সুব্রত বিশ্বাস: দ্বিতীয়বার রেলমন্ত্রী থাকাকালীন বেলুড় মঠ (Belur Math) থেকে বেলুড় স্টেশন পর্যন্ত রেলপথ তৈরির ঘোষণা করেছিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। অনেকটা কাজ এগিয়েও গত কয়েক বছরে তা থমকে যায়। আগামী মার্চের মধ্যে এই কাজ শেষ করার পরিকল্পনা নিয়েছে রেল। সম্প্রতি প্রকল্পের কাজ ঘুরে দেখেন রেলের ইঞ্জিনিয়াররা। হাওড়ার সিনিয়র ডিভিশনাল ইঞ্জিনিয়ার (কো-অর্ডিনেশন) রামেশ্বর প্রসাদ বলেন, “প্রকল্প শেষ করতে যে অর্থের প্রয়োজন তা কোভিডের জন্য হাতে না থাকায় কাজে ঢিলে পড়ছে। ফের টেন্ডার ডাকা হচ্ছে।”
প্রসঙ্গত, হাওড়া থেকে সরাসরি বেলুড় মঠ যাওয়ার জন্য ট্রেন রয়েছে। ব্যান্ডেলের দিক থেকে মঠে আসার সরাসরি কোনও ট্রেন নেই। ফলে ব্যান্ডেল থেকে সরাসরি ভক্তরা যাতে বেলুড় মঠে আসতে পারেন এজন্য মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নতুন লাইনটির তৈরির পরিকল্পনা নিয়েছিলেন। যা আগামী দিনে খুলে যাবে।
[আরও পড়ুন: গত ২৪ ঘণ্টায় রাজ্যে নিম্নমুখী মৃত্যু, চিন্তা বাড়াচ্ছে জলপাইগুড়ির কোভিড গ্রাফ]
উল্লেখ্য, পুরো কাজটি করার জন্য ব্রিজ অ্যান্ড রুফকে বরাত দিয়েছিল রেল। বেলুড় মঠ থেকে হাওড়া যাতায়াতের লাইন রয়েছে আগে থেকেই। লিলুয়া ওয়াকর্শপের পাশ দিয়ে লাইনটি ভাগ হয়ে বেলুড়ের দিকে যাবে। বেলুড়ের দিকে যাওয়ার পথে বিরাট একটি ঝিলের উপর দিয়ে যেতে হবে ট্রেনটিকে। এজন্য ঝিলের উপর ব্রিজ তৈরি করা হয়েছে। ব্রিজটি তৈরি করেছে ব্রিজ অ্যান্ড রুফ। রেলের অর্থ বরাদ্দে ঢিলেমির জন্য এক সময় এই সংস্থা রেলের এই প্রকল্পের কাজ থেকে সরে দাঁড়ায়। এবার নতুন টেন্ডার ডাকা হচ্ছে কাজ শেষ করার জন্য বলে রেল জানিয়েছে।
বেলুড় স্টেশনের ১ নম্বর প্ল্যাটফর্মের পাশে তৈরি হয়েছে নতুন একটি প্ল্যাটফর্ম। যেখানে বেলুড় মঠ থেকে ট্রেনটি এসে দাঁড়াবে। নতুন ও পুরনো স্টেশনের মধ্যে তৈরি হবে সংযোগকারী ফুট ওভারব্রিজ। যাত্রীরা মঠ থেকে ট্রেনে নতুন প্ল্যাটফর্মে এসে বেলুড় থেকে আপ বা ডাউনে ইচ্ছেমতো ট্রেন ধরতে পারবেন। বেলুড় মঠ থেকে এসে ট্রেনটি হাওড়াও চলে যেতে পারবে। এজন্য ‘ওয়াই’ আকারের ক্রসিংও তৈরি হবে। যে ঝিলের উপর দিয়ে ট্রেনটি বেলুড়ে আসবে সেই ঝিল থেকে লিলুয়া ওয়ার্কসপে জল সরবরাহ হয়। ব্রিজ নির্মাণে এই সরবরাহ ব্যবস্থাকে বিকল্পভাবে তৈরি করা হয়েছে। নির্মাণ শেষে সেই প্রকল্পে বৈদ্যুতিক সংযোগ দেওয়া কাজ হচ্ছে।
[আরও পড়ুন: STF হেফাজতে চিনা ‘চর’ হান, জেরার স্বার্থে মালদহ থেকে আনা হতে পারে কলকাতায়]
সিনিয়ার ডিভিশন্যাল ইঞ্জিনিয়ার (কো-অর্ডিনেটর) রামেশ্বর প্রসাদ জানান, ৬০০ থেকে ৭০০ কিলোমিটার নতুন লাইন পাতার কাজ বাকি। এছাড়া আনুষঙ্গিক কাজ সিগন্যাল, ইন্টারলক, ফুট ওভারব্রিজ তৈরিতে সব মিলিয়ে খরচ হবে প্রায় পাঁচ কোটি টাকা। গত বছর ও এই বছর কোভিড পরিস্থিতিতে ফান্ড কম থাকায় কাজ দ্রুততার সঙ্গে এগোচ্ছে না।