সুকুমার সরকার, ঢাকা: পদ্মা নদীতে শুধু ইলিশই নয়, বিপুলভাবে মিলছে আর এক স্বাদের মাছ পাঙাশ। পদ্মা নদীতে দেদার পাঙাশ ধরছেন মৎস্যজীবীরা। আর পাইকারি বাজারে এই মাছ বিক্রি করেই তাঁদের লক্ষ লক্ষ আয় হচ্ছে। মৎস্যজীবীরা বলছেন, একসঙ্গে এই বিপুল সংখ্যক পাঙাশ কখনও দেখেননি পদ্মাপাড়বাসী।
জানা গিয়েছে, বাংলাদেশের দক্ষিণের জেলা মাদারীপুর ও শরীয়তপুরের মাওয়া, নড়িয়ার চরআত্রা, নওপাড়া ও ঘরিসার এবং ভেদরগঞ্জের কাচিকাটা, তারাবুনিয়া ও চরভাগা এলাকায় পদ্মা নদীতে মৎস্যজীবীরা পাঙাশ মাছ ধরছেন। সারা রাত মাছ ধরে সকালে তা বিক্রি করছেন নড়িয়ার সুরেশ্বর মাছের পাইকারি বাজারে। সোমবার সুরেশ্বর মাছ বাজারে গিয়ে দেখা যায়, অন্তত ১৫০টি নৌকায় পাঙাশ মাছ নিয়ে এসেছেন মৎস্যজীবীরা। প্রতিটি পাঙাশের ওজন ৫ থেকে ১২ কেজির মতো। এই বাজারের ব্যবসায়ীরা ওই পাঙাশ ঢাকা, মুন্সিগঞ্জ, নারায়ণগঞ্জ ও মাদারীপুরের বিভিন্ন পাইকারের কাছে বিক্রি করছেন। প্রতি কেজি মাছ বিক্রি করা হচ্ছে ৬৫০ থেকে ৮০০ টাকা দামে। বাজারের ৩০টি পাইকারি দোকানে এসব মাছ বিকচ্ছে।
ভেদরগঞ্জের কাচিকাটা ইউনিয়নের বোরোকাঠির মৎস্যজীবী মোবারক হোসেন ২৫ বছর ধরে পদ্মা নদীতে মাছ ধরছেন। তিনি বলেন, কখনও বছরজুড়ে মাছ শিকার করে ৫০ হাজার টাকা সঞ্চয় করতে পারেননি। অথচ গত এক সপ্তাহে তিনি পাঙাশ মাছ বিক্রি করে ৪ লক্ষ টাকা সঞ্চয় করেছেন। তাঁর কথায়, "২৫ বছর ধরে পদ্মায় মাছ ধরি। কখনও এত পাঙাশ মাছ এক সঙ্গে দেখিনি।’এদিকে, অনেক মৎস্যজীবী পাঙাশ মাছ নৌকার সঙ্গে বেঁধে রাখেন। বেশি দামের আশায় জ্যান্ত পাঙাশ বাজারে নিয়ে যান বিক্রির জন্য। নড়িয়ার নওপাড়া ইউনিয়নের মুন্সিকান্দি এলাকার শাহাদাৎ হোসেন জানান, মা ইলিশ রক্ষায় মাছ ধরার উপর নিষেধাজ্ঞার কারণে তিনি টানা ২২ দিন নদীতে যাননি। ৪ নভেম্বর থেকে মাছ ধরতে যাচ্ছেন। ইলিশের পরিবর্তে এবার তাঁরা প্রচুর পাঙাশ মাছ পাচ্ছেন। গত সাত দিনে তিনি ৬ লক্ষ টাকার মাছ ধরেছেন। খরচ হয়েছে ১ লক্ষ টাকা। তিনি সঞ্চয় করেছেন ৫ লক্ষ। এক সপ্তাহ ধরে প্রতিদিন ১ হাজার ৫০০ থেকে ২ হাজার পাঙাশ মাছ নিয়ে আসছেন মৎস্যজীবীরা।