সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: বিতর্কিত নাগর্নো-কারাবাখ অঞ্চলের দখল নিয়ে আর্মেনিয়ার বিরুদ্ধে ‘জয়ের’ আনন্দে মাতোয়ারা আজারবাইজান (Azerbaijan)। বৃহস্পতিবার এই সাফল্যের জন্য দেশটির রাজধানী বাকুতে অনুষ্ঠিত হয় মিলিটারি প্যারেড। ওই অনুষ্ঠানে শামিল হন তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রেসেপ তায়েপ এরদোগান।
[আরও পড়ুন: সিরিয়ায় আত্মঘাতী জঙ্গি হামলা, তুরস্কের তিন সেনা-সহ মৃত কমপক্ষে ১৬]
এদিকে, আজারবাইজানে উৎসব হলেও আর্মেনিয়ায় (Armenia) শুরু হয়েছে তুমুল বিক্ষোভ। সরকারের বিরুদ্ধে রাস্তায় নেমে প্রদর্শন শুরু করেছে হাজার হাজার মানুষ। তাঁদের দাবি, বাকুর কাছে আত্মসমর্পণ করেছে শাসকদল। উল্লেখ্য, বিতর্কিত নাগর্নো-কারাবাখ অঞ্চলের দখল নিয়ে গত সেপ্টেম্বর মাসের ২৭ তারিখ থেকে প্রায় দু’মাস ধরে লড়াইয়ের পর রুশ মধ্যস্থতায় শান্তিচুক্তি স্বাক্ষর করে আজারবাইজান ও আর্মেনিয়া। লড়াইয়ে মৃত্যু হয় প্রায় আড়াই হাজারেরও বেশি আর্মেনীয় সৈনিকের। সব মিলিয়ে প্রায় ৫ হাজার মানুষ প্রাণ হারান বলে খবর। তবে শান্তিচুক্তির পর যুদ্ধ থামলেও আর্মেনিয়ার শুরু হয়েছে তুমুল বিক্ষোভ। শান্তিচুক্তিতে আজারবাইজানের (Azerbaijan) শর্ত মেনে কার্যত আত্মসমর্পণ করার অভিযোগে উঠেছে প্রধানমন্ত্রী পাশিনিয়ানের বিরুদ্ধে। দেশটির রাজধানী ইয়েরেভানের রাস্তায় নেমে বিক্ষোভ দেখায় হাজার হাজর মানুষ। সরকারি দপ্তরে ভাঙচুর চালায় উত্তেজিত জনতা। আর্মেনিয়ার সংসদ ভবনে ঢুকেও বিক্ষোভ প্রদর্শন করে বিক্ষুব্ধ জনতা। পরিস্থিতি এমন জায়গায় পৌঁছে যায় যে, জনরোষে প্রবল মার খেয়ে জ্ঞান হারিয়ে ফেলেন আর্মেনীয় পার্লামেন্টের স্পিকার আরারাত মিরজওয়ান। বিক্ষুব্ধদের মধ্যে ছিলেন প্রাক্তন সৈনিক থেকে শুরু করে সাধারণ মানুষ। তাঁদের অভিযোগ, নাগর্নো-কারাবাখ অঞ্চলে আজারবাইজানের শর্ত মেনে দেশের সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতা করেছেন নিকোল পাশিনিয়ান।
উল্লেখ্য, ৪ হাজার ৪০০ বর্গকিলোমিটারের বিতর্কত নাগর্নো-কারাবাখ অঞ্চলটি আজারবাইজানের ভৌগলিক সীমানার মধ্যেও হলেও আর্মেনীয় বিধরোহীদের দখলে। এই অঞ্চলের দখল নিয়ে আর্মেনিয়া-আজাবাইজান মতবিরোধের সূচনা ১৯৮৮ সালে। ১৯৯১ সালে সোভিয়েত ইউনিয়নের পতনের পর সদ্যস্বাধীন দুই দেশের মতবিরোধ গড়ায় সামরিক সংঘাতে। সোভিয়েত জমানায় আজারবাইজানের অন্তর্ভুক্ত এই অঞ্চলের প্রায় দেড় লক্ষ বাসিন্দার অধিকাংশই আর্মেনীয় খ্রিস্টান। ১৯৯৪ সালের সীমান্ত সংঘর্ষের পর থেকে নাগোরনো-কারাবাখ এবং আশপাশের বেশ কিছু অঞ্চল প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষ ভাবে আর্মেনিয়ার নিয়ন্ত্রণে। ২০১৬ সালেও ওই এলাকার দখল নিতে অভিযান চালিয়ে ব্যর্থ হয়েছিল আজারবাইজান ফৌজ।