সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: সমস্ত জল্পনার অবসান। বাস্তবেই বিপ্লবের সলিল সমাধি হল বুড়ি গঙ্গায়! বাংলাদেশে (Bangladesh) জামাত ইসলামির নেতৃত্বাধীন জোটে যোগ দিল বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের রাজনৈতিক দল এনসিপি। একই পথের পথিক হল এলডিপি। এর ফলে বিএনপি বিরোধী জোটে মোট দলের সংখ্যা হল দশ। রবিবার বিকেলে জাতীয় প্রেসক্লাবের সংবাদিক সম্মেলনে জামাতের আমির শফিকুর রহমান এই ঘোষণা করলেন।
বাংলাদশে নির্বাচন ঘোষণার পর থেকেই আসন ভাগাভাগি নিয়ে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নাহিদ ইসলাম, হাসনাত আবদুল্লাহদের সঙ্গে দড়ি টানাটানি চলছিল জামাতের। শেষ পর্যন্ত বিপ্লবের মুখোশ খুলে ফেলল 'বিপ্লবী'রা। রবিবার জামাতের আমির জানালেন, গণঅভ্যুত্থানের নেতৃত্ব দেওয়া শিক্ষার্থীদের রাজনৈতিক দল জাতীয় নাগরিক পার্টি- এনসিপি ও কর্নেল অলি আহমেদের নেতৃত্বাধীন বাংলাদেশ লিবারেল ডেমোক্রেটিক পার্টি বা এলডিপি জামাতের নেতৃত্বাধীন জোটে যোগ দিয়েছে। জামাতের আমির শফিকুর রহমান আরও জানান, আজ রাতের মধ্যে এই বিষয়ে ঘোষণা দেবে এনসিপি। নির্বাচনে জয়লাভের বিষয়ে আত্মবিশ্বাসী জামাতের আমির আরও বলেন, "এটা আমাদের মজবুত নির্বাচনী সমঝোতা। সারাদেশে তিনশো আসনে প্রার্থী নির্ধারণ করেছি। যেহেতু দুই দল শেষ পর্যায়ে এক হয়েছে, ফলে বিষয়টি খুবই দুরূহ হয়ে গিয়েছে। শেষকালে আরও কোনও কোনও দলের আগ্রহ থাকা সত্ত্বেও আমরা তাদের যুক্ত করতে পারিনি।"
গত বেশ কয়েক মাস ধরেই নাহিদ ইসলাম বলে আসছিলেন যে, এনসিপি এককভাবে নির্বাচন লড়বে। সেই লক্ষ্যে প্রথমপর্বে ১২৫টি আসনে প্রার্থীও দেয় তারা। পরে ‘গণতান্ত্রিক সংস্কার জোট’ গঠন করার ঘোষণা করে তারা। সেই লক্ষ্যে জামাতের সঙ্গে জোট বাঁধার কথাও জানানো হয়। চলছিল আসন নিয়ে দর কষাকষিও। জামাতের কাছে ৫০টি আসন চায় এনসিপি। যদিও ৩০টির বেশি আসন এনসিপিকে ছাড়তে রাজি হয়নি মৌলবাদী দলটি। এই অবস্থায় অস্বস্তির মুখে পড়েছিল ছাত্রদের দল। কারণ তারা আগেভাগে যে ১২৫ আসনে প্রার্থী ঘোষণা করেছিল, তাঁদের অনেকেই প্রচার শুরু করে দিয়েছেন।
যদিও শেষ পর্যন্ত কট্টরপন্থী জামাতের শাসনই মেনে নিল জুলাই-আগস্টের বিপ্লবীরা। যোগ দিল মৌলবাদী জোটে। নাহিদ-হাসনাতরা মনে করছেন, এমনিতেই তাদের জামাতের বি-টিম বলে দাগিয়ে দেওয়া হয়েছে। হাসিনা, ভারতবিরোধিতা, মুক্তিযুদ্ধের বিরোধ করে এনসিপি ইসলামপন্থী দলে হিসাবেই পরিচিত হয়ে উঠেছে বাংলাদেশে। তথাপি ভোটের ময়দানে কট্টর জামাতের মতো বিশ্বস্ত নয় তারা। এই অবস্থায় রাখঢাক উড়িয়ে জামাতের নেতৃত্বাধীন জোটে আশ্রয় নেওয়াই ঠিক মনে করল এনসিপি। কার্যত প্রমাণ হয়ে গেল, বিপ্লবের মুখোশে হাসিনা উৎখাতের ছক কষেছিল জামাত। সেই কাজে ছাত্ররা ছিল বোড়ে।
