দিব্যেন্দু মজুমদার, হুগলি: বাঙালির ভ্যালেন্টাইনস ডে সরস্বতী পুজো। স্কুল কলেজের পড়ুয়াদের মন দেওয়া-নেওয়ার দিন। আর সেই দিনেই বজরং দলের নাম করে প্রেমিক প্রেমিকাদের হুঁশিয়ারি দিয়ে পোস্টার পড়াকে কেন্দ্র করে মঙ্গলবার চাঞ্চল্য ছড়াল হুগলির উত্তরপাড়ায়। এদিন উত্তরপাড়ার জিটি রোডের বিভিন্ন এলাকায় এবং বেশ কয়েকটি ঘাটে এই পোস্টার পড়ায় স্কুল কলেজের ছাত্রছাত্রীরাও রীতিমতো ভীত। তাঁরা এ নিয়ে সংশয়ও প্রকাশ করেছেন। তবে কে বা কারা এই পোস্টার লাগিয়েছে, তা স্থানীয়রা বলতে পারেননি।
অন্যান্য দিনের মতো এদিন উত্তরপাড়ার দোলতলার ঘাটে বেশ কয়েকটি পোস্টার দেখা যায়। এসব দেখার পরই ঘাটে ঘুরতে আসা অল্প বয়সী ছেলেমেয়েরা বেশ অস্বস্তিতেই পড়ে যায়। ভয় পেয়ে ঘাট এলাকা ছেড়ে চলে যায় অনেকেই। ছাপানো ওই পোস্টারের বিষয়বস্তু ছিল এরকম। “বাঙালির সরস্বতী পুজোর এই পূণ্য দিনটিকে এবং আমাদের সংস্কৃতিকে পাশ্চাত্য সংস্কৃতি ব্যবহার করে নষ্ট করে দেওয়া হচ্ছে। এই দিনটিকে ভ্যালেন্টাইন্স ডে’তে পরিণত করা হয়েছে।” রীতিমতো হুঁশিয়ারি দিয়ে তাতে লেখা, জুটি হিসেবে ঘুরে বেড়াতে দেখা গেলে তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
[আরও পড়ুন: রাজ্যে গতি পেল প্রাথমিক টেটের নিয়োগ প্রক্রিয়া, প্রকাশিত ১৫ হাজারের বেশি প্রার্থীর ফলাফল]
পাশাপাশি পোস্টারে উল্লেখ ছিল, “আমাদের সরকার যখন ক্ষমতায় আসবে, এর বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় আইন আনা হবে।” পোস্টারের নিচে লেখা বজরং দল। এই পোস্টার দেখার পরই ভয় পেয়ে অনেক জুটিই গঙ্গার ঘাট পরিত্যাগ করে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক স্কুল ছাত্রী জানায়, এই ধরনের পোস্টার যুক্তিহীন। যদি এটাই সত্যি হয় তবে তো আগামিদিনে এরা এটাও বলতে পারে যে স্কুল কলেজের ছেলেমেয়রা একসঙ্গে পড়তেও পারবে না। এক কলেজ ছাত্রের কথায়, এটা এক ধরনের তুঘলকি আচরণ। তাহলে পরবর্তীকালে স্বামী স্ত্রী একসঙ্গে বেড়াতে গেলে তাঁদেরও একই প্রশ্নের সামনে দাঁড়াতে হবে।
তবে বজরং দলের কারও সঙ্গে এই বিষয়ে যোগাযোগ করা যায়নি। বিজেপির শ্রীরামপুর সাংগঠনিক জেলার সভাপতি শ্যামল বসু জানান, বজরং দল কোনও বিজেপির শাখা সংগঠন নয়। তারা কী বলছে সেটা তারাই বলতে পারবে। তবে তিনি এটাও বলেন, সরস্বতী পুজোর দিনকে তারা ভ্যালেন্টাইনস ডে হিসেবে মানেন না। এই বিষয়ে থানায় কোনও অভিযোগ না হলেও উত্তরপাড়া থানার পুলিশ পুরো বিষয়টি খতিয়ে দেখছে।