সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: ব্রিটিশ শাসকদলের অন্দরে তুঙ্গে গোষ্ঠী কোন্দল। সূত্রের খবর, প্রধানমন্ত্রী পদের দাবিদার হিসেবে ঋষি সুনাককে কিছুতেই মেনে নিতে পারছেন না বরিস জনসন। তিনি নাকি তাঁর ঘনিষ্ঠদের বলছেন, আর যে-ই হন না কেন, মসনদের সখল যেন কোনওভাবে ঋষির হাতে না যায়।
কয়েকদিন আগে ক্রিস পিনচার ইস্যুতে দলের অন্দরেই বেনজির বিক্ষোভের মুখে পড়েন বরিস। ওই বিষয়ে ব্রিটিশ অর্থদপ্তরের প্রধান ঋষি সুনাকের বিদ্রোহের জেরেই ৭ জুলাই প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে ইস্তফা দিতে বাধ্য হন বরিস। মনে করা হচ্ছে, তারপর থেকেই এককালের ঘনিষ্ঠ সহযোগী ঋষির উপর প্রচণ্ড ক্ষুব্ধ তিনি। আপাতত ব্রিটেনের তত্ত্বাবধায়ক প্রধানমন্ত্রী হিসেবে রয়েছেন বরিস। সূত্রের খবর, ঋষির (Rishi Sunak) বদলে অন্য কারও নাম বলছেন না বরিস। তবে প্রধানমন্ত্রী হিসাবে বিদেশ সচিব লিজ ট্রাসই তাঁর প্রথম পছন্দ। এ ছাড়া তাঁর পছন্দের তালিকায় রয়েছেন পেনি মর্ডান্ট। বিশ্লেষকদের মতে, বরিস-ঋষি দ্বৈরথে দু’ভাগে বিভক্ত হয়ে গিয়েছে ব্রিটেনের শাসকদল ‘কনজারভেটিভ পার্টি’।
[আরও পড়ুন: ‘ফাইভ স্টার’ বিদ্রোহে ইটালিতে রাজনৈতিক অস্থিরতা, ইস্তফা প্রধানমন্ত্রী মারিও দ্রাঘির]
উল্লেখ্য, ২০১৯ সালে ব্রেক্সিট বাস্তবায়নের প্রতিশ্রুতিতে বিপুল সংখ্যাগরিষ্ঠতা নিয়ে জয়ী হন বরিস জনসন । কিন্তু গত দু’বছর ধরেই তিনি একের পর এক কেলেঙ্কারিতে জড়িয়ে দলের মধ্যে অনেকের আস্থা হারিয়েছেন। তবে সবচেয়ে বড় ধাক্কা তিনি খেয়েছেন ক্রিস পিনচার ইস্যুতে। ২০১৯ সালে ক্রিস পিনচার (Chris Pincher) নামে এক বর্ষীয়ান রাজনীতিককে মন্ত্রিসভায় এনেছিলেন ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন। তাঁর বিরুদ্ধে যৌন কেলেঙ্কারি-সহ একাধিক অভিযোগ ছিল সেসময়। এমন একজনকে কেন প্রশাসনে আনা হল, তার জবাবে জনসন কার্যত দায়সারাভাবেই জানিয়েছিলেন, পিনচার সম্পর্কে এসব তথ্য তাঁর কাছে ছিল না। কিন্তু পরে সরকারি এক মুখপাত্রই জানান যে প্রধানমন্ত্রী যা বলছেন, তা অসত্য। তারপরই দলীয় বিদ্রোহে গদি ছাড়তে হয় তাঁকে।
এদিকে, নতুন প্রধানমন্ত্রীর জন্য দু’দফার ভোট হয়ে গিয়েছে কনজারভেটিভ দলের এমপিরা। বৃহস্পতিবার প্রধানমন্ত্রীর হওয়ার দৌড়ে আরও এক ধাপ এগিয়ে গিয়েছেন ঋষি সুনাক। দ্বিতীয় দফার ভোটেও কনজারভেটিভ দলের নেতা হিসাবে অধিকাংশ ভোট পেয়েছেন বরিস সরকারের প্রাক্তন অর্থমন্ত্রী। এদিন দ্বিতীয় দফার ভোটে ঋষি পেয়েছেন ১০১টি ভোট। তাঁর নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী বরিস সরকারের সহ-বাণিজ্যমন্ত্রী পেনি মর্ডান্ট ৮৩টি ভোট পেয়েছেন। তৃতীয় স্থানে রয়েছেন বিদেশ সচিব লিজ ট্রাস।আরও কয়েকদফা ভোটের পর ফলাফল ঘোষণা করা হবে ৫ সেপ্টেম্বর।