরও বলেন, “সামনে জাতীয় নির্বাচন। একটি অশুভ চক্র হিন্দুদের ওপর হামলা চালিয়ে ভারত সরকারকে জানিয়ে দিতে চায়, কাজটা আওয়ামি লিগ করেছে। ওই অশুভ শক্তির ব্যাপারে সতর্ক থাকতে হবে।” বিএনপির উদ্দেশে ওবায়দুল কাদের বলেন, “রাজনীতি আমরা করব, কিন্তু এই উৎসবে কোনও রাজনীতি নেই। শান্তিপূর্ণ নির্বাচন চান, শান্তিপূর্ণভাবে ধর্মকর্ম করতে দিন। সংলাপ করছেন করুন, সেটা আপনাদের নিজেদের ব্যাপার। দুর্গোৎসব দশমী পর্যন্ত শান্তিপূর্ণভাবে সম্পন্ন করার ব্যাপারে সরকারি দলের পাশাপাশি বিরোধী দল আপনাদেরও ভূমিকা আছে। আপনারাও দায়িত্বশীল ভূমিকা পালন করবেন।”
হিন্দু ধর্মালম্বীদের অভয় দিয়ে কাদের বলেন, ‘আপনারা ভয় পাবেন না। আতঙ্কিত হবেন না। এবার আমরা প্রস্তুত আছি। আওয়ামি লিগের নেতাকর্মীরা সতর্ক আছে। আপনারও কোনও চিন্তা করবেন না। শেখ হাসিনার সরকার একাধারে ১৩ বছর ক্ষমতায় আছে। এই ১৩ বছরে ১৩ বার ব্যাপক ঘটা করে দুর্গাপুজো হয়েছে। ৩০ হাজার পুজোমণ্ডপ হয়েছে। এবার ৩২ হাজারের বেশি পুজোমণ্ডপ হয়েছে। আপনাদের স্মরণ করিয়ে দিতে চাই এই ১৩ বছরে মাত্র একবার দুর্গাপুজোয় হিংসার ঘটনা হয়েছে। সাম্প্রদায়িকতার টার্গেট হয়েছে। দুর্বৃত্তদের টার্গেট হয়েছে। সনাতন ধর্মাবলম্বীদের বাড়িঘর টার্গেট হয়েছে। মন্দির টার্গেট হয়েছে। তাদের ঘরবাড়ি দোকানপাটে পর্যন্ত হামলা হয়েছে। আমি বলতে চাই একাধারে ১১ বছর দুর্গাপুজো নির্বিঘ্নে হয়েছে। কোনো শান্তি বিনষ্ট হয়নি। কিন্তু গতবার দুর্ভাগ্যজনক কিছু ঘটনা ঘটে গেছে।”
উল্লেখ্য, গত বছর বাংলাদেশে (Bangladesh) দুর্গাপুজোর মণ্ডপে একের পর এক হামলা চালায় মৌলবাদীরা। তারপর দেশজুড়ে শুরু হয় বিক্ষোভ। সংখ্যালঘুদের পাশে দাঁড়িয়ে নিরাপত্তার আশ্বাস দেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। কয়েকদিন আগেও ঢাকায় হাসিনা জন্মাষ্টমী উদযাপন পরিষদ এবং বাংলাদেশ পুজো উদযাপন পরিষদের নেতাদের সঙ্গে শুভেচ্ছা বিনিময় করেন।