সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: বাংলাদেশের ময়মনসিংহে সংখ্যালঘু যুবক দীপু দাস হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় কেঁপে উঠেছে গোটা বিশ্ব। পিটিয়ে খুনের পর তাঁর দেহ জ্বালিয়ে দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে কট্টরপন্থীদের বিরুদ্ধে। হত্যাকাণ্ডের কয়েক মুহূর্তের পূর্ণাঙ্গ বিবরণ দিলেন অকুস্থলে উপস্থিত এক যুবক। জানান, সেই রাতে যেন রাক্ষসদের তাণ্ডব চলেছিল। আক্রমণকারীরা রাক্ষসদের মতো আচরণ করেছিল।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ওই যুবক দীপুর সহকর্মী ছিলেন। সর্বভারতীয় সংবাদমাধ্যমে দেওয়া একটি সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, "শুধু হিন্দু হওয়ার কারণেই নয়। দীপু কঠোর পরিশ্রমী ছিলেন। ফলে তাঁকে বহু মানুষ ঈর্ষা করতেন। এই কারণেও তাঁকে হত্যা করা হয়েছে। যাঁরা কারখানায় কাজ পাননি, তাঁরা গুজব ছড়িয়েছিলেন যে দীপু ধর্ম অবমাননা করেছেন।" তিনি আরও বলেন, "প্রথমে দীপুকে অফিসে ডাকা হয়েছিল। এরপর তাঁকে জোর করে ইস্তফা দিতে বাধ্য করানো হয়। কারখানার শ্রমিকদের সঙ্গে সেখানে বহিরাগতরাও ছিলেন। ইস্তফা দিতেই দীপুকে উন্মত্ত জনতার হাতে তুলে দেওয়া হয়।" হত্যাকাণ্ডের বর্ণনা দিতে গিয়ে কেঁপে ওঠেন প্রত্যক্ষদর্শী। তিনি বলেন, "কারখানার বাইরে দীপুকে নির্মমভাবে মারধর করা হয়। তাঁর মুখে, বুকে, পেটে লাঠি দিয়ে আঘাত করা হয়। দীপুরে গোটা শরীর থেকে রক্ত ঝরছিল।" তাঁর সংযোজন, "বেধড়ক মারধরের জেরে মৃত্যু হয় দীপুর। তারপর তাঁর দেহটিকে অন্তত ১ কিলোমিটার টেনে নিয়ে গিয়ে একটি গাছে ঝুলিয়ে দেওয়া হয় এবং অগ্নিসংযোগ করে দেওয়া হয়। উপস্থিত জনতা কট্টরপন্থী ছিলেন। আমরা কোনও প্রতিবাদ করতে পারিনি।"
প্রসঙ্গত, দীপু হত্যায় এখনও পর্যন্ত ১২ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। গোটা ঘটনায় ঘরে-বাইরে প্রশ্নের মুখে পড়েছে মহম্মদ ইউনুসের অন্তবর্তী সরকার। দীপুর মৃত্যুতে বাংলাদেশে সংখ্যালঘুদের নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে ভারত। বাংলাদেশে সংখ্যালঘু নির্যাতন নিয়ে মুখ খুলেছে রাষ্ট্রপুঞ্জও। তারা জানিয়েছে, বাংলাদেশে সাম্প্রতিক হিংসার ঘটনা নিয়ে তারা খুবই উদ্বিগ্ন।
