সুকুমার সরকার, ঢাকা: বাংলাদেশে চড়ছে নির্বাচনী পারদ। শাসক-বিরোধী তরজায় সরগরম হয়ে উঠেছে দেশ। পরিস্থিতি আরও জটিল করে আওয়ামি সরকারের উপর সুষ্ঠু নির্বাচনের দাবিতে চাপ বাড়িয়েছে আমেরিকা। এতে সুযোগ খুঁজে পেয়েছে বিরোধী দল বিএনপি। এই পরিস্থিতিতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তোপ দেগে সাফ বলেন, “খালেদা ভোট চোর।”
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র্রের ভিসা নিষেধাজ্ঞা মাথায় নিয়ে প্রায় দুসপ্তাহের যুক্তরাষ্ট্র ও ব্রিটেন সফর শেষে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, “আমার নিজের জীবনের ঝুঁকি নিয়ে দেশের মানুষের ভোটের অধিকার অর্জন করে দিয়েছি। আজকে আমাকে ভোট শেখাতে হবে না।” রাষ্ট্রসংঘের ৭৮তম সাধারণ পরিষদের অধিবেশনে যোগদান ও যুক্তরাজ্য সফর পরবর্তী সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন। শুক্রবার ঢাকায় গণভবনে সংবাদ সম্মেলনে সফরের নানা দিক তুলে ধরেন তিনি।
এক প্রশ্নের জবাবে প্রধানমন্ত্রী হাসিনা বলেন, “ভোটের জন্য তো আমরা সংগ্রাম করলাম। রক্ত দিলাম। আমার নিজের জীবনের ঝুঁকি নিয়ে এদেশের মানুষের ভোটের অধিকার অর্জন করে দিয়েছি। আজকে আমাকে ভোট শেখাতে হবে না। আমরা সেই আয়ুব খানের আমল থেকে আন্দোলন করি, রাস্তায় থাকি। আমাদের এমন না যে নতুন এসেছি। স্কুল জীবন থেকেই আয়ুব-ইয়াহিয়া খানের বিরুদ্ধে আন্দোলন-সংগ্রাম করেছি। জিয়া, খালেদা জিয়া- সবই তো ভোট চোর। এক আওয়ামি লিগ আসার পর ভোট চুরি করতে হয় না। যারা ভোট চুরি করেছে তাদের কাছ থেকে সুষ্ঠু নির্বাচনের কথা শুনতে হয়।”
[আরও পড়ুন: বাংলাদেশে নিন্দার ঝড়, অবশেষে গ্রেপ্তার চারণকবি রাধাপদর হামলাকারী]
বিদেশি মুদ্রা ভাণ্ডার প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী বলেন, “করোনার সময় আমাদের আমদানি, রপ্তানি, বাণিজ্য সব বন্ধ ছিল। তবুও ফরেন রিজার্ভ বেড়েছে। ২০০৯ সালে যখন ক্ষমতা গ্রহণ করি তখন রিজার্ভ কত ছিল। এক বিলিয়নও নয়। ১৯৯৬ সালে যখন আসলাম কয়েক মিলিয়ন মাত্র ছিল। বেশি কথা বললে সব বন্ধ করে দিয়ে বসে থাকব। নির্বাচনের পর আবার চালু করব। সব নিশ্চিত করে এখন নির্বাচনের কথা, গণতন্ত্রের কথা শুনতে হয়। বিএনপি আন্দোলন করে যাচ্ছে, আমরা তাদের আন্দোলনে বাধা দিচ্ছি না। তারা আন্দোলনে লোক সমাগম করছে। খুব ভালো কথা। এতকাল চুরি করে যা টাকা বানিয়ে ছিল আর যে টাকা মানি লন্ডারিং করে ছিল, সেগুলো ব্যবহার হচ্ছে। অন্তত মানুষের পকেটে কিছু টাকা তো যাচ্ছে।”
এদিন হাসিনা জানান, আমেরিকা সফরে তত্ত্বাবধায়ক সরকার নিয়ে কারও সঙ্গে কথা হয়নি। কেউ জিজ্ঞেসও করেনি। ২০০৭-এ তত্ত্বাবধায়ক সরকার নিয়ে যে অভিজ্ঞতা, এর পর এটা কেউ চায়? প্রধানমন্ত্রী বলেন, বিএনপি বারবার আল্টিমেটাম দিয়েই যাচ্ছে। এই তারিখে ফেলে দেবে, ওই তারিখে ফেলে দেবে। তারা আন্দোলন করুক। জনগণের কোনও ক্ষতি যদি করা হয়, সরকার যথাযথ ব্যবস্থা নেবে।