সুকুমার সরকার, ঢাকা: কারাগার হত্যার পাঁচ দশক পরেও ফেরার দোষীরা। ১৯৭৫ সালের ৩ নভেম্বর পাক সেনা রচিত ওই বর্বর অধ্যায় আজও দগদগে ঘা হয়ে রয়ে গিয়েছে বাংলাদেশের বুকে। নৃশংস এই হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত আসামির সংখ্যা ৮। মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামি ৩ জন। কিন্তু সাজাপ্রাপ্ত এই ১১ আসামির মধ্যে ১০ জনই এখনও ধরাছোঁয়ার বাইরে। এই প্রেক্ষাপটে সাম্প্রদায়িক শক্তির বিরুদ্ধে লড়াইয়ের ডাক দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
পাকিস্তানের নীল নকশায় বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে হত্যার পর বাংলাদেশের ক্ষমতা দখল করেন খন্দকার মোশতাক ও জেনারেল জিয়াউর রহমান। বাঙালি জাতিকে নেতৃত্বশূন্য করতে বঙ্গবন্ধুকে হত্যার তিনমাস পরেই ঢাকার কেন্দ্রীয় কারাগারে সেনা পাঠিয়ে বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধে নেতৃত্বদানকারী জাতীয় চার নেতা সৈয়দ নজরুল ইসলাম, তাজউদ্দিন আহমদ, ক্যাপ্টেন এম মনসুর আলি এবং এ এইচ এম কামারুজ্জামানকে গুলি করে হত্যা করা হয়। কারাগারের অভ্যন্তরে এমন বর্বর হত্যাকাণ্ড পৃথিবীর ইতিহাসে নজিরবিহীন।
[আরও পড়ুন: যাত্রীবাহী বাসে হামলা, বাংলাদেশে ‘আগুন সন্ত্রাস’ বিএনপি-র]
শহিদ ওই চার নেতাকে শ্রদ্ধা জানিয়ে শুক্রবার দিনটি স্মরণ করা হচ্ছে বাংলাদেশে। হত্যাকাণ্ডের বর্ষপূর্তী (৩ নভেম্বর) উপলক্ষে ভাষণে আওয়ামি লিগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা স্বাধীনতা বিরোধী দেশি-বিদেশি চক্র, সাম্প্রদায়িক গোষ্ঠী এবং উন্নয়ন ও গণতন্ত্রবিরোধী অপশক্তির মোকাবিলা করতে সবাইকে প্রস্তুত থাকার আহবান জানিয়েছেন। তিনি বলেন, “স্বাধীনতা বিরোধী ও সাম্প্রদায়িক গোষ্ঠী নানাভাবে ষড়যন্ত্র করে যাচ্ছে।” মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় ঐক্যবদ্ধ হয়ে জাতির পিতার স্বপ্নের ক্ষুধা-দারিদ্র্যমুক্ত ও সুখী-সমৃদ্ধ সোনার বাংলাদেশ গড়ে তোলার আহবান জানান প্রধানমন্ত্রী।
এদিন হাসিনা বলেন, “স্বাধীনতা বিরোধী চক্র ১৯৭৫-এর ১৫ আগস্টের পর থেকেই হত্যা, ক্যু ও ষড়যন্ত্রের রাজনীতি শুরু করে। আত্মস্বীকৃত খুনীদের রক্ষা করতে ইনডেমনিটি অর্ডিন্যান্স জারি করেন জিয়াউর রহমান। অবৈধভাবে ক্ষমতা দখল করে মার্শাল ল’ জারির মাধ্যমে গণতন্ত্রকে হত্যা করা হয়। সংবিধানকে ক্ষতবিক্ষত করা হয়। বর্তমান সরকার জাতির পিতা হত্যার বিচারের রায় কার্যকর করার মধ্য দিয়ে জাতিকে কলঙ্কমুক্ত করেছে। জাতীয় চার নেতা হত্যার বিচার সম্পন্ন হয়েছে। পলাতক খুনিদের খুঁজে বের করে দেশে ফিরিয়ে আনার প্রচেষ্টা অব্যাহত আছে।”