সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: সরকারি চাকরিতে কোটা সংস্কারের দাবিতে উত্তাল বাংলাদেশ। সরকারের বিরুদ্ধে আন্দোলনে সামিল শয়ে শয়ে পড়ুয়া। বিক্ষোভে জ্বলছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়-সহ অন্যান্য শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান। আন্দোলনকারীদের সঙ্গে সংঘর্ষে জড়িয়েছে ছাত্রলিগের সদস্যরা। এর জেরে এখনও পর্যন্ত প্রাণ গিয়েছে ৬ জনের। এই অগ্নিগর্ভ পরিস্থিতিতে সেদেশে থাকা ভারতীয়দের জন্য উদ্বিগ্ন নয়াদিল্লি। নাগরিকদের বাড়ির বাইরে না বেরনোর সতর্কবার্তা ভারতের।
বৃহস্পতিবার গোটা বাংলাদেশে কমপ্লিট শাটডাউন (সর্বাত্মক অবরোধ) কর্মসূচি ঘোষণা করেছেন আন্দোলনকারীরা। অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে দেশের সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান। আতঙ্কে হোস্টেল ছাড়তে শুরু করেছেন পড়ুয়ারা। এই পরিস্থিতিতে বাংলাদেশে থাকা ভারতীয়দের জন্য নির্দেশিকা জারি করেছে নয়াদিল্লি। নির্দেশিকায় বলা হয়েছে, 'বাংলাদেশের পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করে সেখানে থাকা ভারতীয়দের নিরাপত্তার কথা মাথায় রেখে কয়েকটি নির্দেশ দেওয়া হচ্ছে। প্রয়োজন না পড়লে বাড়ির বাইরে বেরবেন না। ভ্রমণ এড়িয়ে চলুন। যেকোনও সাহায্যের জন্য ভারতীয় দূতাবাসের সঙ্গে যোগাযোগ করুন।' ভারতীয়দের জন্য এমারজেন্সি নম্বরও চালু করা হয়েছে।
গতকাল দিনভর উত্তপ্ত ছিল ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস। সকাল থেকেই ক্যাম্পাসে মোড়ে মোড়ে টহল দিচ্ছিল আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। দুপুর থেকে পুলিশ, র্যাব, বিজিবির বিপুলসংখ্যক সদস্য সাঁজোয়া গাড়ি নিয়ে ক্যাম্পাসে জড়ো হন। শিক্ষার্থীরা পূর্বঘোষিত কফিনমিছিল শুরু করা মাত্র হামলা করে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী বলে অভিযোগ। এসময় দুই পাশ থেকে সম্মিলিত আক্রমণের মধ্যে পড়ে আহত হন অন্তত ২০ শিক্ষার্থী। তাঁদের মধ্যে বেশ কয়েকজন মেয়েও ছিল। আহত হয়েছেন ১০ জন সাংবাদিকও।
এছাড়া রাতের ঢাকায় ফের নতুন করে অশান্তি ছড়ায়। মেয়র হানিফ ফ্লাইওভারের টোল প্লাজায় আগুন লাগিয়ে দেওয়া হয়। কাঠ ও টায়ার জ্বালিয়ে তুমুল বিক্ষোভ দেখান আন্দোলনকারীরা। অভিযোগ, শিক্ষার্থীদের হঠাতে কাঁদানে গ্যাসের শেল ফাটায় পুলিশ। পালটা আন্দোলনকারীরা ইট-পাটকেল ছুঁড়তে শুরু করেন। এর পর কেন্দ্রীয় শহিদ মিনার, ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল ও চানখারপুল মোড় পর্যন্ত দফায় দফায় পুলিশের সঙ্গে আন্দোলনকারীরা সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে। প্রায় তিরিশ মিনিট ধরে গোটা এলাকায় চরম উত্তেজনার চলে।