সুকুমার সরকার, ঢাকা: করোনা মহামারীর থাবায় বিপর্যস্ত বাংলাদেশ (Bangladesh)। প্রতিদিন লাফিয়ে বাড়ছে আক্রান্ত ও মৃতের সংখ্যা। পরিস্থিতি সামাল দিতে দেশজুড়ে চলছে কড়া লকডাউন। আর এর ফলে রীতিমতো ধাক্কা খেয়েছে দেশের পোশাক শিল্প। কলকারখানা বন্ধ থাকায় বিপাকে পড়ছেন শিল্পপতিরা। তাই এবার পরিস্থিতি সামাল দিতে বিকল্প পথের প্রস্তাব দিয়েছেন তাঁরা।
[আরও পড়ুন: রোহিঙ্গা সংকট সমাধানে নাজেহাল বাংলাদেশ, পাশে দাঁড়াল জাপান]
স্থানীয় সংবাদমাধ্যমে পোশাক কারখানার মালিক পক্ষ জানিয়েছেন, ২০২০ থেকে দেশে করোনা মহামারীর দাপট অব্যাহত। বৈশ্বিক চাহিদা কমায় ক্রেতারা বরাত দেওয়া থেকে পিছিয়ে গিয়েছিলেন। তবে সম্প্রতি দীর্ঘদিনের খরা কাটিয়ে কর্মচঞ্চল হয়ে উঠেছিল দেশের রপ্তানিমুখী পোশাক শিল্প। সংক্রমণ পরিস্থিতি যদি আরও খারাপ হয় এবং ৫ আগস্টের পরও কারখানা বন্ধ রাখতে হয়, তাহলে বড় ক্ষতির মুখে পড়তে হবে। তাই সম্ভাব্য ক্ষতি এড়াতে তৈরি পোশাক কারখানার কর্মীদের গণটিকাদানের পাশাপাশি শেষ পর্যায়ে থাকা ক্রয় আদেশের কাজগুলো সারতে সীমিত সংখ্যক শ্রমিক দিয়ে কারখানা খোলার প্রস্তাব রেখেছেন মালিকরা। পোশাক শিল্প মালিকদের সংগঠন বিজিএমই-এর সহ সভাপতি শহিদুল আজিম সোমবার এক স্থানীয় সংবাদমাধ্যমকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে জানান, জুন, জুলাই ও আগস্ট মাস হচ্ছে পোশাক রপ্তানির ‘পিক টাইম’। সারা বছরের ৩৫ থেকে ৪০ শতাংশ রপ্তানি হয় এই সময়ে। ফলে লকডাউন থাকলে বরাত মতো পণ্য জোগান দেওয়া সম্ভব হবে না। ইউরোপার দেশগুলিতে ক্রিসমাস ও শীতের মরশুমের অর্ডার এখন শিপমেন্টের পর্যায়ে রয়েছে। তাই এই পরিস্থিতিতে পণ্য দিতে না পারলে তারা দেরিতে এই পণ্যগুলো নিয়ে বিক্রি করতে পারবে না। এছাড়া, যথাসময়ে জাহাজে পণ্য পাঠাতে না পারলে পরে কার্গো বিমানে পাঠাতে পরিবহণ ব্যয় ৩ থেকে ৪ গুণ বেড়ে যাওয়ার কথাও বলেন তিনি।
উল্লেখ্য, সম্প্রতি বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ উপেক্ষা করে ইদ উপলক্ষে বিধিনিষেধ শিথিল করে দেয় হাসিনা সরকার। আর তার ফলও মিলেছে হাতেনাতে। দেশজুড়ে লাফিয়ে বাড়ছে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা। পরিস্থিতি এমন জায়গায় পৌঁছেছে যে কার্যত নুয়ে পড়েছে দেশের স্বাস্থ্য পরিষেবার পরিকাঠামো। এই গতিতেই সংক্রমণ বাড়তে থাকলে হাসপাতালগুলিতে আর রোগীদের জায়গা দেওয়া যাবে না বলে রবিবার সতর্ক করে প্রশাসন।