সুকুমার সরকার, ঢাকা: ঢাকার (Dhaka) অভিজাত এলাকা গুলশনের হোলি আর্টিজান বেকারিতে জঙ্গি হামলায় নিহতদের প্রতি শ্রদ্ধা জানালেন বাংলাদেশ (Bangladesh) ও বিদেশি দূতাবাসের আধিকারিকরা। ২০১৬ সালে, সাত বছর আগে অভিজাত ক্যাফেতে জঙ্গি হামলায় অন্তত ২০ জন নিহত হন। সেটাই বাংলাদেশের ইতিহাসে এখনও পর্যন্ত সবচেয়ে বড় সন্ত্রাসবাদী হামলা (Dhaka Terror Attack) বলে মনে করা হয়। গুলশনের ৭৯ নম্বর সড়কের ৫ নম্বর প্লটের ওই ভবনের সামনে শনিবার সকাল সাড়ে ৯ টা নাগাদ অস্থায়ী বেদীতে প্রথমে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন ভারতীয় হাইকমিশনার প্রণয় কুমার বর্মা। এরপর শ্রদ্ধা নিবেদন করেন জাপানের (Japan)রাষ্ট্রদূত ইওয়ামা কিমিনোরি। এছাড়া ইতালি ও যুক্তরাষ্ট্রের দূতাবাসের আধিকারিকরাও নিহতদের স্মরণে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন। বিভিন্ন দূতাবাসের আধিকারিকদের শ্রদ্ধা নিবেদন শেষে সকাল ১০টার দিকে হোলি আর্টিজানের মূল ফটকটি বন্ধ করে দেওয়া হয়।
গুলশনের হোলি আর্টিজান বেকারিতে স্থানীয়দের পাশাপাশি ভারতীয় সঙ্গে বিদেশিরাও যেতেন। তাঁদের অন্যতম পছন্দের তালিকায় ছিল হোলি আর্টিজান বেকারি। ২০১৬ সালের ১ জুলাই রাতে সেই বেকারিতে নৃশংস হামলা চালায় জঙ্গিরা। তারা দেশি-বিদেশি অতিথিদের পণবন্দি করে। জঙ্গিদের চার মাস প্রস্তুতি নিয়ে হোলি আর্টিজানে হামলা স্তম্ভিত করেছিল পুরো দেশকে। ভয়াবহ ওই হামলার ঘটনায় স্তম্ভিত হয়ে পড়ে পুরো দেশ-বিদেশ। দেশের ইতিহাসে সবচেয়ে বড় ওই জঙ্গি হামলায় পুলিশের ২ সদস্যসহ দেশি-বিদেশি ২০ জন নিহত হন। তাঁদের মধ্যে ৯ ইটালীয়, ৭ জাপানি, তিনজন বাংলাদেশি ও একজন ভারতীয় (Indian) ছিলেন।
[আরও পড়ুন: সম্পর্ক ভাঙার কথা ঘোষণার পরও নবনীতার সঙ্গে ছবি পোস্ট, কী বার্তা দিতে চাইলেন জিতু?]
২০১৬ সালের ১ জুলাই দিনটি ছিল শুক্রবার। সন্ধ্যারাতে হঠাৎ করে খবর আসে গুলশনে ‘জঙ্গি’দের সঙ্গে পুলিশের গুলিযুদ্ধ চলছে। জঙ্গিরা প্রথমে ওই রেস্টুরেন্টে গিয়ে বিদেশি নাগরিক-সহ বেশ কয়েকজনকে পণবন্দি করেছে। পাশে থাকা গুলশনের বাসিন্দা রাশিলা রহিম গুলি কাণ্ডের বর্ণনা দিয়েছিলেন – “আমাকে আমার ড্রাইভার বললেন, আপা আপনি এখন বেরবেন না, নীচে গুলিযুদ্ধ চলছে। তারপর দেখি আমার ড্রয়িং রুমের জানালার কাঁচ ফেটে গেল। তারপর থেকে অনবরত গুলির শব্দ শুনতে পাই। এরপর আমার মেয়ে কান্নাকাটি শুরু করে। আমরা সবাই কান্নাকাটি শুরু করি। কারণ খুবই আতঙ্কজনক একটা পরিস্থিতি।”
[আরও পড়ুন: ‘শুভ লাভ দেখলেই মনে পড়ে সেই কথা…’, ক্লাসরুমের গল্প শোনালেন আলাপন বন্দ্যোপাধ্যায়]
রাত ৯টা ৫ মিনিট গুলশন ৭৯ নম্বর সড়কের হোলি আর্টিজান বেকারিতে জঙ্গিদের হামলার খবর পায় পুলিশ। খবর পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে গুলশন (Gulshan) থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে ছুটে যায়। রাত সাড়ে ৯টার দিকে গুলিতে জখম হন বনানী থানার ওসি মোহাম্মদ সালাউদ্দিন। রাত ১০টার দিকে পুলিশ, এলিট বাহিনি র্যাব (RAB) এবং আধা সামরিক বর্ডার গার্ডস বাংলাদেশের কয়েকশো সদস্য ঘটনাস্থলে গিয়ে অবস্থান নেয়। গণমাধ্যম কর্মীরাও ৭৯ নং রোডের মাঝামাঝি স্থানে অবস্থান নেন। ওই রাতেই ইসলামিক স্টেট জঙ্গি গোষ্ঠী তাদের বার্তা সংস্থা বলে পরিচিত ‘আমাক’-এ গুলশান হামলার দায় স্বীকার করে ২০জন নিহত হবার কথা জানায়। আইএস এর পক্ষ থেকে হামলাকারীদের মধ্যে পাঁচজনকে তাদের ‘সৈনিক’ বলে দাবি করে, হামলার দায় নেয় তারা।