সুকুমার সরকার, ঢাকা: কলকাতায় চিকিৎসা করাতে গিয়ে 'খুন' হয়েছেন বাংলাদেশের ঝিনাইদহের সাংসদ আনোয়ারুল আজিম! এই মুহূর্তে তাঁর মৃত্যু ঘিরে দানা বেঁধেছে নানা রহস্য। এই ঘটনার তদন্তে উঠে আসছে একের পর এক চাঞ্চল্যকর তথ্য। তবে নানা বিতর্ক আছে আনোয়ারুলের জীবন ঘিরে। এক সময় পরিচিত ছিলেন ‘মাদক সম্রাট’হিসাবে। নাম জড়িয়েছিল সোনা পাচারের সঙ্গেও। এতে স্বাভাবিকভাবেই প্রশ্ন উঠছে একরকম এক ব্যক্তিকে কেন ভোটের টিকিট দিল আওয়ামি লিগ। যার উত্তরে দলের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের সাফ বলেন, "তিনি কী ছিলেন, সেটা বড় কথা নয়। তাঁর জনপ্রিয়তা দেখেই দল তাঁকে মনোনয়ন দিয়েছিল।"
আনোয়ারুলের 'খুনে'র যৌথভাবে তদন্ত করছে ভারত ও বাংলাদেশ। বৃহস্পতিবার এক সাংবাদিক সম্মেলনে ঝিনাইদহের সাংসদের মৃত্যুর প্রসঙ্গ ওঠে। প্রশ্ন করা হয় আনোয়ারুলকে ভোটের টিকিট দেওয়া নিয়ে। যার উত্তরে কাদের বলেন, "সাংসদ আনোয়ারুল আজিম কলকাতায় মারা গিয়েছেন। তাঁকে হত্যা করা হয়েছে। তদন্ত শেষ হওয়ার আগে আমরা কিছু বলতে পারব না। তবে তিনি আওয়ামি লিগের এমপি। তিনি কী ছিলেন, সেটা বড় কথা নয়। তিনি যে এলাকার প্রতিনিধিত্ব করতেন, সেই এলাকা গিয়ে দেখুন, তাঁর জন্য শোকার্ত মানুষের হাহাকার। তিনি কোনও গাড়ি নয়, মোটরসাইকেলে করে গোটা এলাকা ঘুরতেন। তাঁকে আমরা তৃতীয়বার মনোনয়ন দিয়েছি জনপ্রিয়তা দেখে। এখন ভিতরে যদি তাঁর কোনও অপকর্ম প্রমাণিত হয় তাহলে প্রধানমন্ত্রীর কিন্তু জিরো টলারেন্স নীতি রয়েছে। অন্যায়কারী, অপরাধী দলের লোক হলেও শেখ হাসিনা ছাড় দেন না।"
[আরও পড়ুন: আনোয়ারুলের মৃত্যুতে শোকপ্রকাশ প্রধানমন্ত্রী হাসিনার, সাংসদের ‘খুনে’র তদন্তে চাঞ্চল্যকর তথ্য!]
ওবায়দুল কাদের আরও বলেন, "আপনারা এখন বলছেন, কলকাতায় তাঁকে চোরাকারবারি বলা হচ্ছে। আমি সাংবাদিকদের বলব, আপনারা কি তিন-তিনবার জাতীয় সংসদের এমপি নির্বাচিত হয়েছেন? তখন কি আপনারা এই তথ্য পেয়েছেন? এখন ভারতীয় সাংবাদিকেরা কোন তথ্য আনল, সেটার উদ্ধৃতি দিচ্ছেন। আপনারা তো এই দেশের নাগরিক, সে যদি অপরাধী হয়, সেই অপরাধটা আপনাদের অনুসন্ধানী প্রতিবেদনে কেন এল না?"
বলে রাখা ভালো, কলকাতায় চিকিৎসা করাতে গিয়ে সাংসদের রহস্যজনক হত্যাকাণ্ডে পরতে পরতে উঠে আসছে চাঞ্চল্যকর তথ্য। তিনি কলকাতায় যাওয়ার অনেক আগেই সেই শহরে ডেরা বেঁধেছিল হত্যাকারীরা। খুনের পর তারা দেহ লোপাটের ব্যবস্থা করেই সীমান্ত পেরিয়ে পালিয়ে যায় বলে জানা যাচ্ছে। মূলত ব্যবসায়িক বখরা নিয়ে জনৈক মার্কিন প্রবাসী শাহিনের সঙ্গে সাংসদের গন্ডগোল ছিল। তার জেরেই সাংসদ আনোয়ারুল আজিম খুন হয়েছেন বলে প্রাথমিকভাবে মনে করছেন তদন্তকারীরা।