সুকুমার সরকার, ঢাকা: চাল-ডাল, আনাজপাতি থেকে কাপড় ও কসমেটিক্স। ভারত থেকে বিপুল পরিমাণ পণ্য আমদানি করে বাংলাদেশ। কলকারখানার প্রচুর যন্ত্রাংশও আমদানি করা হয়। ফলে ভারত থেকে পণ্য আমদানি বন্ধ হলে বাংলাদেশে রাতারাতি দাম বেড়ে যায়। তাই দ্রুত পণ্য সরবরাহের জন্য দিল্লির কাছে আরজি জানিয়েছে ঢাকা।
বাংলাদেশে যাতে কোনও নিত্যপণ্যের ঘাটতি না পড়ে তা নিশ্চিত করতে ভারত সরকারের কাছে পণ্য সরবরাহের গতি বাড়িয়ে তোলার আবেদন জানান বাংলাদেশের বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি। ঢাকায় বাণিজ্যমন্ত্রকের একটি সূত্র জানায়, শুক্রবার ভারতের জয়পুরে অনুষ্ঠিত জি-২০ বাণিজ্য ও বিনিয়োগ মন্ত্রীদের সভার আগে ভারতের বাণিজ্যমন্ত্রী পীযূষ গোয়েলের সঙ্গে বৈঠকে সরবরাহে প্রস্তাবিত প্রক্রিয়া দ্রুত বাস্তবায়নের জন্য আহ্বান জানান টিপু মুনশি।
ভারত থেকে বাংলাদেশে নিত্যপণ্য সরবরাহের একটি প্রক্রিয়া প্রণয়নের অগ্রগতির জন্য টিপু মুনশি ভারতীয় বাণিজ্যমন্ত্রীকে ধন্যবাদ জানান। একই সঙ্গে প্রস্তাবিত ব্যবস্থার দ্রুত বাস্তবায়নের জন্য ক্রমাগত সমর্থন কামনা করেন। টিপু মুনশি সম্প্রতি পিঁয়াজের উপর ৪০ শতাংশ রপ্তানি শুল্ক আরোপের ফলে বাংলাদেশে দামে বিরূপ প্রভাব পড়ছে বলে ভারতের বাণিজ্যমন্ত্রীর দৃষ্টি আকর্ষণ করেন। ভারতের বাণিজ্যমন্ত্রী পীযূষ গোয়েল জানান, বিশ্বব্যাপী উৎপাদনে ব্যাঘাত, সরবরাহের ঘাটতি এবং নিত্যপণ্যের মূল্যবৃদ্ধির কারণে সৃষ্ট অসুবিধাগুলো কাটিয়ে উঠতে ভারত বাংলাদেশের সঙ্গে কাজ করতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। প্রতিকূল আবহাওয়া এবং খাদ্য মূল্যস্ফীতির কারণে ভারতও কৃষিজাত পণ্যের উৎপাদন ঘাটতিতে ভুগছে। এ কারণে ভারত সরকারকে কিছু সিদ্ধান্ত নিতে হয়েছে। বাংলাদেশকে আশ্বস্ত করে তিনি বলেন, “খুব শিগগিরই তারা এ সংকট কাটিয়ে উঠতে সক্ষম হবে।”
[আরও পড়ুন: ব্রিকসের মাঝে হাসিনা-জিনপিং বৈঠক, রোহিঙ্গা সমস্যা সমাধানে ঢাকাকে আশ্বাস বেজিংয়ের]
বৈঠকে বাণিজ্যমন্ত্রী বাংলাদেশের পাটজাত পণ্যের ওপর থেকে অ্যান্টি ডাম্পিং শুল্ক প্রত্যাহারের জন্য ভারত সরকারের প্রতি অনুরোধ করলে পীযূষ গোয়েল এ বিষয়ে সর্বোচ্চ বিবেচনার আশ্বাস দেন। এছাড়া অন্যান্য দ্বিপক্ষীয় ইস্যু নিয়ে আলোচনার জন্য আগামী দুই মাসের মধ্যে যৌথ ওয়ার্কিং গ্রুপের বৈঠকে উপস্থাপন এবং এগুলো নিষ্পত্তি করার ওপর গুরুত্বারোপ করেন।
ভারতের বাণিজ্যমন্ত্রী জি-২০ মন্ত্রী পর্যায়ের ঘোষণা চূড়ান্ত করার ক্ষেত্রে বাংলাদেশের মূল্যবান অবদানের প্রশংসা করে বলেন, “ভারত সব সময় বাংলাদেশের সঙ্গে বিশেষ বন্ধুত্ব ও অংশীদারত্বকে মূল্যায়ন করে থাকে।” বাংলাদেশের বাণিজ্যমন্ত্রী জি-২০’র প্রেসিডেন্সি হওয়ায় ভারতকে অভিনন্দন জানান এবং অর্থনৈতিক সহযোগিতা ফোরামে অংশগ্রহণের জন্য বাংলাদেশকে অতিথি দেশ হিসেবে আমন্ত্রণ জানানোর জন্য কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন।