দীপঙ্কর মণ্ডল: মহিলা কলেজের পরিচালন সমিতির শীর্ষে কি কোনও পুরুষ থাকতে পারেন? তাও আবার যিনি কি না যৌন হেনস্তায় অভিযুক্ত? শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের কাছে প্রশ্ন তুললেন অধ্যাপিকা বৈশাখী বন্দ্যোপাধ্যায়।
মিল্লি আল আমিন কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষের পদ থেকে মঙ্গলবার সরিয়ে দেওয়া হয়েছে বৈশাখীকে। যদিও তা নিয়ে অধ্যাপিকার কোনও ক্ষোভ নেই। চলতি মাসের শুরুতেই তিনি এই পদে ইস্তফা দিতে চেয়ে শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়কে একটা মেল পাঠিয়েছিলেন। যদিও তখন তা গৃহীত হয়নি। ইস্তফাপত্রের প্রাপ্তিস্বীকার করা হয় মঙ্গলবার। বুধবার ফের শিক্ষামন্ত্রীকে ই-মেল পাঠান বৈশাখী। শিক্ষামন্ত্রীর কাছে তিনি জানতে চান, কী করে মহিলা কলেজে যৌন হেনস্তায় অভিযুক্ত একজন পুরুষ পরিচালন সমিতির সম্পাদক হন? এটি ‘বিশাখা গাইডলাইনস’-এর নিয়মকে অমান্য করছে। বৈশাখীর ইস্তফাপত্রের প্রাপ্তিস্বীকার করেছেন কলেজের পরিচালন সমিতির সম্পাদক মহম্মদ জাহাঙ্গির। বৈশাখীর দাবি, এই সম্পাদকের বিরুদ্ধে তিনি থানায় যৌন হেনস্তার অভিযোগ জানিয়েছিলেন। এখন তিনি অন্তবর্তীকালীন জামিনে ছাড়া পেয়েছেন। এমন গুরুতর অপরাধে অভিযুক্ত কেউ পরিচালন সমিতির শীর্ষে কীভাবে থাকেন?
[আরও পড়ুন: মন্ত্রীর মন্দিরে চুরি, চোরের কীর্তি জেনে অবাক পুলিশ]
মঙ্গলবারই মিল্লি আল আমিন কলেজে ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ ও ডিডিও পদে নতুন নিয়োগ হয়েছে। নয়া নিয়োগের চিঠিতে বলা হয়েছে যে, বৈশাখীদেবীর ইস্তফাপত্র গ্রহণ করা হয়েছে। গত মার্চ মাসে রাজ্যের শাসক দলের অনুগত অধ্যাপক সংগঠন ওয়েবকুপার সাধারণ সম্পাদকের পদ থেকে সরানো হয়েছিল বৈশাখীকে। প্রাক্তন মেয়র শোভন চট্টোপাধ্যায়ের তৃণমূল কংগ্রেস থেকে ইস্তফার পরই গুরুদাস কলেজে উচ্চ শিক্ষা দপ্তরের প্রতিনিধি পদ থেকেও তাঁকে সরানো হয়। তখনও তাঁকে বিষয়টি জানানো হয়নি। দীর্ঘ প্রায় দু’বছর ধরে বিভিন্ন বিষয় নিয়ে সমস্যা তৈরি হয়েছে মিল্লি আল আমিন কলেজে। সমস্যা মেটানোর জন্য শিক্ষামন্ত্রী বারবার আশ্বস্তও করেছেন। তবে যে প্রক্রিয়ায় ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষর পদ থেকে সরানো হয়েছে, তা নিয়ে বৈশাখীর ঘনিষ্ঠ মহল অসন্তুষ্ট। তাঁদের বক্তব্য, একজন অধ্যাপিকাকে এইভাবে সরানো অনুচিত। তাঁর আরও সম্মান প্রাপ্য ছিল। বৈশাখীও শিক্ষামন্ত্রীকে পাঠানো চিঠিতে নিজের মনোবেদনা গোপন করেননি।
[আরও পড়ুন: ‘আমরা সবাই নাগরিক, NRC হবে না’, প্রতিবাদী মিছিলেই CAA বিরোধী গান বাঁধলেন ইন্দ্রনীল]
বিকাশ ভবন সূত্রে খবর, বৈশাখীর ই-মেল যাওয়ার পর নড়ে বসেন উচ্চশিক্ষা দপ্তরের কর্তারা। এক আধিকারিক জানিয়েছেন, “মিল্লি আল আমিন কলেজে কোনও অ্যাড হক পরিচালন সমিতি নেই। তাহলে তার সম্পাদক আসছেন কোথা থেকে! বৈশাখী বন্দ্যোপাধ্যায়কে এইভাবে কেউ চিঠি দিতে পারেন না।” উচ্চশিক্ষা দপ্তর সূত্রে খবর, এদিনই পরিচালন সমিতির সভাপতিকে চিঠি পাঠিয়ে বৈশাখীকে পাঠানো চিঠির যে কোনও ভিত্তি নেই সেকথা সরকারি ভাবে কলেজ কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে।
The post মহিলা কলেজের কমিটির মাথায় যৌন হেনস্তায় অভিযুক্ত কী করে থাকেন? পার্থকে প্রশ্ন বৈশাখীর appeared first on Sangbad Pratidin.