সুকুমার সরকার, ঢাকা: মায়ানমার থেকে থেকে ছোঁড়া গোলা বাংলাদেশের (Bangaldesh) মাটিতে আছড়ে পড়া নিয়ে ঢাকায় রবিবার পতাকা বৈঠকে মায়ানমারের সীমান্তরক্ষী বর্ডার গার্ড পুলিশের (BGP)আনুষ্ঠানিকভাবে দুঃখপ্রকাশ করেছে। রবিবার বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (BGB) ও মায়ানমারের বিজিপির মধ্যে ব্যাটালিয়ন কমান্ডার পর্যায়ে পতাকা বৈঠক চলে প্রায় পাঁচ ঘণ্টা ধরে। দু’দেশের সীমান্তবর্তী নাফনদ সংলগ্ন টেকনাফের শাহপরীর দ্বীপে বিজিবির নির্মিত ‘সাউদান পয়েন্ট’-এর সম্মেলন কক্ষে পাঁচ ঘণ্টাব্যাপী এই বৈঠক শেষ হয়। এর আগে সকাল ৯টার দিকে দু’টি স্পিডবোটে মায়ানমারের (Myanmar) প্রতিনিধি দল শাহপরীর দ্বীপ জেটি ঘাটে পৌঁছায়। এরপর বৈঠকের বিষয়ে বিকেলে টেকনাফ ব্যাটালিয়ন সদর দপ্তরে সাংবাদিক সম্মেলন হয়।
বিজিবি’র টেকনাফ ২ ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল শেখ খালিদ মোহাম্মদ ইফতেখার বলেন, ”দুই দেশের বিজিবি-বিজিপির মধ্য সীমান্তের গুরুত্বপূর্ণ বিষয় ও সাম্প্রতিক ইস্যু-সহ বেশ কিছু আলোচনা হয়েছে। সীমান্ত (Border) এলাকায় উদ্ভূত পরিস্থিতি ছাড়াও অবৈধভাবে মায়ানমার নাগরিকদের অনুপ্রবেশ ও মাদক (Drug) পাচাররোধ সম্পর্কে ফলপ্রসূ আলোচনা হয়েছে। দুই রাষ্ট্রের সীমান্ত নিরাপত্তা বাহিনীর মধ্যে পারস্পরিক যোগাযোগ আস্থা এবং নির্ভরতার পরিবেশ তৈরির জন্য ভবিষ্যতে প্রয়োজনীয় কার্যক্রম গ্রহণের জন্য গুরুত্ব আরোপ করা হয়েছে।”
[আরও পড়ুন: গুজরাট ব্রিজ বিপর্যয় নিয়ে বিজেপিকে খোঁচা তৃণমূলের, সিবিআই তদন্ত দাবি কংগ্রেসের]
তাঁর আরও বক্তব্য, গত দু’মাস ধরে মায়ানমারের অভ্যন্তরে চলমান ঘটনায় সীমান্ত এলাকা দিয়ে মায়ানমার নিরাপত্তা বাহিনীর হেলিকপ্টার ওড়ানো, সীমান্ত এলাকায় ক্ষুদ্রাস্ত্র এবং ভারী অস্ত্রের ফায়ারিং, জানমালের ক্ষয়ক্ষতির বিষয়ে বাংলাদেশের পক্ষ থেকে কড়া প্রতিবাদ জানানো হয়। সীমান্তে শান্তিপূর্ণ অবস্থান বজায় রাখা, মায়ানমারের অভ্যন্তরীণ কোন্দলের ফলে চলমান সংঘাতের জের ধরে যাতে ভবিষ্যতে বাংলাদেশের অভ্যন্তরে কোনও গোলা না পড়ে, সে বিষয়ে সজাগ দৃষ্টি রাখতে বিজিপিকে বলা হয়েছে। এছাড়া প্রতিবেশী সীমান্ত রক্ষী বাহিনী হিসেবে বিজিবি আশা করে যে, মায়ানমারের চলমান অভ্যন্তরীণ সংকট শিগগিরই সমাধান হবে এবং সীমান্তে পরিস্থিতি দ্রুত স্বাভাবিক হবে। বৈঠকে বিজিপি ব্যাটালিয়ন কমান্ডার সম্প্রতি ঘটে যাওয়া বিভিন্ন ঘটনার জন্য আনুষ্ঠানিকভাবে দুঃখ প্রকাশ করেন। সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন রামু সেক্টর কমান্ডার কর্নেল মোহাম্মদ আজিজুর রউফ, কক্সবাজারের গ্রুপ কমান্ডার লেফটেন্যান্ট কর্নেল আহমদ তারিক কবির, অপারেশনাল অফিসার মেজর মুতাসিম শাকিল বিল্লাহ।
[আরও পড়ুন: ধর্ষণের মামলায় ‘টু ফিঙ্গার টেস্ট’ নিষিদ্ধ, ঐতিহাসিক সিদ্ধান্ত সুপ্রিম কোর্টের]
গত আগস্টে নাইক্ষ্যংছড়ির তুমব্রু সীমান্তে মায়ানমারের অভ্যন্তরে দেশটির সেনাবাহিনী ও রাখাইন (Rakhine) প্রদেশের বিদ্রোহী গোষ্ঠী আরাকান আর্মির মধ্যে শুরু হয় ব্যাপক গোলাগুলি ও মর্টার শেল বিস্ফোরণ। গত ২৮ আগস্ট মায়ানমারের ছোড়া দু’টি মর্টার শেল এসে পড়ে বাংলাদেশের ভূখণ্ডে। সীমান্তে গোলাগুলিতে হতাহতের ঘটনায় ঢাকায় একাধিকবার মায়ানমার রাষ্ট্রদূতকে তলব করে কড়া প্রতিবাদ জানায় বাংলাদেশ। এছাড়া সীমান্তে মায়ানমারের অভ্যন্তরে উত্তপ্ত পরিস্থিতির আঁচ পড়েছে বাংলাদেশে।