সুকুমার সরকার, ঢাকা : আগামীদিনে আর কোন রোহিঙ্গা শরণার্থীকে আশ্রয় দেবে না ঢাকা। রাষ্ট্রসংঘের নিরাপত্তা পরিষদের বৈঠকে এই সিদ্ধান্তের কথা সাফ জানিয়ে দিয়েছেন বাংলাদেশের বিদেশ সচিব শহিদুল হক। তাঁর দাবি, ইতিমধ্যেই ১১ লাখ রোহিঙ্গা শরণার্থীকে আশ্রয় দিয়েছে বাংলাদেশ। তাই তাদের পক্ষে নতুন করে আর কোন রোহিঙ্গা শরণার্থীকে আশ্রয় দেওয়া সম্ভব নয়। তিনি বলেন, অনেকদিন ধরে বারবার বলা সত্ত্বেও রাখাইন থেকে রোহিঙ্গাদের বাংলাদেশে অনুপ্রবেশ ঠেকাতে ব্যর্থ মায়ানমার সরকার। প্রায় প্রতিদিন সেখান থেকে নতুন নতুন লোক এদেশে ঢুকছে। ফলে ক্রমশই পরিস্থিতি খারাপ থেকে ভয়াবহ হচ্ছে।
[বাংলাদেশে রোহিঙ্গা শিশুদের জন্য আরও আর্থিক সাহায্যের সিদ্ধান্ত রাষ্ট্রসংঘের]
২০১৭ সালের আগস্টে মায়ানমারের রাখাইন প্রদেশে পুলিশ ও সেনাবাহিনীর চৌকিতে অস্ত্র-সহ হামলা চালায় আরাকান মুসলিম বিদ্রোহীরা। অনেক পুলিশকর্মী ও সেনা জওয়ানকে খুনও করে। এরপরই উত্তর রাখাইন প্রদেশে নিধনযজ্ঞ শুরু করে মায়ানমার সেনাবাহিনী। রোহিঙ্গাদের নির্বিচারে হত্যা করার পাশাপাশি পুড়িয়ে দেওয়া তাদের ঘরবাড়ি। ধর্ষিতা হন অসংখ্য যুবতী।
[ঢাকায় বিমান ছিনতাই ‘নাটক’-এর তদন্ত শুরু, নায়িকা শিমলাকে ডেকে জেরার প্রস্তুতি]
তারপর থেকে প্রাণ বাঁচাতে সাত লাখের বেশি রোহিঙ্গা বাংলাদেশ পালিয়ে আসে। এখনও চোরাগোপ্তাভাবে অব্যাহত রয়েছে বাংলাদেশে তাদের অনুপ্রবেশ। এর পরিপ্রেক্ষিতে প্রচুর সমস্যার মুখে পড়তে হয়েছে বাংলাদেশ সরকারকে। দেশের বিভিন্ন জায়গায় রোহিঙ্গা শরণার্থীদের আশ্রয়ের জন্য ক্যাম্প খুলে দেওয়া হলেও বনবাদাড় উজাড় করে রোহিঙ্গারা বসতি গড়ছে। আস্তে আস্তে তারা বাংলাদেশের সঙ্গে জনগণের সঙ্গে মিশে যাচ্ছে। এমনিতে বাংলাদেশ ঘনবসতিপূর্ণ। তারপর যদি রোহিঙ্গারাও আস্তে আস্তে তার মধ্যে মিশে যায় তাহলে দেশের জনসংখ্যা বৃদ্ধির বিষয়ে হাসিনা সরকারের আর কোন নিয়ন্ত্রণ থাকবে না। অর্থনীতিও ভেঙে পড়বে। তাই তাদের দেশে রোহিঙ্গাদের আর আশ্রয় দিতে রাজি নয় বাংলাদেশ। এদিকে গোটা বিশ্বের চাপের কাছে নতি স্বীকার করে আরাকানে রোহিঙ্গাদের জন্য বাড়ি তৈরি করেছে মায়ানমার সরকার। তাই বাংলাদেশের বিদেশ সচিব দ্রুত রোহিঙ্গাদের সেদেশে পাঠাতে রাষ্ট্রসংঘের কাছে আবেদন জানিয়েছেন।
The post আর কোন রোহিঙ্গা শরণার্থীকে আশ্রয় দেওয়া হবে না, ঘোষণা বাংলাদেশের appeared first on Sangbad Pratidin.