সুকুমার সরকার, ঢাকা: মায়ানমারে সেনা অভিযানের মুখে বাংলাদেশে (Bangladesh) আশ্রয় নিয়েছে কয়েক লক্ষ রোহিঙ্গা শরণার্থী। মানবিকতার খাতিরে রাখাইন প্রদেশ থেকে পালিয়ে আশা রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দিয়েছে ঢাকা। এবার শরণার্থীদের দেশে ফেরাতে পরিচয় যাচাই সংক্রান্ত ইস্যুতে বৈঠকে বসল বাংলাদেশ ও মায়ানমার।
[আরও পড়ুন: বিশ্ববিদ্যালয়ে ঢুকে পুলিশের লাঠিচার্জ, উত্তপ্ত পরিস্থিতি সামলাতে আসরে বাংলাদেশের শিক্ষামন্ত্রী]
বৃহস্পতিবার রোহিঙ্গাদের পরিচয় যাচাই নিয়ে বাংলাদেশ ও মায়ানমারের আধিকারিকদের মধ্যে ভারচুয়াল বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। গত বছরের ১ ফেব্রুয়ারি মায়ানমারে সামরিক শাসন শুরুর পর এই প্রথম দুই দেশের মধ্যে রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন নিয়ে প্রথম কোনও আলোচনা হয়েছে। বাংলাদেশের বিদেশমন্ত্রকের বিবৃতিতে বলা হয়েছে, শরণার্থী ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কমিশনার শাহ রিজওয়ান হায়াত বাংলাদেশের এবং মায়ানমারের বহিরাগমন এবং জনসংখ্যা মন্ত্রকের উপমহাপরিচালক বৈঠকে দুই পক্ষের নেতৃত্ব দেন। রোহিঙ্গাদের প্রত্যাবাসনের লক্ষ্যে রাখাইনের বাস্তুচ্যুত মানুষের আদি নিবাস চিহ্নিত করার ক্ষেত্রে সময়ক্ষেপণের কারণ খুঁজে বের করে তা দূর করার জন্য একসঙ্গে কাজ করার বিষয়ে দুই পক্ষ একমত হয়েছে।
সম্প্রতি, রোহিঙ্গা সমস্যার সমাধানে রাষ্ট্রসংঘের হস্তক্ষেপ দাবি করেন বাংলাদেশের বিদেশ সচিব মাসুদ বিন মোমেন। পাঁচ বছরের মাথায় এসেও সমস্যার সমাধান না হওয়ায় পররাষ্ট্রসচিব হতাশা ব্যক্ত করেন। রোহিঙ্গাদের নিরাপদে ময়ানমারে ফিরে যাওয়ার জন্য রাখাইনে সহায়ক পরিবেশ সৃষ্টির লক্ষ্যে রাষ্ট্রসংঘের বিশেষ দূতের দপ্তরের কাজ করা উচিত বলে মন্তব্য করেন।
উল্লেখ্য, ২০২১ সালে মায়ানমারের তৎকালীন আন্তর্জাতিক সহযোগিতা বিষয়ক মন্ত্রী কাইয়া টিন জানিয়েছিলেন যে, ২০১৭ সালে বাংলাদেশ ও তাদের মধ্যে সম্পাদিত চুক্তির ভিত্তিতে মায়ানমার রোহিঙ্গাদের দ্রুত স্বদেশে ফেরাতে অঙ্গীকারাবদ্ধ। এছাড়া বাংলাদেশ-সহ সকল প্রতিবেশী দেশের সঙ্গে শান্তিপূর্ণ সহাবস্থান ও পারস্পারিক স্বার্থ সংশ্লিষ্ট বিষয়ক সমস্যা সমাধানেও মায়ানমার প্রতিজ্ঞাবদ্ধ। কিন্তু তারপরই পরিস্থিতি পালটেছে। দেশটির নির্বাচিত সরকারকে ক্ষমতাচ্যুত করে শাসনবার নিজের হাতে তুলে নিয়েছে সেনাবাহিনী। ফলে রোহিঙ্গাদের দেশে ফেরার প্রক্রিয়া আরও জটিল হয়ে উঠেছে।