সুকুমার সরকার, ঢাকা: গত ৭ জানুয়ারি বাংলাদেশে অনুষ্ঠিত হয়েছিল সাধারণ নির্বাচন। যা রুখে দেওয়ার চেষ্টা করেছিল বিএনপিস-সহ সমমনা বিরোধী দলগুলো। কিন্তু তাদের কোনও প্রচেষ্টাই সফল হয়নি। অবাধ ও সুষ্ঠু ভোটপ্রক্রিয়া হচ্ছে না বলে হাসিনা সরকারকে তোপ দেগেছিল আমেরিকাস-সহ পশ্চিমের বেশ কয়েকটি দেশ। কিন্তু বিপুল সংখ্যা গরিষ্ঠতা নিয়ে ক্ষমতায় ফিরেছে আওয়মি লিগ। ফের প্রধানমন্ত্রীর আসনে বসেছেন শেখ হাসিনা। এই নির্বাচনে ঢাকার পাশে ছিল ভারত। যা নিয়ে আরও একবার নয়াদিল্লিকে ধন্যবাদ জানালেন আওয়ামি লিগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের। পাশাপাশি সনাতন ধর্মাবলম্বীদের সংখ্যালঘু না ভাবার বার্তাও দেওয়া হয়েছে দলের পক্ষ থেকে।
শনিবার ঢাকার ঢাকার ঢাকেশ্বরী জাতীয় মন্দিরে বাংলাদেশ পূজা উদযাপন পরিষদের দ্বিবার্ষিক সম্মেলনে যোগ দিয়েছিলেন আওয়ামি লিগের সাধারণ সম্পাদক তথা সড়ক পরিবহণ ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের। সেখানেই তিনি বলেন, “ভারত পাশে ছিল বলেই এবার বাংলাদেশের দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনে বিশ্বের অশুভ বড় রাষ্ট্রগুলো হস্তক্ষেপ করতে পারেনি।” এই সম্মেলনের আয়োজকদের উদ্দেশে তিনি বলেন, “আপনারা হীনমন্যতায় ভুগবেন না। নিজেদের সংখ্যালঘু ভাবনাটাই একটা দাসত্বের শিকল। এই দাসত্বের শিকল আপনাদেরই ভেঙে ফেলতে হবে।”
[আরও পড়ুন: দুমাসেই ঢাকায় ৪০% বাড়ল কিউলেক্স মশা, ডেঙ্গুর তাণ্ডবের মাঝেই নতুন আতঙ্ক বাংলাদেশে]
তিনি আরও বলেন, “মুসলমানের ভোটের চেয়ে আপনার ভোটের কি মূল্য কম? কোনও পার্থক্য আছে কি? তাহলে কেন নিজেকে সংখ্যালঘু ভাববেন? এই দেশের স্বাধীনতা সংগ্রামে মুসলমানদের পাশে হিন্দু, বৌদ্ধ, খ্রিস্টান সকলের অবদান আছে। কারও অবদান কম নয়।” ঐক্যবদ্ধ ভাবে প্রতিরোধ করতে হবে জানিয়ে কাদের বলেন, “যারা সনাতন ধর্মাবলম্বীদের সম্পদ, ধর্মীয় মন্দির এই সব স্পর্শকাতর বিষয়ে তাঁদের মনে কষ্ট দেয়, মন ভেঙ্গে ফেলে এই সব লোকেরা রাজনৈতিক পরিচয় দিয়েও থাকে, তাদের আসল পরিচয় দুর্বৃত্ত। এরাই হিন্দুদের বাড়ি দখল করে। মন্দির ভাঙচুর করে। এরা আমাদের সকলের অভিন্ন শত্রু। এদের বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ ভাবে প্রতিরোধ করতে হবে।”
ভারতের সঙ্গে সম্পর্ক প্রসঙ্গে আওয়ামি লিগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, ৭৫ সালে বঙ্গবন্ধুকে হত্যার পর একটি অশুভ শক্তি ক্ষমতায় বসেছিল। একুশ বছর তারা শাসন করেছিল। এই সময় তারা দুর্দিনের বন্ধু ভারতের সঙ্গে চরম বৈরিতা সৃষ্টি করেছিল। যে কারণে দ্বিপাক্ষীয়ভাবে আলোচনা করে কোনও সমস্যার সমাধান করা যায়নি। সম্পর্ক যদি ভালো থাকে তাহলে আলোচনার টেবিলে যে কোনও জটিল সমস্যা নিয়ে আলোচনা করতে পারি, সমাধান করতে পারি। যেমন সীমান্ত সমস্যা বাস্তবায়ন। এখন সম্পর্ক ভালো বলেই ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সঙ্গে আলোচনা করে ৬৮ বছরের সমস্যার শান্তিপূর্ণ সমাধান করেছি আমরা। আমি এই কৃতিত্ব দেব প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও নরেন্দ্র মোদিকে।” এদিন বাংলাদেশ পূজা উদযাপন পরিষদের দ্বি-বার্ষিক সম্মেলন উদ্বোধন করেন বাংলাদেশের ভারতীয় হাইকমিশনার প্রণয় কুমার ভার্মা।