সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: আর রাখঢাক নয়, এবার প্রকাশ্যেই অস্ত্র প্রশিক্ষণ শুরু করে দিল বজরং দল। রীতিমতো প্রশিক্ষণ শিবির করে দলীয় স্বেচ্ছাসেবকদের শেখানো হচ্ছে গুলি চালনা, তলোয়ার শিক্ষা এবং লাঠি খেলা। মধ্যপ্রদেশের বাওয়ারা জেলার এই ছবি সামনে আসার পরই শুরু হয়েছে তীব্র সমালোচনা।
[জিনিসের ভারে নুয়ে পড়ছেন ডেলিভারি বয়, সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল অমানবিক ছবি]
গোপন সুত্রে খবর, গত ৩ মে থেকে ১১ মে পর্যন্ত এক সপ্তাহ ধরে মধ্যপ্রদেশের বাওয়ারার রাজগড় একটি প্রশিক্ষণ শিবিরের আয়োজন করে বিশ্ব হিন্দু পরিষদের যুবা মোর্চা। অভিযোগ প্রশাসনের নাকের ডগায় আয়োজিত ওই শিবিরে ‘হিন্দুত্ব রক্ষা’র উদ্দেশ্যে অস্ত্র শিক্ষা দেওয়া হয়েছে কয়েকশো যুবককে। প্রায় ৩২টি জেলা থেকে ওই শিবিরে অংশগ্রহণ করেছিল বজরং দলের স্বেচ্ছাসেবীরা। তাদের হাতে রাইফেল, তলোয়ারের মতো প্রাণঘাতী অস্ত্র তুলে দেয় আয়োজকরা। কীভাবে গুলি চালাতে হবে, ‘জেহাদিদের’ মোকাবিলা করা হবে কীভাবে এসবই শিক্ষা দেওয়া হয় ওই শিবিরে। এছাড়াও ক্যারাটে, গাছে ওঠা, দড়ি বেয়ে ওপরে ওঠা, বিভিন্ন রকমের সাঁতার, বিভিন্ন পরিস্থিতিতে নিজেকে কীভাবে মানিয়ে নিতে হবে তাও শেখানো হয় ওই শিবিরে। অনেকে বলছেন, বজরং দল আয়োজিত শিবিরে যেভাবে অস্ত্র শিক্ষা দেওয়া হয়েছে তা দেওয়া হয় বিখ্যাত জঙ্গিশিবির গুলিতে।
[বিজেপির অস্বস্তি বাড়িয়ে নোট বাতিলের যৌক্তিকতা নিয়ে প্রশ্ন নীতীশের]
অস্ত্র শিবিরের কথা যাতে কোনওভাবে সংবাদমাধ্যমেক কাছে না পৌঁছায় সেদিকেও কঠোরভাবে নজর রাখা হয়েছিল। শিবিরে আসা স্বেচ্ছাসেবকদের কোনওভাবেই বাইরে যাওয়ার অনুমতি দেওয়া হয়নি। বাইরে থেকেও সদস্য ছাড়া অন্য কাউকে ভেতরে ঢুকতে দেওয়া হয়নি, সংবাদমাধ্যমের প্রদেশ ছিল পুরোপুরি নিষিদ্ধ। ভোর ৪ টে থেকে রাত ১১টা পর্যন্ত ক্যাম্পে অংশ নেওয়া প্রত্যেক স্বেচ্ছাসেবকের দিকে কড়া নজর রাখা হয়। তবে, তাতে শেষরক্ষা হয়নি, শেষ পর্যন্ত ওই শিবিরের বেশ কয়েকটি ছবি ভাইরাল হয়ে যায়। যদিও বজরং দলের শীর্ষ নেতৃত্বের দাবি, শিবিরে কোনও ধরনের অস্ত্র শিক্ষা দেওয়া হয়নি। ওই ধরণের বার্ষিক শিবির প্রতি বছরই আয়োজিত হয়।
[সম্মানজনক আসন বন্টন নাহলে একলা চলো, আশঙ্কা জাগিয়ে বার্তা ‘বহেনজি’র]
প্রশ্ন উঠছে প্রশাসনের নাকের ডগায় এহেন অস্ত্র শিবিরের আয়োজন সম্ভব হল কীভাবে? এত অস্ত্রসস্ত্রই বা এলো কোথা থেকে। কংগ্রেসের দাবি, এর পিছনে প্রশাসনের প্রচ্ছন্ন হাত রয়েছে, নির্বাচনকে সামনে রেখেই প্রস্তুত রাখা হচ্ছে গুন্ডাবাহিনীকে। যত দ্রুত সম্ভব এর বিরুদ্ধে সরকারের পদক্ষেপ করার দাবিও জানিয়েছে কংগ্রেস। বিজেপি নেতৃত্বও অবশ্য এই শিবিরের আয়োজনকে বেআইনি হিসেবেই দেখছে। বিজেপির এক নেতা জানিয়েছেন, বজরং দলের শিবিরে যদি আইনে ভাঙা হয় তাহলে দ্রুত ব্যবস্থা নেবে প্রশাসন।
[লাগামছাড়া জ্বালানির মূল্যবৃদ্ধি, ৮০ টাকা ছাড়াল শহরে পেট্রলের দাম]
কোথাও গো-রক্ষকের দাদাগিরি, কোথাও লাভ জেহাদিদের শাস্তি দেওয়ার নামে গুন্ডামি। দেশজুড়ে উগ্র হিন্দুত্ববাদীদের দাদাগিরি গত চার বছরে অনেকটাই বেড়েছে, অন্তত বিরোধীরা এমনটাই অভিযোগ করে থাকেন। এর পিছনে নাকি সরকারের প্রচ্ছন্ন মদতও আছে বলে দাবি করা হয়। মধ্যপ্রদেশের এই অস্ত্র শিবির বিরোধীদের সেই দাবিকেই মান্যতা দিচ্ছে না কি? প্রশ্ন ওয়াকিবহাল মহলের।