সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: ব্যাপক গণ আন্দোলনের মুখে পদত্যাগ করে বাংলাদেশ ছেড়েছেন শেখ হাসিনা। আপাতত তিনি রয়েছেন ভারতের আশ্রয়ে। কিন্তু দেশত্যাগের পর থেকে একের পর এক মামলা দায়ের হচ্ছে তাঁর বিরুদ্ধে। যার মধ্যে অধিকাংশই হত্যার মামলা। যার বিচারের জন্য এবার হাসিনাকে দেশের ফিরিয়ে দিতে ভারতের উপর চাপ বাড়াল খালেদা জিয়ার দল বাংলাদেশ ন্যাশনালিস্ট পার্টি বা বিএনপি।
গত কয়েকদিন ধরে দুর্নীতি ছাড়াও খুন, অপহরণ-সহ একাধিক মামলা দায়ের করা হচ্ছে হাসিনার বিরুদ্ধে। অভিযুক্তদের তালিকায় রয়েছেন বাংলাদেশের বহু প্রাক্তন মন্ত্রী ও আওয়ামি লিগের শতাধিক নেতা-কর্মী। এই মামলাগুলোর সংখ্যা ক্রমশ দীর্ঘ হচ্ছে। এর আগে অন্তর্বর্তী সরকারের বিদেশ উপদেষ্টা এম তৌহিদ হোসেন জানিয়েছিলেন মুজিবকন্যাকে দেশে ফেরত পাঠানোর জন্য ভারতকে অনুরোধ করবে বাংলাদেশ। এবার গতকাল, মঙ্গলবার বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগির বলেন, "শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে গুরুতর অভিযোগ রয়েছে। বাংলাদেশের মানুষ তাঁর বিচারের সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এখন উচিত আইনিভাবে অবিলম্বে তাঁকে ঢাকার কাছে হস্তান্তর করা।"
[আরও পড়ুন: সাংবাদিক খুনেও জড়িত হাসিনা! ছাত্র আন্দোলন চলাকালীন সব হত্যার বিচার চায় রাষ্ট্রসংঘ]
ভারতকে নিশানা করে আলমগির বলেন, "এটা খুবই দুর্ভাগ্যজনক। আমাদেরই প্রতিবেশী দেশ হাসিনাকে আশ্রয় দিয়েছে। ইতিমধ্যেই সেখানে বসে তিনি বাংলাদেশের মানুষদের এই বিপ্লব ভেস্তে দেওয়ার ষড়যন্ত্র শুরু করে দিয়েছেন।" বরাবর কট্টর ভারত বিরোধী হিসাবেই পরিচিত বিএনপি। চলতি বছরের মাঝামাঝি সময় বাংলাদেশে স্লোগানও উঠেছিল ‘বয়কট ইন্ডিয়ান গুডস’। তৎকালীন হাসিনা সরকারের অভিযোগ ছিল, এর নেপথ্যা রয়েছে খালেদা জিয়ার দল। ৭ জানুয়ারি অনুষ্ঠিত জাতীয় নির্বাচনেও দিল্লির অঙ্গুলিহেননের অভিযোগ তুলেছিল খালেদা জিয়ার দল। ফলে স্বভাবতই ভারত আপাতত হাসিনাকে আশ্রয় দেওয়ায় ক্ষুব্ধ তারা।
রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞদের মতে, আওয়ামি লিগ ক্ষমতাচ্যুত হওয়ায় কার্যত প্রাণ ফিরে পেয়েছে বিএনপি। এতদিন দলের নেতারা পালিয়ে বিদেশে আশ্রয় নিয়েছিলেন। কিন্তু এখন তাঁরা একে একে দেশে ফিরছেন। জেলমুক্তি ঘটেছে দলের চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়া। বাংলাদেশে ফিরতে পারেন তাঁর পুত্র তারেক রহমান। ফলে ভারত বিরোধীতার আবেগকে কাজে লাগিয়ে জনমত গঠন করতে চাইছে বিএনপি। এখন তাদের হাতিয়ার হাসিনার বিরুদ্ধে দায়ের হওয়া একের পর এক মামলা। যার দ্রুত বিচারের দাবি করছে তারা। এই মুহূর্তে বাংলাদেশে রয়েছে অন্তর্বর্তী সরকার। নেতৃত্বে রয়েছেন নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ ড. মহম্মদ ইউনুস। এই ছাত্র আন্দোলন চলাকালে যেসব হত্যাকাণ্ড ঘটেছে তার বিচার আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে এই নয়া সরকার। এখানে বিচার হবে হাসিনার বিরুদ্ধে দায়ের হওয়া সমস্ত মামলারও।