সুকুমার সরকার, ঢাকা: মানবিকতার খাতিরে প্রায় এগারো লক্ষ রোহিঙ্গাকে আশ্রয় দিয়েছে বাংলাদেশ (Bangladesh)। কিন্তু এবার আশ্রয়দাতাদেরই মাথাব্যথার কারণ হয়ে উঠেছে শরণার্থীদের এক বৃহৎ অংশ। রোহিঙ্গা শিবিরগুলি হয়ে ওঠেছে সন্ত্রাসবাদীদের চারণভূমি। রমরমিয়ে চলছে মাদক পাচার। এহেন পরিস্থিতিতে বাংলাদেশে মুম্বইয়ের মতো হামলা হওয়ার আশঙ্কা বাড়ছে বলেই ইঙ্গিত দেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল।
[আরও পড়ুন: রোহিঙ্গা শিবিরে জেহাদিদের রাজত্ব! কক্সবাজারে শরণার্থী শিবিরে মিলল জঙ্গিনেতার দেহ]
শুক্রবার বিকেলে রাজধানী ঢাকার শিল্পকলা অ্যাকাডেমিতে ‘মুম্বাইয়ে জঙ্গি হামলার ১৩তম বার্ষিকী’ উপলক্ষে আয়োজিত আলোকচিত্রের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে জঙ্গি হামলার আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী কামাল। ওই অনুষ্ঠানে তিনি বলেন, “অতি সম্প্রতি আপনারা দেখেছেন, মায়ানমার থেকে ১১ লক্ষ বাস্তুচ্যুত রোহিঙ্গাদের জোর করে আমাদের দেশে, ঠেলে দেওয়া হয়েছে। আমরা এটুকু বলতে চাই, এই যে ১১ লক্ষ, এখান থেকেও সন্ত্রাসবাদের উত্থান হতে পারে। তাদের সহজেই ফাঁদে ফেলে জঙ্গিরা। কাজেই এই সমস্যাটা যদি শিগগিরই শেষ না হয়, তাহলে হয়তো আমাদের নতুন মাত্রার জঙ্গির উত্থান হয়েও যেতে পারে।”
সন্ত্রাসবাদ প্রসঙ্গে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আরও বলেন, “আমাদের নিরাপত্তা বাহিনী আমরা ঢেলে সাজিয়েছি। তারা যে কোনও চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা করার জন্য তৈরি হয়ে থাকে। সেজন্যই এখন যে কোনও বড় ধরনের আক্রমণ তারা আগে থেকে ডিটেক্ট করতে পারছে। আমাদের দেশের জনগণও ঘুরে দাঁড়িয়েছিলেন জঙ্গি নিরসনে। আমাদের প্রতিবেশী দেশ ভারত-সহ অন্যান্য দেশও এগিয়ে আসছে এই কাজে। তাদের টেকনোলজি আমাদের দিয়ে সহযোগিতা করেছে। এজন্য আমারা আরও সহজভাবে এগুলো করতে পারছি।” তিনি বলেন, ভারতের মুম্বইয়ে হামলা আর ২১ আগস্টের গ্রেনেড হামলা একই রকম বিষয়। একটি গোষ্ঠি জাতির জনক ও তার পরিবারের সদস্যদের হত্যা করেও ক্ষান্ত হয়নি। শেখ হাসিনাকে মেরে ফেলতে তাঁর উপরও হামলা করা হয়।”
উল্লেখ্য, গত ২৯ সেপ্টেম্বর উখিয়ায় ‘আরাকান রোহিঙ্গা সোসাইটি ফর পিস অ্যান্ড হিউম্যান রাইটস (এআরএসপিএইচ) সংগঠনের কার্যালয়ে বন্দুকধারীদের গুলিতে নিহত হন রোহিঙ্গা নেতা মুহিবুল্লা। হামলার নেপথ্যে মায়ানমারের জঙ্গি সংগঠন ‘আরাকান স্যালভেশন আর্মি’ রয়েছে বলে মনে করা হয়েছিল। হামলার ঘটনায় সন্ত্রাসবাদী সংগঠনটির কয়েকজন সদস্যের নাম উঠে আসে। এই ঘটনায় পরদিন মুহিবুল্লার ভাই হাবিবুল্লা অজ্ঞাতনামা সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে উখিয়া থানায় হত্যা মামলা করেন। সবমিলিয়ে, রোহিঙ্গা ক্যাম্পগুলিতে সন্ত্রাসবাদীদের দাপট বাড়ায় সংঘর্ষের আরও ঘটনা সময়ের অপেক্ষা বলেই মনে করছেন বিশ্লেষকরা।