সুকুমার সরকার, ঢাকা: করোনা ভাইরাসের (Coronavirus) দ্বিতীয় ঢেউয়ের ধাক্কায় কাঁপছে বাংলাদেশ (Bangladesh)। তা সামাল দিতে সবাইকে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার আহ্বান জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলেছেন, ”করোনা মহামারী আকারে আমাদের দেশে দ্বিতীয় ঢেউ হিসেবে আসা শুরু করেছে। করোনা প্রতিরোধে আমরা আগাম প্রস্তুতি নিয়েছি। ১ হাজার কোটি টাকা দিয়ে আগাম করোনার ভ্যাকসিন (Vaccine) অর্ডার করা হয়েছে। যখনই এটা কার্যকর হবে, তখনই যাতে বাংলাদেশের মানুষ পায়, আমরা সে ব্যবস্থা নিয়েছি।”
মহামারী সামলাতে শেখ হাসিনা আরও বলেন, ”আমরা স্কুল খোলার পদক্ষেপ নিয়েছিলাম। কিন্তু দ্বিতীয় ঢেউয়ের পর তা করা হচ্ছে না। আমরা কেন ছেলেমেয়েদের জন্য ঝুঁকি নেব? আমাদের সচেতন হতে হবে। মাস্ক পরা, গরম জল দিয়ে একটু গলা পরিষ্কার করা দরকার। ঘরবাড়ি পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখা দরকার। তাহলে সবাই সুস্থ থাকব।” তাঁর আরও বক্তব্য, সামনে আরও একটি ধাক্কা আসছে। ইতিমধ্যে অনেকেই করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন এবং তা ছড়াচ্ছে। তাই সবাইকে একটু স্বাস্থ্য সুরক্ষাবিধি মেনে চলতে হবে।
[আরও পড়ুন: ৭ যুবতীর মৃতদেহের সঙ্গে যৌন সঙ্গমের অভিযোগ, ধৃত মর্গের কর্মচারী]
করোনার মাঝে আবার নভেম্বর থেকে বাংলাদেশে থাবা বসিয়েছে ডেঙ্গু (Dengue)। সাধারণত এ সময়ে আক্রান্তের সংখ্যা কমতে থাকে। তবে এবার ব্যতিক্রম। জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে ডেঙ্গু হানা দিয়েছে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ডেঙ্গুর ধরনও পালটাচ্ছে। আগে এটা ছিল মৌসুমি রোগ। এখন সারাবছর ধরেই হচ্ছে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মতে, মশা বেঁচে থাকলে বছরের যে কোনও সময় ডেঙ্গুর প্রকোপ দেখা দিতে পারে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ব্যক্তিগত চিকিৎসক অধ্যাপক ডা. এ বি এম আবদুল্লাহ বলেন, শীত বেশি পড়লে ডেঙ্গু থাকে না। জানুয়ারিতে তাপমাত্রার পারদ অনেকটাই কমবে, ওই সময় ডেঙ্গুর প্রকোপও কমে যাবে বলে আশা করেন তিনি। চিকিৎসক বলেন, ”এডিস মশার উত্পত্তিস্থল ধ্বংস করতে হবে। ডেঙ্গু জ্বর হলে প্যারাসিটামল-জাতীয় ওষুধ ও বেশি করে জল পান দরকার।” তবে অ্যান্টিবায়োটিক বা অ্যাসপিরিন জাতীয় কোনও ওষুধ খাওয়া যাবে না।
[আরও পড়ুন: বাংলাদেশে গ্রেপ্তার হিজবুত তহরিরের ৪ জঙ্গি, ফাঁস ‘খিলাফত’ প্রতিষ্ঠার ষড়যন্ত্র]
ঢাকা মেডিক্যাল কলেজের অধ্যক্ষ অধ্যাপক ডা. খান মো. আবুল কালাম আজাদ বলেন, প্রতিদিন ১০ থেকে ১২ জন ডেঙ্গু রোগী আসছে। তিনি বলেন, লকডাউনের সময় মানুষ নিজের বাড়িতে থাকায় ঘরবাড়ি পরিষ্কার রেখেছিল। তাই তখন ডেঙ্গুর প্রকোপ দেখা যায়নি। এখন লকডাউন না থাকায় মানুষ বাইরে বেরিয়ে আসছে। আর বাড়ির আশপাশের জমাট বাঁধা জল পরিষ্কার হচ্ছে না। এতে এডিস মশার প্রজনন বাড়ছে। অন্যান্য বছরের তুলনায় এবার ডেঙ্গুতে আক্রান্ত শিশুর সংখ্যা বেশি বলে জানাচ্ছেন শিশু বিশেষজ্ঞরা।