সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: দীর্ঘ ১৭ বছর পর ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট সচল করা হয়েছে বিএনপির চেয়ারপার্সন তথা বাংলাদেশের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়ার। গতকাল, সোমবার থেকে তাঁর ব্যাঙ্কের লেনদেন চালু করে দিয়েছে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা শাখা (সিআইসি)। বাংলাদেশ ব্যাঙ্কের মাধ্যমে একটি চিঠিও পাঠানো হয়েছে তাঁকে। পাশাপাশি চিকিৎসার জন্য খুব তাড়াতাড়ি বিদেশেও যেতে পারেন খালেদা জিয়া বলে খবর।
বাংলাদেশের সংবাদমাধ্যম প্রথম আলো সূত্রে খবর, অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মহম্মদ ইউনুসের সঙ্গে পরামর্শ করার পর এনবিআরের নবনিযুক্ত চেয়ারম্যান আবদুর রহমান খান এই সিদ্ধান্ত নেন। ২০০৭ সালে তৎকালীন তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সময় খালেদা জিয়ার ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট বাজেয়াপ্ত করা হয়। পরে আইনজীবীর মাধ্যমে আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে নিয়মিত খরচ চালানোর জন্য রূপালী ব্যাঙ্কের ঢাকা শাখা থেকে প্রতি মাসে নির্দিষ্ট পরিমাণ টাকা তুলতে পারতেন তিনি। প্রথম দিকে এর পরিমাণ ছিল দু লক্ষ টাকা। পরে টাকার পরিমাণ ধীরে ধীরে বাড়ানো হয়। ওই বছর প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনারও ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টও বন্ধ করে দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু নির্বাচনে জিতে প্রধানমন্ত্রী হওয়ার পর তা আবার খুলে দেওয়া হয়।
[আরও পড়ুন: হত্যার মামলায় এবার গ্রেপ্তার হাসিনার প্রাক্তন মন্ত্রী দীপু মনি, বাংলাদেশে জারি লিগ নেতাদের ধরপাকড়]
কয়েক বছর ধরেই অসুস্থ বিএনপি নেত্রী খালেদা। কয়েকদিন আগেও অসুস্থ হয়ে ভর্তি হয়েছিলেন হাসপাতালে। তাঁর বিদেশে চিকিৎসা করানোর বিষয়টি আটকে দেওয়া নিয়ে তৎকালীন হাসিনা সরকারের বিরুদ্ধে বহুবার অভিযোগ জানিয়েছে বিএনপি। তবে এবার চিকিৎসার জন্য বিদেশে যেতে পারেন খালেদা। কারণ চলতি আগস্ট মাসেই তাঁকে মুক্তি দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছিলেন বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতি মহম্মদ শাহাবুদ্দিন। খালেদার খুব শীঘ্রই বিদেশের যাওয়ার বিষয়টি জানিয়েছেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। ৭৯ বছর বয়সী খালেদা জিয়া দীর্ঘদিন ধরে লিভার সিরোসিস, হৃদ্রোগ, ডায়াবেটিস, আর্থ্রাইটিস, কিডনি-সহ বিভিন্ন রোগে ভুগছেন।
উল্লেখ্য, দুর্নীতির মামলায় ২০১৮ সালের ৮ ফেব্রুয়ারি পাঁচ বছরের সাজা দিয়ে কারাগারে পাঠানো হয় খালেদা জিয়াকে। ওই বছরের অক্টোবরে হাই কোর্টে আপিল শুনানি শেষে সাজা বেড়ে হয় ১০ বছর। ২০২০ সালে করোনা মহামারি দেখা দিলে তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী হাসিনা নির্বাহী ক্ষমতায় খালেদার দণ্ড ছয় মাসের জন্য স্থগিত করেন। ওই বছরের ২৫ মার্চ সাময়িক মুক্তি পেয়ে গুলশানের বাড়ি ফিরোজায় ফেরেন খালেদা। তখন থেকে তিনি সেখানেই আছেন। এর পর থেকে পরিবারের আবেদনে প্রতি ছয় মাস পর বিএনপি নেত্রীর মুক্তির মেয়াদ বাড়িয়ে আসছিল শেখ হাসিনার সরকার। প্রতিবারই তাঁকে দুটি শর্ত দেওয়া হচ্ছিল। তাঁকে বাসায় থেকে চিকিৎসা করাতে হবে এবং তিনি বিদেশে যেতে পারবেন না। রাষ্ট্রপতির নির্দেশে মুক্তির পর এবার আর সেই নিষেধ রইল না।