সংবাদ প্রতিদিন শয়গিতাল ডেস্ক: মাঝ রাস্তায় চুলের মুঠি ধরে মার বালোচ মহিলাদের। পাকিস্তানি পুলিশের এই জঘন্য কাজের বিরুদ্ধে উঠেছে নিন্দার ঝড়। সূত্রের খবর, করাচিতে নিখোঁজ আত্মীয়দের সন্ধানে প্রতিবাদ করছিলেন ওই মহিলারা। তখনই তাঁদের উপর ঝাপিয়ে পড়ে বিশাল পুলিশ বাহিনী। প্রচণ্ড মারধর করে বিক্ষোভকারীদের জেলে পুরে দেওয়া হয়।
সংবাদ সংস্থা এএনআই সূত্রে খবর, রবিবার করাচি শহরের বুকে ঘটা এহেন অমানবিক ঘটনার প্রতিবাদে সরব হয়েছেন বালোচ সমাজকর্মীরা। নিজের টুইটার হ্যান্ডেলে বিখ্যাত মানবাধিকারকর্মী আশরফ বালোচ লেখেন, “এটাই ইসলামিক রিপাবলিক অফ পাকিস্তানের আসল চেহারা। এখানে নিখোঁজ আত্মীয়দের খোঁজে আসা বালোচ মহিলাদের রাস্তায় ফেলে টানা-হ্যাঁচড়া করা হয়। এটা খুবই দুর্ভাগ্যের বিষয় যে এই পাকিস্তান আবার রাষ্ট্রসংঘের সদস্য।”
[আরও পড়ুন: খারকভে রাশিয়ার বড় পরাজয়, রুশ সেনা ঘাঁটি দখল করল ইউক্রেন]
উল্লেখ্য, পাকিস্তানের (Pakistan) হাত থেকে মুক্তি চাইছে দেশটির বৃহত্তম প্রদেশ বালোচিস্তান। দীর্ঘদিন ধরেই স্বাধীনতার জন্য সশস্ত্র সংগ্রাম করছে ‘বালোচ লিবারেশন আর্মি’-র মতো একাধিক সংগঠন। আর এই লড়াই খতম করতে অপহরণ, গুমখুন, ধর্ষণের মতো অত্যাচার চালাচ্ছে পাকিস্তানি সেনা ও আইএসআই। এপর্যন্ত বালোচিস্তানের কয়েক হাজার মানুষ নিখোঁজ হয়েছে। অভিযোগ, এদের অনেককেই খুন করা হয়েছে এবং বাকিদের গোপন জায়গায় বন্দি করে রাখা হয়েছে।
কানাডা স্থিত থিঙ্কট্যাঙ্ক ‘ইন্টারন্যাশনাল ফোরাম ফর রাইটস অ্যান্ড সিকিউরিটি’-র একটি রিপোর্টে বলা হয়েছে, অপহরণ ও গুমখুনের ঘটনার উপর লাগাম টানার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে একের পর এক নির্বাচিত সরকার। কিন্তু আদতে কোনও পদক্ষেপ করেনি তারা। বাস্তবে এহেন পন্থা অবলম্বন করে বলোচিস্তানে প্রতিবাদের স্বর মুছে ফেলতে চাইছে ইসলামাবাদ। এভাবেই সর্বশক্তিমান সেনার বিরুদ্ধে যারা আওয়াজ তোলে তাদের দমিয়ে রাখা হয়।
উল্লেখ্য, ১৯৪৭ সালের ১১ অগস্ট ব্রিটিশ শাসন থেকে মুক্ত হয়েছিল দেশীয় রাজ্য কালাত। ১২ অগস্ট কালাতের শাসক মির সুলেমান দাউদ স্বাধীনতা ঘোষণা করেছিলেন। কিন্তু সেই স্বাধীনতার মেয়াদ ছিল মাত্র সাত মাস। ১৯৪৮-এর ২৭ মার্চ পর্যন্ত। বালোচিস্তানের (Balochistan) মানুষের মনে সেই দিন আজও পরাধীনতার যন্ত্রণা আরও বাড়িয়ে তুলে। তবে বালোচরা থেমে নেই। পাক সেনার বিরুদ্ধে সশস্ত্র সংগ্রাম চালাচ্ছেন তাঁরা। গত ফেব্রুয়ারি মাসে বালোচিস্তানে নির্বিচারে গুমখুন করছে পাক সেনা বলে রাষ্ট্রসংঘে অভিযোগ জানান ‘খান অফ কালাত’। শুধু তাই নয়, দখলদার পাকিস্তানের হাত থেকে ওই অঞ্চলের মুক্তি নিশ্চিত করার আরজিও রেখেছেন তিনি। বলে রাখা ভাল, বর্তমান বালোচিস্তানের প্রাচীন কালাত সাম্রাজ্যের রাজাকে বলা হয় ‘খান অফ কালাত’।