সুকুমার সরকার, ঢাকা: বাংলাদেশের (Bangladesh) জমিতেই আজ বিপন্নও বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবর রহমান। তাঁর নশ্বর শরীর বহুকাল আগেই পঞ্চভূতে বিলীন হয়ে গেলেও আদর্শ ও বাঙালি সত্বার মধ্যে বেঁচে ছিলেন তিনি। কিন্তু বাংলাদেশে উগ্র ইসলামের উত্থানের সঙ্গে বিপন্ন তাঁর অস্তিত্ব। পরিস্থিতি এমন জায়গায় পৌঁছেছে যে এবার মুজিবের মূর্তি রক্ষায় আসরে নামতে হয়েছে আদালতকে।
[আরও পড়ুন: স্যাটেলাইট নিয়ন্ত্রিত ‘বুদ্ধিমান’ অস্ত্রে হত্যা ইরানের পরমাণু বিজ্ঞানীকে!]
কুষ্টিয়ার শাপলা চত্বরে বঙ্গবন্ধুর মূর্তি মৌলবাদীরা ভেঙে দেওয়ার পরে দেশের সর্বত্র তাঁর যে সব মূর্তি ও মুরাল আছে, তার নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হাসিনা সরকারকে নির্দেশ দিল ঢাকা হাই কোর্ট। মূর্তিগুলির নিরাপত্তা সুনিশ্চিত করতে সরকার কী কী পদক্ষেপ করেছে, এক মাস পরে ক্যাবিনেট সচিবকে সে বিষয়ে রিপোর্ট দিতে বলেছে আদালত। একই সঙ্গে মুজিবের জন্ম শতবর্ষে যে সব মূর্তি বা ভাস্কর্য নির্মাণের সিদ্ধান্ত শেখ হাসিনা সরকার নিয়েছে, চলতি বছরের মধ্যে তা শেষ করার নির্দেশও দিয়েছে বিচারপতি এফ আর এম নাজমুল আহসান ও বিচারপতি সাহেদ নূরউদ্দীনের বেঞ্চ। সোমবারই ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটান আদালত শেখ মুজিবের মূর্তি ধ্বংসের ডাক দেওয়া তিন মৌলবাদী নেতার বিরুদ্ধে করা রাষ্ট্রদ্রোহের মামলা গ্রহণ করে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)-কে তা তদন্ত করে দেখার নির্দেশ দিয়েছে।
এর আগে ৭ মার্চকে জাতীয় ঐতিহাসিক দিবস ঘোষণা করার পক্ষে রায় দিয়েছিল হাই কোর্ট। আদেশে প্রতিটি জেলা ও উপজেলার সদর দপ্তরে জাতির পিতার ভাস্কর্য স্থাপনের নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল। ওই মামলার প্রেক্ষিতে সোমবার বিষয়টি ওঠে। আদালতে রিটের পক্ষে সওয়াল করেন আইনজীবী বশির আহমেদ। রাষ্ট্রপক্ষে সওয়াল করেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল আবদুল্লা আল মাহমুদ বাশার। আদালতে রাষ্ট্রপক্ষ কোর্টের নির্দেশনা বাস্তবায়নের অগ্রগতি দাখিল করে। এতে বলা হয়, মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রক্ ইতিমধ্যে ৩৮০টি উপজেলা ও ৬৩টি জেলায় মুক্তিযোদ্ধা কমপ্লেক্স স্থাপন করে কমপ্লেক্সের সামনে জাতির পিতার ভাস্কর্য স্থাপন করেছে। রিটের পক্ষে আইনজীবী বশির আহমেদ বলেন, বঙ্গবন্ধু স্বাধীনতার প্রতীক। কুষ্টিয়ার বঙ্গবন্ধুর নির্মাণাধীন ভাস্কর্য ভাঙার মতো জঘন্যতম ঘটনা ঘটেছে। অথচ সংবিধানের ২৪ অনুচ্ছেদ আছে, এগুলো রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্ব রাষ্ট্রের। মুরাল ও ভাস্কর্যগুলো রক্ষণাবেক্ষণ ও নিরাপত্তা নিশ্চিতে ২৪ ঘণ্টার মধ্য পদক্ষেপ নিতে সংশ্লিষ্ট ডিসি ও এসপিদের প্রতি নির্দেশনার দেওয়ার আরজি জানান তিনি। তারপরই এই পদক্ষেপ করে হাই কোর্ট।