সুকুমার সরকার, ঢাকা: ভারতের সঙ্গে সম্পর্কে কোনও ফাটল ধরেনি। গোটাটাই সংবাদমাধ্যমের তৈরি গুজব। এমনটাই বক্তব্য বাংলাদেশের বিদেশমন্ত্রী এ কে আবদুল মোমেনের। তিনি সাফ জানিয়েছেন, ভারত ও চিন দুই দেশের সঙ্গেই বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক বজায় রেখেছে ঢাকা।
[আরও পড়ুন: ‘ভারত-বাংলাদেশ সম্পর্ক একাত্তরের রক্তের রাখিবন্ধনে আবদ্ধ’, মন্তব্য হাসিনার মন্ত্রীর]
সম্প্রতি, একাধিক সংবাদমাধ্যমে ভারত-বাংলাদেশের সম্পর্কে ফাটল ধরার ইঙ্গিত দিয়ে বেশ কিছু প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়েছে। সেখানে বলা হয়েছে, বেজিংয়ে সঙ্গে সম্পর্ক মজবুত করছে ঢাকা। পরিস্থিতি নাকি এমন জায়গায় পৌঁছে গিয়েছে যে বিগত চার মাস ধরে বহুবার আবেদন করা সত্বেও ভারতের রাষ্ট্রদূতের সঙ্গে দেখা করেননি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এছাড়াও, বেজিংয়ের প্রতি পক্ষপাতিত্বের ফলেই নাকি সিলেট ওসমানি এয়ারপোর্ট আধুনিকীকরণের বরাত পেয়েছে চিনা সংস্থা।
এই বিষয়ে বাংলাদেশের বিদেশমন্ত্রী বলেন, “আমরা শান্তিপ্রিয় দেশ এবং সবার সঙ্গে আমাদের বন্ধুত্ব। কারও সঙ্গেই আমাদের শত্রুতা নেই। ভারতের সঙ্গে বাংলাদেশের নিবিড় সম্পর্ক রয়েছে। কে ফোন করল, কে কী করল, তা নিয়ে দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কে প্রভাব পড়বে না। করোনার জন্য এখন কোনও দেশের কুটনীতিবিদের সঙ্গে দেখা করছেন না প্রধানমন্ত্রী। মিডিয়া ইচ্ছা করে অবান্তর জিনিস রটাচ্ছে, যাকে রাবিশ বলা যায়।” চিন ও ভারতের সংঘাতের বিষয়ে অবস্থান স্পষ্ট করে তিনি আরও বলেন, “সংঘাতে ভারতের কয়েকজন সেনার মৃত্যু হয়েছে। ভারতের প্রধানমন্ত্রী বলেছেন কেউ এক ইঞ্চি জমিও দখল করেনি। ভারত সরকার আমাদের কোনও নোট ভার্বালও পাঠায়নি। ফলে স্বাভাবিকভাবে আমরা কোনও বক্তব্য দেইনি। কোনও বিরোধ নিয়ে ভারত বা চিন কেউ আমাদের কাছে সমর্থন চায়নি। কিন্তু আমরা সবসময় চাই শান্তিপূর্ণ স্থিতিশীল অবস্থা। আমরা চাই আলোচনার মাধ্যমে সমস্যার সমাধান হোক। কারও অভ্যন্তরীণ বিষয়ে কখনও নাক গলাই না। এটাই আমাদের অবস্থান।”
উল্লেখ্য, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বাংলাদেশের মসনদে বসার পর থেকেই ভারত বিরোধী শক্তিরগুলির উপর লাগাম টেনেছেন। বাংলাদেশের জমিতে সন্ত্রাসবাদী কার্যকলাপ চলবে না বলে সাফ করে দিয়েছেন তিনি। একইভাবে, রোহিঙ্গা ইস্যু থেকে শুরু করে একাধিক বিষয়ে বাংলাদেশের পাশে দাঁড়িয়েছেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। সেই কথা মাথায় রেখেই এবার ঢাকার সঙ্গে সম্পর্ক মজবুত করছে বেজিং। সেই চেষ্টায় সাড়া মিলেছে হাসিনা সরকারের তরফেও। ফলে এবার পরিস্থিতি সামাল দিতে তড়িঘড়ি মাঠে নেমেছে নয়াদিল্লি। বাংলাদেশে ভারতের নয়া রাষ্ট্রদূত হিসেবে নিযুক্ত হচ্ছেন দুঁদে কুটনীতিবিদ বিক্রম ডরাইস্বামী। বর্তমানে এই পদে রয়েছেন রিভা গাঙ্গুলী দাস। আগামী সেপ্টেম্বর মাসে বিদেশমন্ত্রকের সচিব (পূর্ব) হয়ে নয়াদিল্লি ফেরত আসবেন তিনি।
[আরও পড়ুন: ভারত-বাংলাদেশ সম্পর্কের তুলনা অন্য কারও সঙ্গে হতে পারে না, বলছে ঢাকা]
The post দিল্লি-ঢাকা সম্পর্কে ফাটল নিয়ে গুজব ছড়াচ্ছে মিডিয়া, বললেন বাংলাদেশের বিদেশমন্ত্রী appeared first on Sangbad Pratidin.