সুকুমার সরকার, ঢাকা: বাংলাদেশে সাম্প্রদায়িক হিংসার (Bangladesh Violence) ঘটনা রুখতে অতি সক্রিয় পুলিশ। কুমিল্লার পুজোমণ্ডপে ইসলামদের পবিত্র ধর্মগ্রন্থ কোরান (Quran) রেখে হিংসা ছড়ানোর মূলচক্রীকে চিহ্নিত করা হয়েছিল আগেই। আর তার ২৪ ঘণ্টার মধ্যেই অভিযুক্ত ইকবাল হোসেনকে গ্রেপ্তার করল পুলিশ। জানা গিয়েছে, সিসিটিভি ফুটেজের (CCTV Footage) সূত্র ধরে বৃহস্পতিবার গভীর রাতে কক্সবাজার থেকে বছর পঁয়ত্রিশের ইকবালকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তাকে আদালতে পেশ করা হবে শুক্রবার।
বৃহস্পতিবারই কুমিল্লা কাণ্ডে একটি সিসিটিভি ফুটেজ প্রকাশ্যে আসে। তাতে দেখা যায়, সপ্তমীর রাতে কুমিল্লা (Comilla) শহরের নানুয়াদিঘি এলাকার একটি মসজিদ থেকে কোরান হাতে নিয়ে বেরয় এক ব্যক্তি। কিছুক্ষণ পর তাঁকে নানুয়াদিঘির পাড়ে দেখা যায়। তখন আর তার হাতে কোরানটি ছিল না। বরং হাতে ছিল হনুমানজির গদা। এই ছবিগুলি বিশ্লেষণ করে ইকবাল হোসেন নামে ওই ব্যক্তিকে শনাক্ত করেছে পুলিশ। মনে করা হচ্ছে, মণ্ডপে কোরান রেখে অশান্তি বাঁধানোর ঘটনা পূর্বপরিকল্পিত। উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবেই দুর্গাপুজোয় দেবতার পায়ের কাছে পবিত্র কোরান রেখে অশান্তিতে ইন্ধন দেওয়া হয়েছিল। বহস্পতিবার ইকবালকে চিহ্নিত করার পর ফেসবুক পোস্ট করে বাংলাদেশ পুলিশ সেকথা জানিয়েছিল। আর এবার তাকে গ্রেপ্তারির খবর মিলল। কুমিল্লা কাণ্ডে মোট ৪১ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তবে মূলচক্রী ইকবাল ধরা পড়ায় গোটা ঘটনার কিনারা খুব দ্রুত হবে বলে আশাবাদী পুলিশ।
[আরও পড়ুন: পীরগঞ্জে হিন্দুদের উপর হামলার ঘটনায় দু’টি তদন্ত কমিটি গঠন]
ইকবালের পরিবার সূত্রে খবর, বরাবরই তাকে নিয়ে অশান্তিতে ভুগেছেন বাড়ির সদস্যরা। তার মা বলেন, ”বখাটেপনার কারণে ইকবাল গণপিটুনির শিকার হয়েছিল। তাকে পেলে আপনারা বিচার করবেন। এই সন্তানের জন্য আমার পরিবারটা শেষ গিয়েছে।” ইকবালের ভাইয়ের কথায়, ”আমার ভাই পাগল। ওকে চা, পানি, নাস্তা দিলে যা বলবেন, তাইই করবে।” আরও জানা গিয়েছে, নিয়মিত নমাজপাঠ-সহ একাধিক ধর্মীয় আচার-অনুষ্ঠানের সঙ্গে জড়িত থাকলেও মাদক সেবন করত।
[আরও পড়ুন: Bangladesh Violence: বাংলাদেশে সাম্প্রদায়িক অশান্তির জের, ঐতিহ্যবাহী কাত্যায়নী পুজো বন্ধের সিদ্ধান্ত]
এদিকে, কুমিল্লা-সহ বাংলাদেশের বিভিন্ন প্রান্তে সাম্প্রদায়িক অশান্তির ঘটনা অত্যন্ত কড়া হাতে দমন করতে তৎপর শেখ হাসিনা প্রশাসন। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা (Sheikh Hasina) নিজে একাধিক ভিডিও বার্তায় এর কড়া নিন্দা করে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের সুরক্ষা নিয়ে আশ্বস্ত করেছেন। বৃহস্পতিবারও এক ভিডিও বার্তায় তিনি বলেন, ”অন্য ধর্মকে অবমাননার শিক্ষা ইসলাম দেয় না। কুমিল্লার ঘটনার বিশ্লেষণ করলে আমরা দেখতে পাব, পবিত্র কোরান শরিফকে অবমাননা করা হয়েছে, অন্যের ধর্মকে অবমাননা করতে গিয়ে। এর ফলে শুধু অন্যের ধর্মকে অসম্মান নয়, নিজের ধর্মকেও হেয় করা হয়েছে।”